ভিক্ষাবৃত্তির কবিতা
ফিরিয়ে দেবার আগে, একবার ভিক্ষুকের চোখ দেখবে না?
একবার সত্যি সত্যি জানবে না, ভিক্ষার আড়ালে ভিক্ষুক
আসলে কি চায়? গোত্রের মানুষকে কখনো ভিক্ষুকের বন্ধু
হতে দেখিনি। ডাইনিং টেবিলে, তোমার মুখোমুখি
কোনোদিন কোনো ভিক্ষুককে বসিয়েছ? এমন কি
ফুটপাতের চায়ের দোকানে স্বচ্ছন্দের তোমার পাশে
কোনোদিন বসেছে ভিক্ষুক? তুমি বসেছ, তার পাশে?
প্রত্যেকটি ভিক্ষুকের চোখের মধ্যে লেখা আছে
ভিক্ষাবৃত্তির যথাযুক্ত কারণ : অবশ্যই বঞ্চিত-লাঞ্ছিত,
অপমানিত ইতিহাস এবং একথাও সত্য যে, ডোর-টূ-
ডোর প্রত্যাখান হতে হতে ভিক্ষুক একদিন বুঝতে
পারে– প্রত্যাখানই তার স্বাভাবিক পাওনা। তবু তাকে
ভিক্ষা করতে হয়, কারণ সে তো ফিরে পেতে চায়।
হারানোকে ফিরে চাওয়া, ফিরে পাওয়া হারানো মাত্রই
অধিকার হয়ে পড়ে। এই চাওয়া-পাওয়ার নামই
ভিক্ষাবৃত্তি।
হতে পারে এর অন্য নাম ভালোবাসা
নদীভাঙা মানুষেরা আসে। নদীতে বিলীন বাড়িঘর-জমি-
গরু-স্ত্রী-বাচ্চার সন্ধানে তারা শহরে চলে আসে। নদীহীন
মানুষও কি নদীভিক্ষা চায়নি কখনো, মেঘের দিকে
তাকিয়ে? একজন মুক্তিযোদ্ধার মা চিরকাল ভিক্ষা চান
তার হারানো ছেলেকে। ফলে, সেই মাকেও আজ ভিক্ষুক
বলতে হবে তোমাকে। অ সবসময় ভিক্ষা চাচ্ছে শ এর
মন... ফাঁসির আসামি ভিক্ষা চাচ্ছে জীবন।
দেখলাম তো,
প্রেমভিক্ষা চেয়ে কত মোমিন স্রেফ মজনু হয়ে গেল!
ভিক্ষুকদের বাড়িয়ে দেওয়া সকাতর হাত ট্রেনে বাসে
দোকানের সামনে, গোপনে-প্রকাশ্যে কে না দেখেছে,
বাংলা-বিহার উড়িষ্যায়, বলো?
প্রসঙ্গত, ভিক্ষা দাও বা না দাও, তোমাকে বলি, আমিও
একটা ভিক্ষুক। একদিন তোমার খুব কাছাকাছি চোখ
রেখে, তোমার বুকের ওপর আমার বুকটি রেখে, তোমার
নিঃশ্বাসের ওঠানামার ফাঁকে তাকিয়ে দেখেছি– আমার
হারানো কবিতাগুলো আছে এবং তাদের ফিরে পাওয়া
সম্ভব। দেখেছি, চোখের মধ্যে, তোমার বুকের মধ্যে,
নিঃশ্বাসের মধ্যে আমার হারানো কবিতাগুলো ভাঁজ করা
আছে, অপ্রকাশিত, পাঠকবঞ্চিত।
‘পাণ্ডুলিপি গুছিয়ে দিচ্ছি’– প্রকাশককে দেওয়া আমার এই
কথার কি হবে? হারানো কবিতা আমি কিভাবে ফিরে
পাব?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।