কর্মজীবী তরুণ বিশ্বজিৎ দাস হত্যার দায়ভার কাঁধে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ অথবা তাঁকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
আজ শুক্রবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বিশ্বজিৎ হত্যার বিষয়ে বিরোধী দলকে জড়ানো এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাওয়া সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকের পর আজ এ বিবৃতি দেওয়া হলো।
বিবৃতিতে বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয়, ‘বিরোধী দলের পূর্বঘোষিত নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি প্রতিরোধ করার জন্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তাঁর উসকানি পেয়েই শাসক দলের সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, চাপাতি, লোহার ডান্ডা নিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরাই রাজপথ অবরোধ চলাকালে বিশ্বজিত্ দাসকে পৈশাচিক কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে খুনিরা দলীয় স্লোগান দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর মিথ্যার বেসাতি করে বলেছে, সন্ত্রাসীরা ছাত্রলীগের কেউ নয়, বিরোধী দলের সঙ্গে যুক্ত। আমরা এই মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
’
ঘাতক সন্ত্রাসীদের আত্মীয়স্বজনের কেউ কেউ বিরোধী দলের সঙ্গে জড়িত—প্রেস সচিবের এ বক্তব্যের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক নিকটাত্মীয়-স্বজন আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনীর দোসরের ভূমিকা পালন করেছেন। সেই সম্পর্কের কারণে প্রধানমন্ত্রীকেও কি একইভাবে চিহ্নিত করা যায়? মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান আওয়ামী লীগের নেতা মির্জা আজমের ভগ্নিপতি হওয়ার কারণে তিনিও কি জঙ্গি হিসেবে শনাক্ত হবেন?’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায়ভার সরকার, শাসক দলের সন্ত্রাসী বাহিনী, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। অথচ কতটা নির্লজ্জ হলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিতে পারে!
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব খুবই অশোভন ও উদ্ধতভাবে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সম্পর্কেও অবাঞ্ছিত মন্তব্য করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি চাকরির শর্ত ও কর্ম-প্রকৃতি লঙ্ঘন করেছেন। খালেদা জিয়া জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে যে উক্তি করা হয়েছে, তা স্বাধীনতাযুদ্ধ ও মহান শহীদদের দলীয়করণের আরেকটি ব্যর্থ অপচেষ্টা এবং স্পষ্ট ফ্যাসিবাদী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপির চলমান আন্দোলন সরকারের ব্যর্থতা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে—এ দাবি করে বলা হয়, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে নয়। সে বিচার হতে হবে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে। কিন্তু ইতিমধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে, সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয়, প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলই তাদের মূল উদ্দেশ্য। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি। ’
বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আটক সব নেতা-কর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
নইলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা ছাড়া কোনো গত্যন্তর থাকবে না বলেও জানানো হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।