Set sail, ye hearts~ into the sea of hope..
ঠিক কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায় ব্যাপারটাকে? কারিগরি ত্রুটি, পাইলটের অবহেলা, নাশকতা অথবা কোনো দৈব দুর্ঘটনা – কোনো ব্যাখ্যাই মনো পুত হচ্ছে না কারো কাছে। কারো কাছেই নেই একটা সমাধানে পৌঁছানোর মতো পর্যাপ্ত ক্লু! বিশেষজ্ঞদের কিছু ভাসা ভাসা অনুমানের উপর ভর করেই পুরো বিশ্ব পার করে দিলো উৎকণ্ঠাময় তিনটা দিন।
কথা হচ্ছিলো যাত্রার মাঝপথে “উধাও” হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ান বিমানটিকে নিয়ে। গত শনিবার স্থানীয় সময় ১২টা ৪০ মিনিটে কুয়ালালামপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার এক ঘণ্টা পর থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি ২৩৯ জন যাত্রী বোঝাই বোইং-৭৭৭ বিমানটির।
প্রথমদিকে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছিলো বটে, তবে উধাও হয়ে যাওয়ার সময় – অর্থাৎ শনিবার রাতের পর যেহেতু বেশ কয়েকটা দিন এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে, এখন আর বিমানটিকে অক্ষত ‘উদ্ধার’ করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে যে বিষয়টা খটকা লাগছে সবার কাছে, হারিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে বিমানটি ভূমি থেকে প্রায় ৩৮০০০ ফিট উপরে ছিলো , কোনো কারণে ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলেও অন্তত একটা মেসেজ পাঠানোর মতো পর্যাপ্ত সময় কিন্তু পাইলটের হাতে থাকার কথা। এমনকি ক্রুরাও বেজ স্টেশনে রিপোর্ট করতে পারতেন, সেই প্রযুক্তিও প্লেনটিতে ছিলো।
তবে কি এতো দ্রুত ঘটনাটি ঘটে গেছে যে রিপোর্ট করার সময়টুকুও পাননি তারা? কিন্তু কি হতে পারে তার কারণ – সহসা বজ্রপাত? অথবা মহাকাশ থেকে ছুটে আসা কোনো উল্কা ..কিংবা, ইউএফও ??
না, বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো জাহাজ উধাও হয়ে যাওয়ার গল্প আমরা আর শুনতে চাই না। এর পেছনে গ্রহণযোগ্য একটা ব্যাখ্যা অবশ্যি থাকতে হবে! সেটা হতে পারে নাশকতার চেষ্টাও। ভুয়া পাসপোর্ট ধারী দুই নাগরিক যে ওই বিমানে উঠেছিলেন তা এরই মধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।
এমনও হতে পারে প্লেনটিকে হাইজ্যাক করার পরিকল্পনা ছিলো সন্ত্রাসীদের এবং তাদের কাছে থাকা বিস্ফোরকের আঘাতে ককপিট এলাকা বিশেষ করে পাইলট বেশ ভালোভাবেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই কোনো খবর পৌঁছে দেয়ার আগেই নিরুপায় অন্তর্ধান!
প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য দিয়ে রাখি, বোয়িং-৭৭৭ মডেলের বিমান ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে নির্ভরযোগ্য বিমান হিসেবে যাত্রী বহন করে এসেছে এতদিন। গতবছর একটি দুর্ঘটনা ছাড়া আর কোনো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় পড়েনি আধুনিক এই বিমানটি। এছাড়া এই ফ্লাইট পরিচালনায় যারা ছিলেন, রেকর্ড বলছে তারা সবাই-ই অভিজ্ঞ পাইলট ছিলেন। তবে মালয়েশিয়াও কিন্তু আমাদের দেশের মতোই লোকসান দিয়ে বিমান চালায়, তাই সাম্প্রতিককালের বাজেট ছাটাই করার কারণে বিমানের কারিগরি দিকগুলো অবহেলা করা হয়েছে কিনা – সরকারের দিকে এমন প্রশ্নের আঙ্গুল তুলেছেন অনেকেই।
অন্তর্ধানের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে বিমানটিকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাব্য এলাকা ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। আঁতিপাঁতি করে খুঁজে বের করার জন্য বেশ বড় একটা এলাকা। চীন, মালয়েশিয়া ভারত ফ্রান্স সহ যে সমস্ত দেশের নাগরিকরা বিমানে ছিলেন তারা তো বটেই, এছাড়াও বিভিন্ন দেশ হাত লাগিয়েছে উদ্ধার অভিযানে। শেষ পাওয়া খবরে দেখলাম একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহের সহায়তাও নেয়া হচ্ছে এখন।
যখন আমরা রহস্যের ডালপালা মেলে এসব ভাবছি, ঠিক তখনই ২৩৯টি পরিবারে চলছে শোকের প্রস্তুতি।
স্বজনের জন্য প্রবল উৎকণ্ঠা আর প্রার্থনার সময়। কখন জানা যাবে বিমানটিকে পাওয়া গেছে, পাইলট ক্রু আর যাত্রীরা সকলেই অক্ষত – এমন একটা প্রায় অসম্ভব খবরের অপেক্ষায় আছেন নিরুপায় কিছু মানুষ। সমবেদনা আর সহমর্মিতা রইলো তাদের প্রতি।
--
আপডেট: মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলে মালাক্কা প্রণালীতে বিমানটিকে পাওয়া গেছে এমন দাবী করেছে মালয়েশিয়ার সেনাবাহিনী। তবে বিস্তারিত কিছু এখনো জানা যায়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।