আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একাত্তরের মতিউর রহমান নিজামী এবং তার আলবদর বাহিনীর অপকর্ম ট্রাইবুনালের বিচারপতির পদত্যাগে যা মিথ্যা হয়ে যাবে না

একটা মেয়ের একটু কথা। মতিউর রহমান নিজামী। একাত্তরের কুখ্যাত মইত্যা রাজাকার এবং বর্তমানে জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর। যিনি ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আল বদর বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন। মতিউর রহমান নিজামী ওরফে মইত্যা রাজাকার ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতি শুরু করে।

১৯৬১ সালে পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘ এর সাথে যুক্ত হয়। যা বর্তমানে ইসলামি ছাত্র শিবির নামে পরিচিত। টানা তিন বছর সে পুর্ব পাকিস্তান ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ছিল। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সে জামাতে ইসলামির ঢাকা মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ১৯৮৮ সালে ডিসেম্বরে সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২০০০ সালে আমীর নির্বাচিত হয়।

অতঃপর ২৯ জুন, ২০১০ তারিখে রমনা থানা পুলিশ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে চিহ্নিত এবং কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী ওরফে মইত্যা রাজাকারকে গ্রেপ্তার করে আমি জানি আপনারা সবাই মইত্যা রাজাকার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন। কিন্তু আমি লেখার আগ্রহ সামলাতে পারলাম না দুটি কারণে। এক, বর্তমানে যেভাবে যুদ্ধাপরাধের ট্রাইবুনাল নিয়ে জল ঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে এবং যেভাবে বিএনপি এবং জামাত কথা বলছে তা শুনে মনে হতে পারে যেন চিহ্নিত এই যুদ্ধাপরাধীরা নিরপরাধ। এবং আরেকটি হলো, ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবি হত্যা। যার প্রসঙ্গ আসলে অবধারিত ভাবে নিজামী ওরফে মইত্যা রাজাকারের নাম অবশ্যই আসবে।

আসুন দেখি একাত্তরে মইত্যা রাজাকার এবং তার অপকর্মগুলো। একাত্তরের মইত্যা রাজাকার: সে একাত্তরে আলবদর বাহিনী গঠন করে। আল বদর একটি ছিল আধা সামরিক বাহিনী। পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাকান্ডে আল বদর বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল এবং ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডের পেছনে তারা প্রধান ভুমিকা পালন করে। আল বদর বাহিনী মূলত তৈরী করা হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা কামী বৃদ্ধিজীবিদের হত্যা করার জন্যে।

বাংলাদেশকে মেধাশুণ্য করার জন্যে। ২২ শে এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে গঠিত হয় কুখ্যাত আল বদর বাহিনী। গঠনের পর ২৩ শে এপ্রিল দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় নিজামী বিবৃতি দিয়েছিল যে, ‘আল বদর একটি নাম একটি বিস্ময়। আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী সেখানেই আলবদর। যেখানে দুস্কৃতিকারি সেখানেই আলবদর।

ভারতীয় চরদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল। ’ প্রিয় পাঠক দেখেন আলবদর বাহিনীর সাথে বর্তমানের নিও রাজাকার শিবিরের আদর্শের কতো মিল। তারা ও সেই ভারত বিরোধীতার ধুয়া তোলে এখনও। বিস্ময়ের কথা তা বাজারে পানি এখনও পায়! আলবদর বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিল মতিউর রহমান নিজামী। সে আলবদর বাহিনীর নেতা হিসেবে সংখ্যালুঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের ডাক দেয়।

১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে জামাতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধে নিজামী বলে "It is our conviction that the day is not far off when, standing side by side with our armed forces, our youth will raise the victorious flag of Islam the world over by defeating the Hindu Army and finishing off Hindustan". (নিচের অংশে প্রবন্ধটি সংক্ষেপে দেওয়া আছে। ) নিজামী নেতৃত্বে আল বদর বাহিনী ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে সারা দেশে শত শত চিকিৎসক, শিক্ষক, লেখক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, গীতিকার, গায়ক এবং আরো অনেক বুদ্ধিজীবিদের লিস্ট করে ধরে নিয়ে যায় এবং নির্মম ভাবে হত্যা করে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল এবং যৃদ্ধাপরাধী সম্পর্কে জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্টে এক নজর বুলানো যাক। ঐ রিপোর্টে আছে- ১৯৭১ সালে এই জামাত নেতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে তার যাবতীয় কর্মতৎপরতা পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন।

তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিহত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করার জন্য আলবদর বাহিনী গঠন করা হয়। মতিউর রহমান নিজামী এই আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন। নিজামীর এই বদর বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্ত্মানি সেনাবাহিনীতে সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধরত বাঙালি জনগোষ্ঠীকে পাকিস্তানি তথ্য ইসলামী জীবন দর্শনে বিশ্বাসী জনগোষ্ঠীকে রূপান্তরিত করা। আলবদরের নেতারা বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করেন এবং তাদের নির্দেশে ডিসেম্বর মাসে ঢাকাসহ সারা দেশে শত শত বরেণ্য বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়। নিজামীর নেতৃত্বে পরিচালিত আলবদর বাহিনীর হাতে বুদ্ধিজীবী হত্যার ভয়াবহ বিবরণ দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

আসুন ধারাবাহিক ভাবে দেখি পত্র পত্রিকা গুলোয় প্রকাশিত নিজামীর জামাতী বয়ানের সারসংক্ষেপ : এপ্রিল, ১৯৭১ # ঢাকায় নাগরিক শান্তি কমিটি গঠিত – দৈনিক পাকিস্তান- এপ্রিল ১১, ১৯৭১ # মিছিলে নেতৃত্ব দেন গোলাম আযম ও নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম -এপ্রিল ১৩, ১৯৭১ # পাকিস্তান রক্ষার জন্য গোলাম আযমের মোনাজাত – দৈনিক সংগ্রাম -এপ্রিল ১৩, ১৯৭১ # ‘যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী আলবদর সেখানেই’ এই স্লোগান নিয়ে কুখ্যাত বদর বাহিনী গঠিত হয় ২২ এপ্রিল, ১৯৭১ -দৈনিক পাকিস্তান, পূর্বদেশ -এপ্রিল ২২/২৩, ১৯৭১ # সশস্ত্র বাহিনীকে সাহায্যে করার আহ্বান – আহ্বায়ক শান্তি কমিটি- দৈনিক পাকিস্তান -এপ্রিল ২৩, ১৯৭১ মে, ১৯৭১ # শান্তি কমিটির আবেদন -পাকিস্তানের শত্রুদের ধরিয়ে দেয়ার জন্যে সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করুন – দৈনিক আজাদ/পূর্বদেশ মে, ১৯৭১ জুন, ১৯৭১ # শান্তি কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য- দুস্কৃতিকারী গেরিলাদের গেরিলা স্টাইলে নির্মুল করা; ভারত ফেরত হিন্দুরা কড়া পাকিস্তান ভক্ত -সম্পাদকীয় – দৈনিক সংগ্রাম ১৩/১৪ জুন, ১৯৭১ # লাহোরে সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক(!) গোলাম আজম: “শেখ মুজিব প্রকাশ্যে কখনও স্বাধীনতার জন্যে চিৎকার করেন নি বরং মওলানা ভাষানীই বিচ্ছিন্নতাবাদের দাবী তোলেন। পূর্ব পাকিস্তানের অখন্ডতা বজায় রাখতে সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া উপায় ছিল না। ” - দৈনিক সংগ্রাম -২৯শে জুন, ১৯৭১ আগস্ট ১৯৭১ # পাক সেনারা আমাদের ভাই, তারা জেহাদী চেতনায় উজ্জীবিত – মতিউর রহমান নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম ৩রা আগস্ট, ১৯৭১ # পাকিস্তান টিকলেই এদেশের মুসলমানরা টিকবে, দুনিয়ার কোন শক্তিই পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। গ্রামে গন্জের প্রতিটি এলাকা থেকে শত্রুর চিন্হ মুছে ফেলার আহ্বান – মতিউর রহমান নিজামী -দৈনিক সংগ্রাম ৫ই আগস্ট, ১৯৭১ # পাকিস্তান অখন্ডতা ও সংহতি সংরক্ষণ এ্যাকশন কমিটি গঠন – দৈনিক সংগ্রাম ৯ই আগস্ট, ১৯৭১ তাদের এজেন্ডা: ১/ উর্দু একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, বাংলা সাইনবোর্ড ইত্যাদি অপসারন, রোমান হরফে বাংলা লেখার আহ্বান। ২/ কাফের কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচনা বর্জন।

