সত্যি কথা বলতে আমরা সকলেই অনেক বেশি ক্ষিপ্ত হংকং এর বিরুদ্ধে দলের পারফরম্যান্স এ। হংকং এমন একটি দল যারা আফগানিস্তান বা নেপাল এর সাথে বড় ব্যবধান এ হারে। একটা জিনিস খুবই লক্ষনীয় সবাই একজন খেলোয়াড় এর ব্যাপারে কঠোর সমালোচনায় আর তা হল ফরহাদ রেজা। জিয়াউর কে দল এ নেওয়ার ব্যাপারে সবাই উদ্গ্রীপ কিন্তু এই বিষয়ে আমি দ্বিমত করছি। ফরহাদ ক্যারিয়ার স্টার্ট করেছিলো টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে,তখন এভারেজ ৩০ + ছিলো কিন্তু যখন লোয়ার অর্ডার এ নামিয়ে দিলো তখন এভারেজ কমতে থাকে।
ও শুরুতে ভালো করতে পারেনি বলেই এত বছর অনিয়মিত ছিলো কিন্তু ৮-৯ বছর ধরে ঘরোয়া লিগে ভালো করার কারণে সুযোগ পেয়েছে যদিও মাঝে দুই একবার সুযোগ পেয়েছিল। জিয়া গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণেই বাদ পরেছে। বর্তমান বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করা হয়েছে এশিয়া কাপ এর আগে। সে সময় পর্যন্ত দেখলে আমরা দেখি ২০১২ সালে ১৮ জুলাই ক্যারিয়ার এর প্রথম ম্যাচ এ জিয়া করেছিল ৪০* .আচ্ছা এর পর কি টি ২০ তে কি কখনো ফিফটি করেছিলো সে ?উত্তর না। ফিফটি তো দুরে থাক টি২০ তে ২০+ করেছে মাত্র এক বার ! তার খেলা ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে স্কটল্যান্ড,নেদারল্যান্ড বা জিম্বাবুয়ে এর মত টিম এর কাছে যখন জিয়া ছিলো ফ্লপ!আরো দুইটা ম্যাচে বাংলাদেশ হারতে হারতে শেষ বলে যেতে আয়ারল্যান্ড এর সাথে তখন ও ফ্লপ !তার টি২০ পরিসংখ্যান এমন লাস্ট ১০ ইনিংস এর রান এমন ৬,২,ব্যাট করেনি,১*,১৪*,২২,ব্যাট করেনি,৯,০,১৪।
মানে শেষ ১০ ইনিংস এ সর্বোচ্চ ২২। এভারেজ ১১.৩৩!!এই পারফরম্যান্স নিয়ে আপনি দলে থাকার আশা নিশ্চই করতে পারবে না। এবার তার ঘরোয়া লিগ এর পারফরম্যান্স যদি দেখেন ঢাকা লিগে ১৪ খেলায় তার এভারেজ ছিল মাত্র ১৬,ফিফটি মাত্র একটি। বল হাতে মোটামুটি,১৪ খেলায় ১১ উইকেট। সাম্প্রতিক শেষ হওয়া টি২০ সিরিজ এ ৫ ম্যাচে সংগ্রহ ৮৬,সর্বোচ্চ ২৮! আর সে ১০.৫ বল করে রান দিয়েছে ১০৩ পেয়েছে দুই উইকেট।
টি২০ চ্যালেঞ্জ সিরিজে দুই ম্যাচে ৩৭ রান করেছে যেখানে ওভার ৩ এ দিয়েছে ৩০ রান। আমি আপনাকে প্রশ্ন করি,আন্তর্জাতিক নাকি ঘরোয়া লিগে পারফরম্যান্স,কোনটি দিয়ে জিয়াকে দলে নিবেন?সবাই ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন এই রকম পারফরম্যান্স করে দলে কি টিকা যায় ?সর্বশেষ ঘরোয়া লিগে সর্বোচ্চ উইকেটটা কিন্তু ফরহাদ রেজারই টার্নিং পিচে। ব্যাট হাতে ২৫+ এভারেজ আর ১১০+ স্ত্রীকে রেট। বিসিএলে দুই ম্যাচে রেজার সংগ্রহ ২২৯(৪০ চার্ ,১০ ছয়), এর আগের বছরেও দেশের পেসার দের মধ্যে ছিল অন্যতম সর্বোচ্চ উইকেট। ভিক্টোরিয়া ডে টি২০ কাপে তার এভারেজ ২৪, স্ট্রাইক রেট ১৬০, বল্হাতে এভারেজ ১৪.৭৫,ইকনোমি ৬.২১।
