বাংলাদেশ ক্রিকেট দল খুবই সম্ভাবনাময় একটা দল ছিলো, এখনো আছে। যদি ঠিক মতো পরিচর্যা করা না হয় তাহলে রাস্তায় ক্রিকেট খেলা মানের দলে পরিণত হয়ে যাবো আমরা।
সাম্প্রতিক T20 ব্যর্থতার পরে একটা টক শো দেখছিলাম যেখানে দুইজন রিপোর্টার, উপস্থাপক আর একজন সাবেক ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। তো তাদের কথার সারমর্ম এইটা দাঁড়ালো হয় অরজুনা রানাতুঙ্গা না হলে সৌরভ গাঙ্গুলীকে বাংলাদেশের কোচ করা হোক কারণ তারা জানে কিভাবে দল গঠন করতে হয়। খুবই ভালো কথা।
অতি সুন্দর কথা। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল করলে যে কোন স্বাভাবিক ক্রিকেট প্রেমীর মাথাই চক্কর দিয়ে উঠতে বাধ্য সেটা হলো হঠাৎ করেই কেন গাঙ্গুলিকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ করার কথা ভাবা হচ্ছে। কেন হচ্ছে এই কথায় না যেয়ে গঠনমূলক কিছু কথা বলি। আর তা হলো এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কি কি করা যেতে পারে।
প্রথমত, আমাদের বুঝতে হবে সমস্যা কোথায়? একটা সাদাসিদা কথা হলো নেদারল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ড এই দল গুলি কিন্তু আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে, কারণ এরা নিয়মিত প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট খেলে থাকে।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো যে দল প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে জোর দেয় তারাই ভালো করে, অতীতে করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। এখন কথা হলো প্রথম শ্রেনীর খেলা নিয়ে। আমাদের দেশে কখনোই সেইভাবে লীগ বা টুর্নামেন্ট খেলা হয় না এক বিপিএল ছাড়া, (বিপিএল আমাদের অনেক তরুণ প্লেয়ার দিয়েছে) ভারতে আইপিএল এর আদলে করা এই টুর্নামেন্ট শুধু ভালো প্লেয়ারদের জন্য একটা প্লাটফর্ম, ভালো প্লেয়ার তৈরির কারখানা নয়, খোদ আইপিএল ও এর ব্যতিক্রম নয়। ভারতে তরুণ প্লেয়ার আসে রঞ্জি ট্রফি থেকে। আজকের ভিরাট খোলি থেকে শুরু করে এই দলের প্রায় অধিকাংশই এসেছে রঞ্জি খেলে।
যেহেতু আমাদের দেশের লীগ অতোটা ভালো নয় সেক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি? নেদারল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ড এর উদাহরণ এই জন্যই দেয়া। ওদের দলের ৬/৭ জন নিয়মিত কাউন্ট্রিতে খেলে। আর এটা কারোই অজানা নয় যে কাউন্ট্রি হলো বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রথম শ্রেনীর লীগ। আমাদের দেশের প্লেয়ারদের মান কাউন্টিতে খেলা কোন প্লেয়ারের চেয়ে কোন অংশে কম বলে আমি মনে করি না। তো বিসিবি চাইলেই এই উদ্যোগটা নিতে পারে, কাউন্টির বিভিন্ন দলের সাথে আলোচনা করে।
দ্বিতীয়ত, ২০১৫ এর বিশ্বকাপ সামনে আর আমরা আছি মাঠের বাইরের ব্যাপারগুলো নিয়ে। আমাদের উচিত ৩০ সদস্যের দল ঘোষনা করে, বিসিবি একাদশ, এ টিম, বি টিম নাম দিয়ে, এর মধ্যে থাকা সবাইকে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় দল, বয়স ভিত্তিক দলের সাথে অ্যাওয়ে সিরিজ খেলানো। কারণ নিউজিল্যান্ডে বাউন্সি উইকেটে খেলা হবে। দেশের মাঠেই যদি এমন দুর্দশা হয়। নিউজিল্যান্ডে গেলে কি হবে? ওই খানে আমাদের অতীত রেকর্ড ও তো ভালো না।
এই জন্য উপরের দেশ গুলোতে যেয়ে খেলতে হবে। বাউন্সি উইকেটের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। আর পেস অ্যাটাকে নতুন অস্ত্র জোগাড় করতে হবে। কারণ বাউন্সি উইকেট মানেই পেসের খেলা। স্পিনারদের জন্য সেখানে বেশি কিছু থাকে না।
আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক বলে এই দুইটা স্টেপ নিলে বিশ্বকাপ ২০১৫ আমাদের জন্য এবারের টি২০ বিশ্বকাপের মতো অপমান আর লজ্জার আসর হবে না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।