আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের বাজারে দারুচিনি পাওয়া যায় না!

বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তানসহ বিশ্ব বাজারে দারুচিনির অধিকাংশটা জুড়ে আছে ইন্ডিয়া, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার উৎপাদিত কিছুটা দারুচিনির ঘ্রাণ ও স্বাদযুক্ত কমদামী ক্যাসিয়া। অথচ আমরা অনেকেই জানিনা ক্যাসিয়া ও দারুচিনি দুটো আলাদা জিনিষ এবং গাছদুটোও এক নয়। দারুচিনির উৎপাদন প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্যাসিয়াকেই দারুচিনি হিসাবে বিশ্ব বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছে। ক্যাসিয়া তৈরী হয় Cinnamomum cassia(যা চাইনিজ সিনামন নামে পরিচিত) ও Cinnamomum burmannii(যা জাভা সিনামন নামে পরিচিত) গাছ থেকে আর অরিজিনাল দারুচিনি যা বিশ্ব বাজারে “সিলন দারুচিনি” নামে পরিচিত তা পাওয়া যায় Cinnamomum verum প্রজাতির গাছ থেকে।

চেনার উপায় কী:-
১)দারুচিনি গাছের ছালের ভিতরের স্তর থেকে তৈরী হয় বলে এটি খুব পাতলা ও এর ভিতর-বাইর দুদিকই মসৃণ কিন্তু ক্যাসিয়া সরাসরি গাছের ছাল থেকে তৈরী হয় বলে এটি তুলনামূলকভাবে মোটা ও বাইরের দিকটা গাছের ছালের মতই অমসৃণ।



২)ক্যাসিয়া বেশ শক্ত এবং গুড়ো করতে বেগ পেতে হয়। কিন্তু দারুচিনি নরম হওয়ায় খুব সহজেই ভাঙ্গা ও গুড়ো করা যায়।

৩)ক্যসিয়া গাঢ় লালচে খয়েরী রং এর হয়ে থাকে কিন্তু দারুচিনি রং তুলনামূলক হালকা এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাদামী রং এর হয়ে থাকে।

পার্থক্য কী:-
১)ক্যসিয়াতে কুমারিনের(কুমারিন রক্ত জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয়) মাত্রা বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত সেবনে আঘাতপ্রাপ্তস্থানে রক্ত জমাট বাঁধা বাঁধাগ্রস্থ হয়। তাছাড়া যাদের রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা আছে তাদের রক্তক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে।

দারুচিনিতে কুমারিনের মাত্রা ২-৫পিপিএম কিন্তু ক্যাসিয়াতে কুমারিন আছে ২০০০-৫০০০পিপিএম।

২)ক্যসিয়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু দারুচিনির বিষয়ে এটি পরীক্ষিত নয়। সুতরাং যারা দারুচিনিকে ডায়াবেটিস ঔষধ হিসাবে সেবন করেন তারা অবশ্যই দারুচিনির পরিবর্তে ক্যাসিয়া ব্যবহার করবেন।

৩)দারুচিনির ঘ্রাণ বেশী ও অতুলনীয়। খাবারের স্বাদ বাড়াতে দারুচিনির তূলনা হয়না।

এক্ষেত্রে ক্যাসিয়া হলো দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত।

৪)১কেজি ক্যাসিয়ার দাম আনুমানিক ২৫০টাকা কিন্তু ১কেজি দারুচিনির দাম আনুমানিক ৫০০০টাকা।

সতর্কতাঃ-ক্যাসিয়ার কুমারিনের বিষক্রিয়ায় কিডনী ও লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ক্যাসিয়াতে উচ্চ মাত্রার কুমারিন থাকায় এ ব্যাপারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য সংস্থা এরই মধ্যে সতর্কতা জারি করেছেন। ইউরোপীয় হেলথ এজেন্সি ও জার্মান ফেডারেল ইনস্টিটউট ফর রিস্ক অ্যসেসমেন্ট ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সবাইকে সাবধান করেছেন;বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন-http://en.wikipedia.org/wiki/Coumarin.

সূত্রঃ*http://www.benefits-of-honey.com/ceylon-cinnamon.html
*http://en.wikipedia.org/wiki/Cinnamomum_cassia
*http://en.wikipedia.org/wiki/Cinnamomum_verum

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.