,রেজার দলে ডাক পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে ৮-৯ বছর ঘরোয়া লিগে ভালো করা আর জিয়াউর রহমান এর ধারাবাহিক ব্যর্থতা। লাস্ট উইকে আরব আমিরাতের সাথে ফরহাদ বল করে২৭ রানে ২ উইকেট সঙ্গে ৭ বলে ১৪ রান,আয়ারল্যান্ড এর সাথে এক ওভার এ দিয়েছে ৪রান,আফগানিস্তানের সাথে এক ওভার এ ২ রান ১ উইকেট। আমার কথা হচ্ছে এক জন বলার কে দিয়ে পুরো স্পেল না করলে তাকে দলে না নেওয়া ভালো। আগের ম্যাচে তাকে নেওয়ার একটা কারণ ও ছিল। যেহেতু পিচ ছিল ঘাসে ভরা,আর রাতে ছিল ডিউ এর প্রভাব সেহেতু তিন পেসার ছিল অবস্সম্ভাবি,টি২০ তে রুবেল এর ইকনমি রেট হল ৯.৩৯ সেখানে ফরহাদ রেজার ১০.০৩।
যার ফলে ব্যাটিং দক্ষতার কারণে রেজা দুই খেলাতে সুযোগ পেয়ে যায়। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের সাথে ৪১ রানের একটা ইনিংস ছিল জিয়ার,যার কারণে বেশ তোলপার,কিন্তু বাকি দুই ম্যাচে তার রান হল ১৮ আর ১২। এর বাইরে যদি আমি দেখি দুই দিন আগে হওয়া টি২০ ম্যাচে জিয়ার সংগ্রহ ৬ রান,এক ওভার এ দিয়েছে ১১ রান। বলে রাখা ভালো এই খেলায় বাংলাদেশ এ করেছিল ১১৬, বাংলাদেশ হেরেছে একদম শেষে এসে,এখানে কেউ জিয়া কে ভিলেন করেনি। আমি একটা জিনিস বলতে চাইছি যেহেতু খেলাটা হল টি ২০,সেহেতু বোলারদের ৫-৭ রানের জন্য দোষ দিয়ে লাভ নেই যেখানে মালিঙ্গা আগের ম্যাচে ২ ওভার এ দিয়েছিল ২২ রান।
এখানে ডীউ এর কারণে বোলাররা তাদের পূর্ণাঙ্গ বল করতে পারছিল না এটা বুঝতে হবে। তবে হ্যা,এমন দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ১৬ ওভার এ কেন অল আউট হয় এটা একটা প্রশ্নের ব্যাপার কোন সন্দেহ নেই। এমন ব্যাটিং অস্ট্রেলিয়া এর বিপক্ষে মানা যায়না সেখানে হংকং। সত্যি কথা বলতে ব্যাটিং যদি উন্নতি না করা হয়,মালিঙ্গা বা শেন ওয়ার্ন মানের বোলার এনে কোন লাভ হবে না ,বাংলাদেশ হারতে থাকবে। জিয়াদের সাথে নিয়ে আমরা হেরেছি নেদারল্যান্ড,আফগানিস্তান কিংবা স্কটল্যান্ড এর মত ওয়ান ডে স্টাটাস হারানো দল এর কাছে,হেরেছি জিম্বাবুযাদের কাছে ও ।
আবার জিয়া ছাড়া ফরহাদ কে নিয়ে হেরেছি হংকং এর কাছে। সত্যি কথা বলতে ওলট পালট অনেক হল,ফলাফল শুন্য অবশেষে। দর্শকদের উদ্দেশ্যে একটা অনুরোধই করবো,খেলা দেখুন,ইনজয় করুন। গত কয়েক বছর ধরে যেমন করছিল দল সেরকমই করবে হয়তো,শুধু শুধু আমরা কষ্ট নিয়ে কোন লাভ নেই। গত কয়েক বছর এর টি২০ খেলার পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে বলছি,(আমায় ভুল বুঝবেন না) বাংলাদেশ টি২০ দল এর কাছে খুব বেশি আশা করে লাভ নেই।
দল আমরা যতই পরিবর্তন করিনা কেন মাঠে খেলবে খেলোয়াড়রাই,আমরা নই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।