প্রথমেই বলে রাখি, আমার এই লেখাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম সমাবর্তনের সম্মানিত গ্র্যাজুয়েটদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা।
ছাত্রজীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মূহুর্তকে অতিক্রম করতে যাচ্ছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ,বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একদল তরুণ গ্র্যাজুয়েট। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এমন একটি মূহুর্ত আমার জীবনেও এসেছিল। আনন্দ, বেদনা আর ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করার অদম্য ইচ্ছা শক্তিতে পরিপূর্ণ এমন দিন আর কখনো আসবে না। এটি আমার কাছে ছিল একটি দায়িত্ব অর্পনের অনুষ্ঠান।
এটা কোন সাধারণ দায়িত্ব নয়। এটা ভবিষ্যত পৃথিবীর দায়িত্ব। সমাজ, দেশ ও নিজের পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনের এক কঠিন চেলেঞ্জ এখানে তুলে দেওয়া হয় কিছু সম্ভাবনাময় তরুণের হাতে।
এটি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হবে তাদের জন্যে যারা আমৃত্যু এই দায়িত্ব সচেতনতার পরিচয় দেওয়ার শপথ নিবে। এটি শুধু ক্যামেরা বন্দী করার মূহুর্ত নয়।
এটি চ্যালেঞ্জকে অনুধাবন করার শ্রেষ্ঠ সময়।
আপনি গ্র্যাজুয়েশন করেছেন ঢাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এটা অবশ্যই আপনার মেধার স্বাক্ষর বহন করে। কারণ এখানে পা দেওয়ার সৌভাগ্য খুব কম মানুষের ভাগ্যেই জুটে। একবারও কি ভেবে দেখেছেন যে আপনি কত টাকা বেতনে পড়াশুনা করেছেন? আপনার পড়াশুনার খরচ কে বহন করে?
আপনি অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন যে আমি কাদের কথা বলছি।
এদেশের সাধারণ মানুষের ঘামের টাকায় আপনি পড়াশুনা করেছেন। শ্রমজীবী আর মেহেনতি মানুষের টাকায় আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। এটা জীবনের দায়। এই দায় কখনো শোধ করার নয়। তবে প্রতিদান দেওয়ার অবশ্যই সুযোগ আছে।
আজকে সবাই একটি ভালো বেতনের চাকুরীর স্বপ্ন দেখছে। আবার কেউবা বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্যে বৃত্তির সন্ধান করছে। জীবনের দায় শোধ করার কথা কে আবার চিন্তা করে? যেই মানুষগুলা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এক আধবেলা খেয়ে এই গরীব দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরায় তারাতো আজীবন দাশ। অফিসের বড় চাকুরে হয়ে ঘুষ ছাড়া একটা ফাইলও নড়ে না। কি লাভ হল সেই দাশের যার টাকায় আমি বিদ্যা শিক্ষা অর্জন করলাম?
আমাদের নিজেদের আখের গোছাতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করতে হয় না।
অথচ সমাজ আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব আমার নয়। সেটা সরকারের কর্তব্য। এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী বা হতে পারে?
লিখতে গেলে শুধু লেখার পরিধিই কেবল বাড়বে সমাজের চুলও তাতে নড়বে বলে মনে হয় না। তবে এটাই উপযুক্ত সময় নতুন পৃথিবী বিনির্মানের শপথ নেওয়ার। এবার প্রতিদান দেওয়ার পালা।
জীবনের দায় পুরোপুরি শোধ করতে না পারলেও একবার চেষ্টা করে দেখো।
সকল নবীন গ্র্যাজুয়েটদেরকে শুভেচ্ছা। শুভ হোক আগামীর পথচলা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।