আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘জীবনের ভয়ে ও চাপের মুখে ফল ঘোষণায় বাধ্য হই’

‘জীবনের ভয়ে ও দুর্বৃত্তদের চাপের মুখে’ টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের উপনির্বাচনে স্থগিত একটি কেন্দ্রের ফলাফল ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হাবিবা আখতার। এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা গতকাল রোববার বলেছেন, ওই কেন্দ্রে আবার ভোট গ্রহণ করা হবে। হাবিবা আখতার এই ঘটনার জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ মিঞাসহ অজ্ঞাত কয়েক হাজার লোককে দায়ী করে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেওয়া আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অনুপম শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীদের ব্যাপারে জিডিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
গত শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনুপম শাহজাহান কয়েক হাজার লোক নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ঘেরাও করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁকে দিয়ে স্থগিত একটি কেন্দ্রের ফল ও তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করান।


কিন্তু ঘেচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র স্থগিতের আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকায় অনুপম শাহজাহানের বিজয় ঘোষণাও স্থগিত থাকছে। তিনি এখন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে দুই হাজার ২৩৬ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে আছেন। স্থগিত কেন্দ্রের ভোট দুই হাজার ৭০১টি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা খুরশীদ আনোয়ার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ভয় পেয়ে ও চাপের কারণে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা করেছেন। তবে তাঁর এই ঘোষণা গ্রহণ করা হচ্ছে না।

বিকেলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কেন্দ্র স্থগিতের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটাই বহাল থাকছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, কমিশনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ দায়িত্বপালনকারী ১৯ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে সুপারিশ করেছেন বলেও জানান তিনি।
হাবিবা আখতার নির্বাচন কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছেন, ঘেচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্থগিত করা হয়। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কেন্দ্রে ভোটারদের সামনে ভোট স্থগিতের কথা জানান।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজ মাহমুদ এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
হাবিবা কমিশনকে জানিয়েছেন, তিনি সখীপুর উপজেলার ৬৭টি কেন্দ্রের চূড়ান্ত ফলাফল ও একটি কেন্দ্র স্থগিতের বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ‘স্থগিত কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্থগিতের বিষয়টি লিখিতভাবে না দিয়ে উল্টো ওই কেন্দ্রের ফলাফল শিট দাখিল করে। কিন্তু আমি তা নিতে অস্বীকার করি এবং তাকে স্থগিতের লিখিত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিই। কিন্তু সে আদেশ অমান্য করে ও তার সঙ্গে আসা কয়েক হাজার লোক গোলমাল করতে থাকে এবং আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।

একপর্যায়ে কিছু দুষ্কৃতকারী ও ও দুর্বৃত্ত টাইপের লোক আমার জীবননাশের হুমকি দেয়। তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ফলাফল ঘোষণা করতে বাধ্য হই। ’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনুপম বলেছেন, তিনি বা তাঁর লোকেরা নির্বাচনে কোনো কারচুপি করেননি। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হুমকি দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। কমিশনের সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবেন।


অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল মালেক মিঞা কারচুপির অভিযোগ করে বলেন, কমিশন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিল না। এমনকি যাঁরা জোর করে ফল ঘোষণা করালেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হলো না। তিনি একে নির্বাচনী প্রহসন বলে আখ্যা দেন।
মালেক মিঞার কর্মী-সমর্থকেরা ৩২টি কেন্দ্রে নতুন করে ভোট নেওয়ার দাবিতে গতকাল দুপুরে সখীপুরের নদুয়া এলাকায় ঘণ্টা খানেক সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
এদিকে ভোটের দিন অর্থাৎ গত শনিবার রাত থেকেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শুকুর মাহমুদ মিঞার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, তাঁকে টাঙ্গাইল সদরে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.