ঝালকাঠির রাজাপুরে উপজেলা নির্বাচনে ১ যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছে। নিহত যুবলীগ নেতার নাম রিপন (২৮)। সে উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামের আব্দুস সোবাহানের পুত্র।
বেলা ১১টায় তারাবুনিয়ায় নির্বাচনী কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রন নিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে যুবলীগ কর্মী রিপন, নাসের, রাজা, মুছা, লোকমান, রুহুলসহ ১০জন আহত হয়। দুপুর ১টায় ডহরশংকর এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রাজা বাকলাইকে কুপিয়ে আহত করেছে বিএনপি সমর্থকরা।
বরিশাল নেয়ার পথে রিপন মারা যায়।
এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনির রাজাপুর প্রেসক্লাবে বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনে করে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী নাসিম উদ্দীন আকনের সমর্থকদের হামলার ঘটনায নিন্দা জানান। তিনি জানান, নাসিম আকন নিশ্চিত পরাজয় জেনে ২টার সময় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জন করেছেন এটা হাস্যকর ঘটনা। দুপুর ২টায় একইস্থানে প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব, ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। তবে বিএনপি সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা কেউই উপস্থিত ছিলেননা।
বেলা ১১ টায় আওয়ামী লীগের এমপি বিএইচ হারুনের নিজ গ্রাম উপজেলার কানুসদশকাঠিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাসিম উদ্দিন আকননের উপর হামলা চালিয়ে তার গাড়ি ভাংচুর করেছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এসময় নাসিমসহ ৫জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলা বিএনপি প্রার্থী সরদার এনামুল হক এলিন দুপুর ১২টায় উপজেলা নির্বাচন আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্জনের ঘোষনা দেন। সকাল ১০ টায় জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুরের বাস ভবনে তিনি অভিযোগ করে বলেন ছাত্র, যুবলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে জোর পূর্বক ব্যালট কেটে বাক্স ভরে ফেলে। আমার এজেন্টদের বের করে দেয়।
এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে জানানো সত্বেও কোন ব্যাবস্থা না নেয়ায় আমি ও আমার প্যানেল প্রার্থীরা এ নির্বাচন বর্জন করেছি।
একই অভিযোগে নলছিটি উপজেলার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থি আনিছুর রহমান খান হেলাল ও কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মিরন সিকদার বেলা ১১ টায় এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন।
এদিকে আজ সকাল সাড়ে ৯ টায় রাজাপুরের কানুদাসকাঠি কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থীত প্রার্থী নাসিম আকন উপস্থিত হলে প্রতিপক্ষরা তার গাড়ী ভাংচুর করে। এসময় তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হলে আইনশৃংখলা বাহিনী সেখান থেকে নিয়ে আসে। তখন প্রতিপক্ষের হামলায় নাসিম আকনের ৪ সমর্থক আহত হয়।
গালুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে কিছু সময় ভোট গ্রহন স্থগীত রাখা হয়। ফুলহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও অনুরুপ ঘটনা ঘটে। কৈবর্তখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দে ও শুক্তাগড় কেন্দ্রে ২টি ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে তা কেন্দ্রের অদুরের মাঠ থেকে উদ্ধার করে।
জিবনদাসকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিক প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়ায় এজেন্ট শিক্ষক ফিরোজ মৃধা (৫০) গুরুতর আহত হয়। তিনি জানান, এই কেন্দ্রে আমি প্রার্থী নাসিম আকনের পক্ষে এজেন্ট হিসেবে উপস্থিত হলে আওয়ামী লীগ নেতা মজিদ তালুকদারের ছেলে হিরু ও আবু তালুকদার আমাকে মারধর করে জামা ছিড়ে ফেলে।
ঐ কেন্দ্রর প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোঃ হানিফ জানান, সকাল থেকে আমার কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থীত প্রার্থীর কোন এজেন্ট ছিলনা। জীবন রাজাপুরের শুক্তাগড় মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থির পক্ষে জোড় পূর্বক ভোট প্রদান করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যালট ছিনতাই ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ ৫ জন আহত হয়।
ছিনতাইয়ের দেড় ঘন্টা পর ঝালকাঠির নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কবির হোসেনের নেতৃত্বে বিজিবির একটি দল কেন্দ্রে ২শ গজ দুরে খালের পাড় থেকে তা উদ্ধার করে। পুটিয়াখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দেড় ঘন্টা ভোট গ্রহন বন্ধ রাখা হয়।
এছাড়াও কাটাখালী গ্রামের বিএনপি সমর্থীত প্রার্থীর সমর্থক নুরুল ইসলাম ও ইউনুস হাওলাদারের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে ৪ জন আহত হয়। এব্যাপারে রাজাপুর বিএনপি সমর্থীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিম উদ্দিন আকন বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মী, পুলিশ, বিজিবি, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরাই নির্বাচন করছে। তারা সবাই আনারস মার্কার পক্ষে কাজ করছে।
আমার প্রায় ২৫ টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।
আমার জানা মতে মাত্র ১২ টি কেন্দ্রে এজেন্ট আছে। তিনি দুপুর ২ টায় রাজাপুর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। কাঠালিয়ার মিরন সিকদার বলেন, আমার প্রায় ৪০ টি নির্বাচনি অফিস ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, প্রতিটা কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। সশস্ত্র ক্যাডার দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে নিচ্ছে।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টার সময় রাজাপুরের পুটিয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।