Shams
হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত ছোট্ট দেশ ভুটান। ভুটান শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘ভূ-উত্থান’ থেকে যার অর্থ ‘উঁচু ভূমি’। ভুটানের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে মাতৃভাষা ‘জংকা’য় দ্রুক ইয়ুল বা বজ্য ড্রাগনের দেশ নামে ডাকে। সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের দেশ ভুটানের রাজার উপাধি হল ড্রাগন রাজা। স্থলবেষ্টিত দেশ ভুটানের আকার, আকৃতি ও পার্বত্য ভূ-প্রকৃতি সুইজারল্যান্ডের সদৃশ বলে দেশটিকে অনেক সময় এশিয়ার সুইজারল্যান্ড বলে ডাকা হয়।
বহির্বিশ্ব থেকে বহুদিন বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে ভুটান প্রাণী ও উদ্ভিদের এক অভয়ারণ্য। এখানে হাজার দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। ৪৬,৫০০ বর্গকিলোমিটারের ভুটানের প্রায় ৭০ ভাগ এলাকা অরণ্যাবৃত। ভুটানের দর্শনীয় তিনটি অঞ্চল হল থিম্পু, পারো ও বুমথাং।
থিম্পু : ভুটানের সব থেকে আকর্ষণীয় এবং নান্দনিক সৌন্দর্যের অবস্থান হল থিম্পুতে। থিম্পু নদীর তীরে রাজধানী শহরের সিলভান ভ্যালিতে অবস্থিত এথনিক এই দেশের সংস্কৃতির মূল কেন্দ্র। এখানে আছে সিমতোখা জং। এটি ১৬২৭ সালে তৈরি থিম্পু ভ্যালির গেটওয়ে। এখানে আছে রিগনে স্কুল ফর জঙ্ঘা অ্যান্ড মোনাস্টিক স্টাডিজ।
এছাড়াও ফ্রেশকো এবং স্টেট কার্ভিংস এ অঞ্চলের বিশেষ আকর্ষণ। রয়েছে রাজধানী থিম্পুর প্রাণ থিম্পু জং। এটি তৈরি হয় ১৬৬১ সালে। দ্য ন্যাশনাল এসেম্বলি, রাজার থ্রোন রুম, সরকারি ডিপার্টমেন্ট এবং সেন্ট্রাল মোনাস্টিক বডির গ্রীষ্মকালীন হেডকোয়ার্টার্সের দেখা মিলবে এখানে। ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দরজি ওয়াঙ চুকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৭৪ সালে মেমোরিয়াল কর্টেন নামে এই স্তূপ তৈরি হয়েছিল।
এই কর্টেন মূলত একটি স্মৃতিস্তম্ভ। এর ভেতরে অনেক ধরনের পেইন্টিং এবং স্ট্যাচু রয়েছে, যা বৌদ্ধ দর্শনের প্রতিবিম্ব। থিম্পু পুনাখা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পুনাখা। এখান থেকে হিমালয়কেও দেখতে পারবেন আপনি। ভুটানের সব থেকে উর্বর ভ্যালি এই পুনাখা।
পুনাখা জং, ফো ছু এবং মো ছু নদীও দেখতে পাবেন পুনাখায়। থিম্পুতে আরও রয়েছে হ্যান্ডিক্রাফট এম্পোরিয়াম, ট্র্যাডিশনাল মেডিকেল ইন্সটিটিউট, পেন্টিং স্কুল এবং ন্যাশনাল লাইব্রেরি।
পারো : প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থাপনার সম্রাজ্য ভুটানের আরও অজস্র দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম হিমালয়ের কোলে অবস্থিত ছোট্ট শহর পারের কথা বলা আবশ্যক। বিশেষ করে বসন্তে পারের রূপ হয়ে উঠে এক কথায় অসাধারণ।
এখানে রয়েছে পারো জং, ন্যাশনাল মিউজিয়াম। এ অঞ্চলের সব থেকে বড় আকর্ষণ টাইগার্স নেস্ট।
বুমথাং : বুমথাংকে বলা হয় ভুটানের আধ্যাত্মিক হৃদয়ভূমি। কারণ, ভুটানের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জং মন্দির এবং মহল এই অঞ্চলে অবস্থিত। আরও দেখা যাবে, ওয়াংগডিচোলিং প্যালেস, জাম্বে লাখাং মন্দির, সব থেকে বড় ভুটানিজ মন্দির জাকার এবং হট স্প্রিং এরিয়া।
এই এলাকায় বন্টু শিপ, মাস্ক ডিয়ার, হিমালয়ান ভাল্লুক চোখে পড়তে পারে। সব বুমথাংয়ে একমাত্র জাকারেই ভালো রেস্তোরাঁ পাবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।