৩/ পূর্ব পাকিস্তানের রেডিও টিভিতে শতকরা ৫০% অনুষ্ঠান উর্দুতে হবে। ৪/ জাতীয় স্বার্থে উচ্চপদ থেকে বাঙালী অফিসারদের অপসারন করতে হবে। ৫/ রাজাকার বাহিণীর বেতন এবং শান্তি কমিটির ব্যয় নির্বাহের জন্যে হিন্দু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। ৬/ তিনমাসের জন্যে বিদেশী সাংবাদিকদের বহিস্কার করতে হবে। # দুস্কৃতকারীদের এর পরিণাম ফল ভোগ করতে হবে – মতিউর রহমান নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম ১২ই আগস্ট, ১৯৭১ # পাকিস্তান ভূখন্ডের নাম নয় একটি আদর্শের নাম – মতিউর রহমান নিজামী – দৈনিক সংগ্রাম ১৬ই আগস্ট, ১৯৭১ # আনসার অর্ডিন্যান্স বিলুপ্ত করে রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারিদৈনিক ইত্তেফাক, ২২শে আগস্ট, ১৯৭১ # পাকিস্তানকে যারা বিচ্ছিন্ন করতে চায়- তারা ইসলামকেই উৎখাত করতে চায় –মতিউর রহমান নিজামী সেপ্টেম্বর ১৯৭১ # বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষনার দাবী – গোলাম আযম দেনিক পাকিস্তান, ২রা সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ এছাড়া ২রা সেপ্টেম্বর আরো খবর ছিল: # রেজাকার ও বদর বাহিনীর মরনাঘাত # পাক সেনানায়করা রেজাকারদের কৃতিত্ব আনন্দিত ও গর্বিত # পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে না পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দিবসে গোলাম আজম ও মতিউর রহমান নিজামী # ছাত্রসংঘ কর্মীরা পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জায়গা রক্ষা করবে – মতিউর রহমান নিজামী # যশোহরে ছাত্রনেতা মতিউর রহমান নিজামীর মন্তব্য : পাতা ১, পাতা ২ – দৈনিক সংগ্রাম – ১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ # আল্লাহ তাদের লাঞ্জিত করেছেন- মতিউর রহমান নিজামী : পাতা ১, পাতা ২ # যশোহরের রাজাকার সদর দফতরে মতিউর রহামন নিজামী : পাতা ১, পাতা ২ # সংবর্ধনা সভায় গোলাম আযমের ভাষণ – দৈনিক সংগ্রাম ২৬শে সেপ্টেম্বর, এবং আব্বাস আলী খান ও মতিউর রহমান নিজামীর বক্তব্য।

নভেম্বর ১৯৭১ # রেজাকারদের হাতে ৪ ভারতীয় চর খতম- দৈনিক সংগ্রাম, ৫ নভেম্বর, ১৯৭১ # প্রেসিডেন্ট সকাশে নূরুল আমীন : রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের আরো অস্ত্র দেয়ার সুপারিশ পাতা ১, পাতা ২ # আল বদর বাহিনীর অভিযান: ৪০ মুক্তিযোদ্ধা গ্রেফতার- দৈনিক সংগ্রাম ১১ নবেম্বর, ১৯৭১ (দেখেন কি ভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। ) # বদর দিবসে বায়তুল মোকাররমে জনসভা: ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ মোকাবেলার আহ্বান # বদর দিবসের ডাক-দৈনিক সংগ্রাম ১২ নভেম্বর, ১৯৭১ # বিভিন্ন স্খানে বদর দিবস পালিত -দৈনিক সংগ্রাম ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১ # ৯৩ জন বাঙালী সিএসপি, ৪২ জন ইপিসিএস, এবং ৪ জন অধ্যাপকের ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত # পাক সেনাবাহিনীর সহায়তায় বদর বাহিনী গঠিত হয়েছে – নিজামী # বদরবাহিনী হিন্দুস্তানকে খতম করবে -নিজামী # রাজাকারদের জাতীয় বীর বলা উচিৎ- নিজামী # পাকিস্তান আল্লাহর ঘর – মতিউর রহমান নিজামী ডিসেম্বর ১৯৭১ দৈনিক সংগ্রাম ডিসেম্বর, # আল বদর আল শামস বাহিনীর সংখ্যা এক লাখেরও বেশী – ইউসুফ গোলাম আজম, রাও ফরমান ও মালেক বুদ্ধিজীবি হত্যার নীল নক্সায় ব্যস্ত # বুদ্ধিজীবি ও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আব্বাস আলী খান বলেন এদের নির্মূল করার ব্যপারে শান্তি বাহিনী ও সেনা বাহিনীকে সহায়তা করুন (বুদ্ধিজীবিদের কথা বলা হচ্ছে। ) এই ছিল মইত্যা রাজাকারের একাত্তরের কর্মকান্ড যা তাদের মুখপত্র গুলোতে প্রকাশিত হয়েছিল। দৈনিক সংগ্রামে ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে প্রকাশিত নিজামীর প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ দেখুন। "বদর দিবস : পাকিস্তান ও আল-বদর" “বিগত দু'বছর থেকে পাকিস্তানের একটি তরুণ কাফেলার ইসলামী পুনর্জাগরন আন্দোলনের ছাত্র প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘ এই ঐতিহাসিক বদর দিবস পালনের সূচনা .................হিন্দু বাহিনীর সংখ্যা শক্তি আমাদের তুলনায় পাঁচ গুন বেশি।

