মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার বেউথা মৌজায় কালীগঙ্গা নদীর তীরের প্রায় ১৮৫ শতক জমি দখল করে মাটি ভরাট করা হয়েছে। ক্রয়সূত্রে জমির মালিকানা দাবি করে পৌর মেয়র রমজান আলী ওই মাটি ভরাট করেছেন বলে জানা গেছে। তবে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ওই জমি সরকারি মালিকানাধীন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হলে জেলা প্রশাসন গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তা ভেঙে দেয়। জমির মালিকানা নিয়ে দুই পক্ষই আদালতে মামলা করেছে।
বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কালীগঙ্গা নদীর বেউথা মৌজায় ১৮৫ শতক জমি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত। গত বছরের ১০ জুলাই ওই জমির মালিকানা দাবি করে খাজনা পরিশোধের জন্য পৌর মেয়র রমজান আলী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট খাজনা নেওয়ার জন্য আদেশ দেন। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ স্থগিত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছে। এ উন্নয়নকাজে ব্যবহূত বিভিন্ন মালামাল ও সরঞ্জামাদি রাখার জন্য ওই জমির ওপর অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড। গতকাল সকালে অভিযান চালিয়ে এসব স্থাপনা ভেঙে দেয় জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নদী তীরবর্তী ওই জায়গা প্রতি শতক জমির মূল্য তিন থেকে চার লাখ টাকা। সেই হিসেবে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা মূল্যের সরকারি এ জমি পৌর মেয়র দখলের চেষ্টা করছেন।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, কালীগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে বিরোধপূর্ণ ১৮৫ শতক জমির প্রায় ১০০ শতাংশ জায়গাজুড়ে মাটি ভরাট করা হয়েছে। ভরাট করা বেশ কিছু অংশে ইট বিছানো হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম দুই প্রান্তে দুটি টিনের লম্বা ছাপরা ঘর ও অপর দুই প্রান্তের দুটি ঘর ভাঙা অবস্থায় রয়েছে।
পৌর মেয়র রমজান আলী দেশে বাইরে থাকায় এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর স্ত্রী আফরোজ রমজান দাবি করেন, ক্রয়সূত্রে এ জমির মালিক তাঁর স্বামী।
১৯৯৯ সালে বেউথা গ্রামের নজরুল ইসলাম, ইসলাম হোসেন, আবদুল মান্নান ও চুন্নু মিয়াসহ অপর এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৮৫ শতক জমি কেনেন।
মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম হোসেন বলেন, বিরোধপূর্ণ ওই জমিটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত। সরকারি ওই জমি কেউ ব্যক্তিমালিকানা দাবি করতে পারেন না। এ কারণে গতকাল ওই জমির ওপর অস্থায়ী স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
মাটি ভরাটের সময় বাধা দেওয়া হলো না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক মাসুদ করিম প্রথম আলোকে বলেন, নোটিশ দেওয়ার পরও মেয়র তা মানেননি।
তা ছাড়া সে সময় হাইকোর্টের রায় তাঁর (মেয়র) পক্ষে ছিল। পরে সুপ্রিম কোর্ট জেলা প্রশাসনের পক্ষে রায় দেওয়ায় ওই জমির ওপর স্থাপিত অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।