যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও লেখক সিইমুর হার্শ বলেছেন, গত বছর দামেস্কের কাছে কথিত রাসায়নিক গ্যাস হামলা ছিল আসলে সিরিয়ার ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার জন্য তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার সুপরিকল্পিত ষড়যনে্ত্রর ফসল।
হার্শ বলেন, তুর্কি সরকার ওই হামলার দায় সিরিয়ার আসাদ সরকারের ওপর চাপানোর ষড়যন্ত্র করে যাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবেশী এই আরব দেশটির ওপর হামলা চালাতে পারে। তুর্কি প্রধানমন্ত্রী এরদোগান বাশার আল আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত আল কায়দার সহযোগী গ্রুপ আন নুসরাকে সহায়তা দিয়ে আসছেন। '
বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক হার্শের এইসব বক্তব্য লন্ডনের রিভিউ অফ বুকসের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে হার্শ আরো জানান, গত বছরের মে মাসে দক্ষিণ তুরস্কে আন নুসরার দশজন সদস্যকে দুই কেজি সাইরিনসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল।
কিন্তু গত গ্রীষ্মকালে এক সংবাদ সম্মেলনে মস্কোয় নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূত আইদিন সেজজিন এই খবর অস্বীকার করে বলেন, উদ্ধারকৃত সাইরিন' ছিল আসলে এন্টি-ফ্রিজ বা হিমায়ন-প্রতিরোধক'।
হার্শ একজন সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তার কথাও উদ্ধৃত করেছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা জানতাম যে তুর্কি সরকারের কেউ কেউ এ ঘটনায় জড়িত। '
গত বছরের আগস্ট মাসে দামেস্কের একটি এলাকায় রাসায়নিক গ্যাস হামলায় শত শত মানুষ প্রাণ হারায়। সিরিয়ার সরকার ওই হামলা চালিয়েছিল বলে মার্কিন সরকার ও তাদের বড় বড় প্রচারমাধ্যমগুলো প্রচারণা চালায় এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা সিরিয়ার ওপর হামলা চালানোর জন্য পেন্টাগনকে প্রস্তুত হতে বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র সরকারগুলো যুদ্ধ-বাধানোর ওই প্রচষ্টোকে সমর্থন দিয়েছিল।
কিন্তু এই প্রতিবেদনে বলা হয় যে, মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা এটা জানতেন যে এ ব্যাপারে তাদের সরকারের দাবি ছিল মিথ্যা ও বানোয়াট এবং মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এটাও জানতো যে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করছে।
ওই রাসায়নিক হামলার সঙ্গে সিরীয় সরকারের সম্পর্ক থাকার কোনো চিহ্ন বা প্রমাণ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাননি জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তারা।