..........দুর্ভাগ্যবশত পাকিস্তানের কিছু মুনাফিক তাদের পক্ষ অবলম্বন করে ভেতর থেকে আমাদের দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে............শুধু পাকিস্তান রক্ষার আত্মরক্ষামূলক প্রচেষ্টা চালিয়েই এ পাকিস্তান কে রক্ষা করা যাবে না । বদরের যুদ্ধ থেকে অনেক কিছুই আমাদের শিখবার আছে.......... আজকের কাফেরদের পর্যুদস্ত করতে হলে আমাদেরও ............ আমাদের পরম সৌভাগ্যই বলতে হবে, পাকসেনার সহযোগিতায় এদেশের ইসলাম প্রিয় তরুণ ছাত্র সমাজ বদর যুদ্ধের স্মৃতিকে সামনে রেখে আল-বদর বাহিনী গঠন করেছে ............বদর যোদ্ধাদের সেই সব গুণাবলির কথা আমরা আলোচনা করেছি, আল বদরের তরুণ মর্দে মুজাহিদ দের মধ্যে ইনশাল্লাহ সেই সব গুণাবলী আমরা দেখতে পাব............আমাদের বিশ্বাস সেদিন যুবকেরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি দাড়িয়ে হিন্দু বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে হিন্দুস্তানকে খতম করে সারা বিশ্বে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করবে। আর সেদিনই পূরণ হবে বিশ্ব মুসলমানের অন্তরের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা। ” এই তো গেল তার বদর বাহিনীর ইতিহাস এবার আসুন দেখি তার অপকর্মগুলো। যেগুলো বিভিন্ন প্রতক্ষ্যদর্শীরা বর্ণনা করেছেন।

তার আগে দেখে নিন তাদের এদেশীয় মুখপত্রগুলোর অপপ্রচার-‘দেশে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কখনো ছিল না, এখনো নেই। অতীতকে বিকৃত করে পেশ করা ঠিক নয়। ৭১ সালকে কেন্দ্র করে তারা যা বলছে তা কল্পনাপ্রসূত, উদ্ভট, বানোয়াট, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। ’২৬-১০-২০০৭, দৈনিক সমকাল আসুন এবার দেখি প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা। গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্ট- (সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ ৩রা এপ্রিল ২০১০) পাবনা জেলার বেড়া থানার বৃশালিকা গ্রামের আমিনুল ইসলাম ডাবলু গণতন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন, তার পিতা মোহাম্মদ সোহরাব আলীকে একাত্তরে নিজামীর নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান যে, নিজামীর নির্দেশেই তাদের এলাকার প্রফুল্ল (পিতা-নয়ন প্রামাণিক), ভাদু (পিতা- ক্ষিতীশ প্রামাণিক), মনু (পিতা- ফেলু প্রামাণিক) এবং ষষ্ঠী প্রামাণিককে (পিতা-প্রফুল্ল প্রামাণিক) গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষ সাক্ষীও রয়েছে বলে তিনি জানান। ১৯৭১-এ সাত নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কুদ্দুসকে (পিতা-মৃত ডা. সৈয়দ আলী শেখ, সাং-মাধবপুর, পোঃ শোলাবাড়িয়া, থানা-পাবনা) আলবদররা ধরে নিয়ে প্রায় দু'সপ্তাহ আলবদর ক্যাম্পে রাখা হয়। ক্যাম্পে অবস্থানের সময় তিনি সেখানে আলবদর কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, অগি্নসংযোগ, ধর্ষণ ইত্যাদির পরিকল্পনা প্রত্যক্ষ করেন। এ পরিকল্পনায় মতিউর রহমান নিজামী নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে তিনি জানান।

