আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেনাপ্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।

একাকী হেটে চলেছি নিঃসঙ্গতার দিকে

১. বুধবার সকালে বিডিআর বিদ্রোহ সংগঠিত হল বিডিআর হেডকোয়ার্টার্স। ভিতর থেকে গুলির শ্ব্দ আর ধোয়া দেখে বাইরে থেকে মানুষ আন্দাজ করল ভিতরে অবস্থা খুবই খারাপ। নানা গুজব ছড়াতে লাগলো দিনভর। ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক রা ছুটে গেলেন নিউজ কভার করতে। ভিতরে কেউ ঢুকতে পারলো না , বাইরে থেকে ঘটনার বর্ননা দিতে লাগলো সব সাংবাদিক।

২. চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা নিয়ে সবাই টিভির সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়লো। অফিস আদালত ছুটি হয়ে গেল তাড়াতাড়ি। রাস্তায় গাড়ী কমে গেল, মানুষ জন বাসায় বসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে লাগলো। সরকারের ২ জন প্রতিনিধি আলাপের জন্য অনেক চেষ্টা করে ভিতরে প্রবেশ করলো সাদা পতাকা হাতে। সরকারের সাথে আলোচনায় বসলো বিডিআর জওয়ান রা।

টিভি ক্যামেরার সামনে বিডিআর জওয়ানরা মুখ খুললো। তাদের নানা দাবী দাওয়ার কথা (বিস্তারিত ভাবে বলেনি তা), অপারেশন ডাল ভাত এর দূর্নীতি, তাদের বঞ্চনার কথা বলে , তাদের উপর প্রথম আক্রমন করা হয়েছে বলে মানুষের সহানুভুতি আদায় করলো। কিন্তু ভিতরে আসলে কতজন মারা গেছে , কী হয়েছে বিষয় টা ধোয়াশা রয়ে গেল। আমরা জানতে পারলাম না পুরো ঘটনা। ৩. সরকারের সাথে আলাপের পরও তারা অস্ত্র ত্যাগ করেনি, সারা রাত ধরে সরকারের সাথে আলাপ আলোচনা চালাতে লাগলো, তখন মোয়ামুটি পরিষ্কার যে তারা আলোচনার নামে সময় ক্ষেপন করছে।

তারা ঐ সময়ে পালানোর পথ খুঁজে নিতেই সময় নিয়েছে সারারাত ধরে। সরকার আর কোন হত্যা বা শক্তি দেখাতে চাইছিল না বলেই সরকার ও তাদের সেই সময় ক্ষপনের ফাঁদে পা দিয়ে তাদের কে পালানোর সুজোগ করে দিল। তারা কেমন করে বা পালালো , চারদিকে আর্মি পুলিশ র‌্যাব গোয়েন্দারা থাকতে ? তখনও কী গোয়েন্দারা বসে ঘোড়ার ঘাস কাটছিল ? নাকি তাদের কে পালিয়ে যাবার সুজোগ করে দেয়া হয়েছিল? ৪. পরদিন যখন আস্তে আস্তে এক এক করে বেঁচে যাওয়া আর্মি অফিসার বের হয়ে আসতে লাগলো তখন পুরো ঘটনা আমাদের সামনে পরিষ্কার হতে লাগলো। এটা কোন বিদ্রোহ ছিল না। পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

এটা অনেক দিনের পরিকল্পনার ফসল। এই ঘটনায় অবশ্যই এবং অবশ্যই তৃতিয় শক্তির ইন্ধন আছে। তারা সঠিক ভাবেই অগ্রসর হতে পেরেছে। কেননা , দেখা গেছে সবার মুখে মোটামুটি কমলা কাপড় দিয়ে বাধা, পরিকল্পিত না হলে এই কাপড় জোগাড় করা সম্ভব না। নানক সাহেব তখন বের হয়ে আমাদের কে লাখ কোটি টাকা খরচের কথা শোনালেন।

এখন আর সবার মত আমারও প্রশ্ন , সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ কী করছিল ? আর কীই বা করছিল সামরিক গোয়েন্দা বিভাগ ? এত গুলো সামরিক অফিসারের জীবন কে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন , অথচ আপনাদের নাকের ডগায় বসে তারা পরিকল্পনা করেছে , আর আপনারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন তখন ? বিডিআর কোন বিচ্ছিন্ন সংগঠন নয় যে আপনারা সেখানে কী ঘটছিল তাতে চোখ রাখতে পারেন নাই। সরকারের অধীনে একটি বিভাগ , আর সেখানেই চক্রান্ত, পরিকল্পনা হয়েছে , গোয়েন্দারা কিছুই জানতে পারেন নাই। এতগুলো সামরিক অফিসারের মৃত্যুর জন্য যেমন দায়ী জেনারেল মইন ইউ আহমেদ তেমনি দায়ী স্বরাষ্ট্টমন্ত্রী। কেননা , বিডিআর সামরিক অফিসার দ্বারা পরিচালিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের অধীনে একটি আধা সামরিক বাহীনি । আপনাদের দায়িত্বহীনতার জন্য , গোয়েন্দা ব্যার্থতার জন্য এত বড় ঘটনা ঘটলো, দেশের সীমান্ত ২ দিন অরক্ষিত ছিল।

এতগুলো সেনা অফিসারের মৃত্যু ঘটেছে। দেশের সম্পদ পুড়িয়ে জ্বালিয়ে, অযথা ফাঁকা গুলি করে , গ্রেনেড বিষ্ফোরন করে দেশের যে ক্ষতি করলো বিডিআর জওয়ান রা তার দায়িত্ব আপনাদের কেই নিতে হবে। এই বাহীনির প্রতিটি গুলি, অস্ত্র, বারুদ, গ্রেনেড সব আমাদের টাকায় কেনা। দায়িত্বপালন করতে গিয়ে এত গুলো সেনা অফিসার নিহত হল খোদ দেশের রাজধানিতে, তাও বিডিআর এর হেড কোয়ার্টার এ । এরকম ঘটনা যদি ক্যান্টনমেন্টে ঘটতো ? তারচেয়ে বড় কথা যদি প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ঘটনা ঘটতো , অবস্থা কী হতো, ভেবে দেখেছেন কী ? দেশের এই অপূরনীয় ক্ষতি স্বীকার করে তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সেনা প্রধানের পদত্যাগ দাবী করছি।

সেই সাথে সকল গোয়েন্দা বিভাগ এর প্রধান কে সরিয়ে নতুন করে গোয়েন্দা বিভাগ কে ঢেলে সাজানো হোক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.