এবার ছয় ধাপে উপজেলাগুলোতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠিত চারটি এবং আগামী ৩১ মার্চ পঞ্চম ধাপ মিলিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, যা ৫ বছর আগে অনুষ্ঠিত তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনের ব্যয়ের আড়াই গুণ।
এই পাঁচ দফায় মোট বরাদ্দের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় যাচ্ছে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাজেট শাখার কর্মকর্তারা জানান।
এর মধ্যে স্থগিত হওয়া কেন্দ্রেগুলো এবং অবশিষ্ট উপজেলাগুলোর ভোট মে মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষ করতে চায় ইসি।
এসব ভোটের ব্যয় যোগ হলে ব্যয় আরো বাড়বে, যা তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনের ব্যয়ের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি হতে পারে।
পাঁচ-ছয় ধাপে ভোট করা, নির্বাচনী সামগ্রী ও কর্মকর্তাদের ভাতা আগের তুলনায় বেড়ে যাওয়ায় এবার সার্বিক ব্যয় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (বাজেট) শাজাহান খান।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ৪৮৭ উপজেলায় পর্যায়ক্রমে ভোট শুরু হয়। ইতোমধ্যে চার ধাপে ৩৮৫ উপজেলায় ভোট হয়েছে। রোববার পঞ্চম ধাপে আরো ৭৪ উপজেলার নির্বাচন হবে।
শাজাহান খান বলেন, “ধাপে ধাপে ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। ”
তবে ভোটের পর খরচের পূর্ণাঙ্গ হিসাব পাওয়া যাবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
সবশেষ ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি একযোগে ৪৮১ উপজেলায় ভোট হয়। ওই নির্বাচনে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
এর মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় যায় ৬৪ কোটি ২৭ লাখ ১২ হাজার টাকা; আর আইন শৃঙ্খলায় ৬৬ কোটি ৯৭ লাখ ৪১ হাজার ব্যয় হয়।
ওই নির্বাচনেও ভোটের আগে-পরে পাঁচদিন সশস্ত্রবাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে মোতায়েন ছিলেন। আর উপজেলায় ধাপে ধাপে তাদের মোতায়েন করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাজেট শাখার কর্মকর্তারা জানান, এবার ৫ ধাপে উপজেলা ভোটের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আনসার-ভিডিপি ৮০ কোটি ৬৬ লাখ, পুলিশ-র্যাব ৬৩ কোটি, সশস্ত্রবাহিনী ৩৬ কোটি, বিজিবি ১৮ কোটি ১২ লাখ এবং কোস্ট গার্ড ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনা খাতে প্রথম পর্বে ৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার, দ্বিতীয় পর্বে ৩৪ কোটি ৬৬ লাখ, তৃতীয় পর্বে ২৫ কোটি ৬৮ লাখ, চতুর্থ পর্বে ২৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
আর রোববার পঞ্চম পর্বের ভোটের জন্য ইতোমধ্যে ছাড় করা হয়েছে ২৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
বাজেট শাখার এক কর্মকর্তা জানান, ২০০৯ সালে প্রিজাইডিং অফিসারদের ভাতা দেয়া হতো এক হাজার টাকা, এবার তা বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের ভাতা ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার এবং পোলিং অফিসারদের ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে দেড় হাজার টাকা হয়েছে।
রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, ম্যাজিস্ট্রেটটের ভাতাসহ ব্যালট পেপার ছাপানো, কালি, সিল, ব্যাগ, মার্কিং পেনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনায়ও খরচ আগের তুলনায় বেড়েছে।
কমিশনের কর্মকর্তাদের ধারণা, এবার উপজেলা নির্বাচনের ব্যয় দশম সংসদ নির্বাচনের খরচকেও ছাড়িয়ে যাবে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ফলে ভোট হয় ১৪৭ আসনে।
এতে মোট ২৬৪ কোটি ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬৯ টাকা ব্যয় হয় বলে সম্প্রতি সংসদে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এর মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় ৮১ কোটি ৫৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৪১ এবং আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পেছনে ১৮৩ কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার ১২৮ টাকা ব্যয় হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।