২৬ নভেম্বর সাত্তার রাজাকারের সহযোগিতায় ধুলাউড়ি গ্রামে পাকিস্তানী সৈন্যরা ৩০ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। মতিউর রহমান নিজামীর পরিকল্পনা ও নির্দেশ অনুযায়ী সাত্তার রাজাকার তার কার্যক্রম পরিকল্পনা করত বলে তিনি জানিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুস আলবদর বাহিনীর একটি সমাবেশ এবং গোপন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন। বৈঠকে মতিউর রহমান নিজামীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিহত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সমূলে ধ্বংস করার নির্দেশ দেন বলে কুদ্দুস জানান।

বৈঠকে কোথায় কোথায় মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের বাড়ি আছে, তা চিহ্নিত করা হয় (নীল নকশা করা হচ্ছে)। তিনি জানান, নিজামী বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, ঘাঁটি ধ্বংস এবং আওয়ামী লীগারদের শেষ করার নির্দেশ দেন। বৈঠকের পরের দিন রাজাকার বাহিনীর সহযোগিতায় হানাদাররা বৃশালিকা গ্রাম ঘিরে ফেলে গোলাগুলি চালায়, নির্যাতন করে, লুটতরাজ করে এবং বাড়িঘর আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তিনি আরও জানান, নিজামী তার গ্রামের ঝুটি সাহার ছেলে বটেশ্বর সাহা নামে এক তরুণ মুক্তিযোদ্ধাকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেন। নিজামীর বিরুদ্ধে প্রায় অনুরূপ অভিযোগ এনেছেন সাঁথিয়া থানার মিয়াপুর গ্রামের মোহাম্মদ শাহাজাহান আলী (পিতা-জামালউদ্দিন) যুদ্ধের সময় রাজাকারদের হাতে আটক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তার গলায়ও ছুরি চালানো হয়েছিল।

অন্যদের জবাই করলেও শাহজাহান আলী ঘটনাচক্রে বেঁচে যান। গলায় কাটা দাগ নিয়ে তিনি এখন পঙ্গু জীবনযাপন করছেন। তার সহযোদ্ধা দারা, চাঁদ, মুসলেম, আখতার, শাহজাহান- এদের বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে গরু জবাই করার লম্বা ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়। সেদিন প্রায় ১০/১২ মুক্তিযোদ্ধাকে জবাই করেছিল 'জানোয়ার' নিজামী। মুক্তিযোদ্ধা কবিরের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

এই হত্যাকান্ডের নীলনকশা মতিউর রহমান নিজামীর বলে শাহজাহান আলী জানিয়েছেন। একাত্তরে নিজামীর দুষ্কর্মের বর্ণনা দিতে গিয়ে আব্দুল লতিফ বলেন, নিজামী আলবদর ও পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যৌথভাবে তাদের গ্রাম বিশালিখা ঘিরে ফেলে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। সেই রাতে হামলাকারী আলবদর ও পাকিস্তানী হানাদাররা তার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধরে নিয়ে যায় এবং নির্যাতানের পর গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার আগে একই বছরের ১৩ আগস্ট আলবদররা বেড়া বাজার থেকে আব্দুল লতিফকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। সৌভাগ্যবশত তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন এবং এখন নিজামীর হত্যা- নির্যাতনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে আছেন।

