আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রংপুরে নতুন শিল্প হচ্ছে না বন্ধ হচ্ছে পুরন

রংপুর বিভাগের কার্যক্রম চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নতুন কোনো ভারী শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো উদ্যোগও নেই। এগিয়ে আসছেন না বেসরকারি উদ্যোক্তারাও। ব্যাংকাররা বলছেন, উদ্যোক্তারা ঝুঁকি নিতে চান না বলেই বড় প্রকল্পে ঋণ দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে উদ্যোক্তারা বলছেন, ব্যাংক ও সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় ভারী কল কারখানা গড়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে ব্যাংক ঋণের অনিশ্চয়তা, উৎপাদিত পণ্যের বিপণন সমস্যা, ঝুঁকি ও গ্যাস না থাকায় পুরনো শিল্প কারখানাগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গত এক দশকে ২৫টি ভারী শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়েছেন তিন লাখের বেশি শ্রমিক। রংপুর কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় ভারী ও মাঝারি শিল্প কারখানা ছিল ৬৫টি। এর মধ্যে হিমাগারই ৩৮টি। বর্তমানে মূলধন সংকট ও প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ১৫টির মধে রুগ্ন হয়ে পড়েছে ১০টি শিল্প কারখানা। ১০ বছর আগে চালু করা হয় মার্কেন্টাইল ব্যাংক রংপুর শাখা। এখন পর্যন্ত এ শাখা থেকে ভারী শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠায় কোনো ঋণ দেওয়া হয়নি। ব্যাংকটির এভিপি আবদুল মতিন বললেন, ভারী শিল্প নির্মাণে কোনো উদ্যোক্তা আসেনি। টাকা নিয়ে বসে আছি। এনসিসি ব্যাংক রংপুরে শাখা খুলেছে ১৬ বছর। এখন পর্যন্ত ভারী শিল্প কারখানা প্রকল্পে ঋণ দেয়নি ব্যাংকটি। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক তাহাজ উদ্দিন বলেন, রংপুরে উদ্যোক্তার ঘাটতি আছে। তারা বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে চান না। নিশ্চিত মুনাফা চান। ফলে কৃষির পাশাপাশি রংপুরের অর্থনীতি একটা দোকানদারি চরিত্র নিচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক আ ফ ম আলী আজগর বলেন, ভারী শিল্প স্থাপনের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার রংপুরে তা নেই। ভারী শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে সবার আগে প্রয়োজন গ্যাস। লরেন্স টেঙ্টাইল, রংপুর টেঙ্টাইল এবং কুড়িগ্রাম টেঙ্টাইল ও স্পিনিং মিল স্থাপনের জন্য বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাংক বড় ধরনের মার খেয়েছে। ফলে ভারী শিল্পে ঋণ প্রদান বন্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি অনেক যাচাই-বাছাই করে একটি জুট মিল ও একটি ফুড কারখানার জন্য ঋণ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকারদের অভিযোগ মানতে নারাজ রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর কাছে শিল্প স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে গেলে আগেই লোকসানের বিষয়টি বিবেচনা করে। তারা মুনাফার দিকটাই বেশি দেখে। আর এফবিসিসিআইর পরিচালক, মোতাহার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, স্থানীয় ব্যাংকগুলো শিল্প ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, বাড়ি নির্মাণ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে মোটা ঋণ প্রদানে আগ্রহী বেশি। তার মতে এ অঞ্চলে শিল্পায়নের জন্য সরকারকে বিশেষ তহবিল গঠন করার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের কর ও ব্যাংক ঋণ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দিতে হবে। সবার আগে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। না হলে শিল্প কারখানাগুলো যেমন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তেমনি নতুন করে কোনো শিল্প কারখানাও গড়ে উঠবে না।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.