বুধবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ গাওয়ার অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।
২ লাখ ৫৪ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত গাওয়ার এ অনুষ্ঠানে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের (সার্বিক ব্যবস্থাপনা) দায়িত্ব পায় ‘এশিয়াটিক ইভেন্টস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
সৃজনশীল কাজের দায়িত্ব পায় ‘এশিয়াটিক মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স’ এবং গণসংযোগের দায়িত্ব পায় ‘ফোর থট পিআর’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেকটিতে আসাদুজ্জামান নূরের মালিকানা রয়েছে এবং প্রতিটির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন তিনি।
কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, তিনটি প্রতিষ্ঠানেই ব্যবস্থাপনায় উচ্চপদে রয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী।
এশিয়াটিক ইভেন্টেস ও ফোর থট পিআরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এশিয়াটিক মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন্সের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নূরের নাম রয়েছে।
মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠান নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজ পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কয়েকদিন ধরেই সমালোচনা হচ্ছে।
একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তার ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন, “জনাব নূর এর মাধ্যমে যে গুরুতর অপরাধ করেছেন তা হলো- সরকারি দায়িত্বে থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে থাকা এবং দেশপ্রেমের রেকর্ডের নামে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাতে তার নিজের প্রতিষ্ঠান সরাসরি লাভবান হয়। ”
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানেও এ বিষয়ে বাধানিষেধ রয়েছে।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী সম্পর্কে সংবিধানে বলা হয়েছে, “এই রূপ কোনো পদে নিযুক্ত বা কর্মরত ব্যক্তি কোনো লাভজনক পদ কিংবা বেতনাদিযুক্ত পদ বা মর্যাদায় বহাল হইবেন না কিংবা মুনাফালাভের উদ্দেশ্যযুক্ত কোনো কোম্পানি, সমিতি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় বা পরিচালনায় কোনো রূপ অংশগ্রহণ করিবেন না।
”
এসব কাজে মন্ত্রী নূরের ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাত হয়েছে কি না, তা সরকারকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান।
“এখানে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট আছে কি না এটা দেখার দরকার সরকারের পক্ষ থেকে,” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশনের সাবেক এই প্রধান।
এই বিষয়ে আসাদুজ্জামান নূরের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস পাঠানো হলেও কোনো জবাব দেননি তিনি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এশিয়াটিকের মূল কোম্পানি এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটির চেয়ারম্যান আলী যাকের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সে এখন জাস্ট এ বোর্ড অব ডিরেক্টর, সে অফিস হোল্ড (নির্বাহী পদ ধারণ) করে না।
আগে করত, পদত্যাগ করেছে। ”
কোম্পানির সঙ্গে তিনি যেহেতু আছেন তাহলে কি এটা কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট হচ্ছে না- জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সেটা তো আমি বলতে পারব না।
“এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং হল দেশের অন্যতম বড় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। আমরা অনেক কাজ করেছি। আমাদের কোম্পানির যোগ্যতা দিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত বিশাল বড় বড় কাজ করেছি, ফলে ওই ধারাবাহিকতায় হয়ত আমরা পেয়েছি।
”
“এটা তো বলা নেই কোথাও যে কোম্পানির বোর্ডের একজন মেম্বার, যে এখন চাকরি করছে না, তা সত্ত্বেও আমরা কাজ পাব না,” বলেন তিনি।
আলী যাকের বলেন, এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন নূর, এর অধীনস্ত ১২টি কোম্পানির বোর্ডে রয়েছেন তিনি।
সুত্রঃ রিয়াজুল বাশার , বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম,
2014-03-29
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।