ডিসেম্বর ২০০০ তারিখে জামায়াতের আমির হিসেবে নিজামীর শপথ গ্রহণের দিন ঢাকায়, কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গণসমাবেশে মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পাবনা থেকে এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ। একাত্তরে নিজামীর হাতে নির্যাতিত নিজামীর-ই নির্বাচনী এলাকা পাবনা জেলার বেড়া থানার বিশালিকা গ্রামের অধিবাসী আবদুল লতিফ সেদিন সমবেত সমাবেশে বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাবনায় যিনি মইত্যা রাজাকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনিই জামায়াতে ইসলামীর নতুন আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। তিনি একাত্তরে নিজামীর দুষ্কর্ম বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ রাতে নিজামী এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ এবং বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ করে। সেই আক্রমণে বেশ কয়েকজন নিহত হয়। . . . সেই রাতে হামলাকারী আল বদর ও পাকিস্তান হানাদাররা তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ধরে নিয়ে যায় এবং নির্যাতনের পর তাকে গুলি করে হত্যা কর।

এর আগে ১৩ আগষ্ট আবদুল লতিফকে আল বদর বাহিনীর বেড়া বাজার থেকে ধরে নগরবাড়ি পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। ষেকানে পাকিস্তানী বাহিনীদের পাশাপাশি মতিউর রহমান নিজামীও তাঁর ওপর নির্যাতন চালায় ( ভোরের কাগজ, ৮ ডিসেম্বর ২০০০)। মইত্যা রাজাকার যখন শিল্প মন্ত্রী ছিল খালেদা জিয়ার আমলে তখনকার একটি ঘটনা না বললেই নয়: বিশালিখায় যেখানে সে একাত্তরে পাকিস্তানী বাহিনীদের সাথে গণহত্যায় যোগ দিয়ে বধ্যভুমি সৃষ্টি করেছিল সেখানেই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করতে সে যায় ২০০৬ সালে। নিজামীর আগমন বার্তা পেয়েই স্বজন হারানো মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। গর্জে উঠে গ্রামবাসী।

‘তারা মইত্যা রাজাকার নিজামীকে গ্রামে ঢুকতে না দেয়ার ব্যাপারে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আগমনের আগের রাতেই ঘাতক নিজামীর নামফলক ভিত্তিপ্রস্তর স্তম্ভটি গুড়িয়ে দেয়। গ্রামের সকল রাস্তাঘাট, হাটবাজারসহ বাড়ি বাড়ি কয়েকশ’ কালো পতাকা উড়িয়ে দেয়। গ্রামে প্রবেশের মুখে গাছের গুড়ি ফেলে বেরিকেড সৃষ্টি করে। পরের দিন শনিবার দুপুরে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের নির্দিষ্ট সময়ের আগে গ্রামবাসী বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে অনুষ্ঠান স্থানসহ গোটা গ্রাম প্রদক্ষিণ করে।

এ সময়ে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিজামী ওরফে মইত্যা রাজাকার খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামলাতে নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে সটকে পড়ে’। একাত্তরে এ গ্রামের মানুষের উপর অত্যাচার-নির্যাতন মাওলানা মতিউর রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে বলে গ্রামবাসী মনে করে। তারা বিশ্বাস করেন, নিজামী এ গ্রামে ঢুকলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে। তাই শহীদদের পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধারাসহ গ্রামের সর্বস্তরের লোকজন নিজামীকে গ্রামে ঢুকতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শিল্পমন্ত্রী(!) নিজামীর কথায় টিএনও ডিসি পুলিশ অফিসার উঠ-বস করত।

কিন্তু সেদিন রাজাকার নিজামীকে কেউ রক্ষা করতে পারেনি। পাড়াগায়ের স্বজন হারানো প্রতিবাদি জনতার বাধার মুখে ২০০৬ সালে নিজামীর লেজ গুটিয়ে পলায়নের দৃশ্য আবার প্রমাণ করে ভোল পাল্টালেও আসলেই সে ‘মইত্যা রাজাকার’। সেদিন বিশালিখার জনতা আমাদের শিখিয়েছিল কিভাবে প্রতিকুলতার মাঝেও রাজাকারদের প্রতিহত করতে হয়। তাদেরকে আমার স্যালুট জানাই। তাদের স্পিরিট ছড়িয়ে পড়েছে আজ দেশের প্রতিটি কোনে।

১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবি হত্যা তার নেতৃত্বে আলবদর বাহিনীর প্রতক্ষ মদদে হয়েছে। বুদ্ধিজীবী হত্যার পর ১৯৭১ সালে মাওলানা নিজামী, মাওলানা সুবহান ও মাওলানা ইসহাকসহ পাকিস্তান হয়ে সউদী আরব পালিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালাতে থাকে। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের পর মাওলানা নিজামী পাকিস্তান হয়ে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ যোগে ঢাকায় আসে এবং মগবাজারে একটি ভাড়া বাসায় উঠে। এবং সেই ভাড়া বাড়ি থেকে তারা জাতীয় সংসদে যায়।

