যোগরাজ সিং। পরিচয় তাঁর অনেক। মূল পরিচয় তিনি ভারতীয় ক্রিকেট তারকা যুবরাজ সিংয়ের বাবা। পেশাগত দিক দিয়ে তিনি একজন অভিনেতা। পাঞ্জাবি ছবির প্রখ্যাত অভিনেতা হিসেবেই তিনি স্বনামে পরিচিত।
আরও একটি পরিচয় তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাপ মাথায় চাপানো প্রাক্তন এক টেস্ট ক্রিকেটার।
অভিনেতা হিসেবে তিনি যতোটা সফল, খেলোয়াড় হিসেবে ততোটা নন। পেস বোলার যোগরাজ ১৯৮০-৮১ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটনে অভিষিক্ত হন। এরপর আর কখনোই তাঁকে ভারতের হয়ে টেস্ট খেলতে দেখা যায়নি। তবে ওয়ানডে খেলেছিলেন ছয়টি।
চোট তাঁর ক্যারিয়ারকে দীর্ঘায়িত হতে দেয়নি। অপরিণত বয়সে খেলা ছেড়ে দিয়ে তিনি হয়ে যান রুপালি পর্দার অভিনেতা। তবে নিজের অতৃপ্ত ক্রিকেটীয় বাসনা তিনি পূরণ করেছেন ছেলে যুবরাজকে দিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম প্রার্থিত তারকা তাঁর সন্তান। কিন্তু গতকালকের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল তাঁকে নিমজ্জিত করেছে হতাশার সাগরে।
তিনি ভাবতেই পারছেন না, ভারতের হারের জন্য কেন সবাই তাঁর ছেলেকে দায়ী করছে? যুবরাজের একমাত্র দোষ তো ২১ বলে ১১ রান করা? বাজে দিন তো আসতেই পারে কোনো ক্রিকেটারের জীবনে। বাবার স্নেহই কেবল নয়, একজন সাবেক ক্রিকেটার হিসেবেও তিনি আর্জি জানিয়েছেন এই হারে তাঁর ছেলেকে যেন কোনোভাবেই দায়ী করা না হয়।
২০১১ সালের এপ্রিলে যুবরাজ সিংয়ের বাড়ির সামনে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছিল ভারতীয় সমর্থকেরা। তিন বছর পর সেই বাড়িই দেখল ভারতের ক্রিকেট পাগল মানুষের ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। যুবরাজের চণ্ডিগড়ের বাড়িতে চলল বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা।
তিন বছর আগে যিনি ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক, সেই যুবরাজই এবার খলনায়ক। তাঁর ২১ বলে ১১ রানের মন্থর ইনিংসটিকেই যে দেখা হচ্ছে ভারতের হারের প্রধান কারণ হিসেবে। যুবরাজের তীব্র সমালোচনায় এখন উত্তাল ভারতীয় ক্রিকেট অঙ্গন।
উত্থান-পতনই যে ক্রিকেটীয় জীবনের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন যুবরাজের বাবাও। তিনি বলেছেন, ‘যুবরাজকে এককভাবে দায়ী করার উচিত না।
আমরা যখন হেরে যাই তখন চারদিক থেকে সমালোচনার শিকার হতে হয়। কিন্তু উত্থান-পতন জীবনেরই অংশ। আর এটা খেলারও অংশ। ’
যুবরাজের পাশে ম্যাচ শেষে দাঁড়িয়েছেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিও। তিনিও মনে করেন, প্রতিটি ক্রীড়াবিদের জীবনেই বাজে দিন আসতে পারে।
দুঃসময়ে যুবরাজের পাশে দাঁড়িয়েছেন হরভজন সিংও। নিজের টুইটারে ভারতীয় এই অফস্পিনার লিখেছেন, ‘অনুর্ধ্ব-১৯ থেকে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ, ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি থেকে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। আমাকে একজন খেলোয়াড় দেখান যে বড় ম্যাচগুলোতে যুবরাজের মতো ভালো খেলেছে। একটা খারাপ দিন আসলেই আমরা খারাপ আচরণ করি। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।