এমনকি মন্তীপরিষদেও। আর তার এই পুরো যাত্রায় তাকে এবং সকল যুদ্ধাপরাধীদের সহায়তা দানকারী হলো জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং তার সুযোগ্য পত্নী খালেদা জিয়া এবং পুত্র তারেক রহমান। জিয়াউর রহমান পলিটিক্স ডিফিকাল্ট করার চক্করে তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন রাজনীতিতে তার ধারাবাহিকতায় তার স্ত্রী এবং পুত্রের কল্যানে এই রাজাকারের গাড়িতে বাংলাদেশের পবিত্র পতাকা সংযোজন হয়েছিল। তাদেরকে রাজনীতিতে আনতে জিয়াউর রহমান ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন( বিশেষ অধ্যাদেশ ৪মে, ১৯৭৬ এবং বালাদেশ সংবিধানের ৫ম সংশোধনী, ২২শে এপ্রিল ১৯৭৭)। তারপর শুরু হয় স্বাধীনতাপুর্ব জামাতের রাজনীতি শুরু হয়।

৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ সালে ঢাকায় সমবেত হয়ে তারা পুনরায় তাদের যাত্রা শুরু করে। শুরু হয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায়। তা নিয়ে পরবর্তীতে লেখার ইচ্ছা আছে। এবার আসা যাক বুদ্ধিজীবি হত্যা প্রসঙ্গে। বুদ্ধিজীবি হত্যার পরিকল্পনায় পাক বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার কাশেম এবং ক্যাপ্টেন কাইয়ুম ছিল প্রধান।

নভেম্বর মাসের কোন এক সময় তারা মওলানা আব্দুল মান্নানের বাসায় বৈঠক করে। এই আলোচনাতেই বুদ্ধিজীবি হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন করা হয় বলে ধারণা করা হয়। শহীদদের তালিকা কমেন্টে দেয়া হলো। এছাড়াও এখানে দেখতে পারেন। এছাড়াও এখানে দেখতে পারেন।

তাদের টার্গেট ছিল হিন্দু, বাংগালি সংস্কৃতিমনা বুদ্ধিজীবি, সমাজের উচ্চশিক্ষিত অংশ, তরুণ সমাজ, ঢাকা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গণ, মুক্তমনা এবং ছাত্রগণ। আলবদর বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে পাকবাহিনীরা তাদের ধরে ধরে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। তখন আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিল মতিউর রহমান নিজামী এবং তার সহকারী আরেক চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। আলবদর বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় যে ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড ঘটেছে তা প্রমানিত সত্য। এটি অস্বীকারের কোন সুযোগ নেই।

মতিউর রহমান নিজামীও সেফ হোমে জিজ্ঞাসাবাদে তা স্বীকার করেছে। (সুত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ ৫ মে, ২০১১) নিজামী স্বীকার করেছে যে স্বাধীনতা কামীদের হত্যার উদ্দেশ্যেই আলবদর বাহিনীর সৃস্টি করা হয়েছিল। এবং সে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ভয়ে জীবন বাঁচানোর জন্যে তাদের সহায়তা করে। এখন কথা হলো যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যে গঠিত ট্রাইবুনাল ১ এর বিচারপতির পদত্যাগের কারণে কি এই সুস্পষ্ট প্রমান গুলো মিথ্যা হয়ে গেছে? না কখনই না। আদালত তার বিচার প্রকৃয়া শেষে রায় দিবেন।

জনগণ অপেক্ষা করে আছে। কিন্তু জনগণ তো তাদের কর্মকান্ডের জন্য রায় আগেই নির্ধারন করে রেখেছে। ১৯৯২ সালের ২৬শে মার্চে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত জনতার আদালতে। যারা যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল ১ এর বিচারপতির পদত্যাগের খবরে বিভ্রান্ত হয়েছেন বা যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তাদেরকে বলছি- একাত্তরে আলবদর বাহিনীর বুদ্ধিজীবি হত্যা থেকে শুরু করে জামাতের অপকর্মগুলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল যা ট্রাইবুনালের বিচার পতির পদত্যাগের কারণে মিথ্যা হয়ে যাবে না।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।