আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন,২০১২- একটি দূর্বল, ও গোজামিলে ভরা নতুন আইন।

অবস্থান গত কারনেই বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত দূর্যোগপ্রবন দেশ। প্রাকৃতিক সম্পদের উপর অধিক নির্ভরশীলতা, ক্রান্তীয় জল বায়ু, দূর্বল ভূমি ব্যবস্থাপনা, জবাবদিহিতাহীন আমলাতন্ত্র, প্রবল অর্থনৈতিক ও সামাজিক বঞনা –বৈষম্য, ৪ দশকেও এ সংক্রান্ত কোন আইন তৈ্রি না করা সহ দূর্যোগ মোকাবিলায় উপযুক্ত রাস্ত্রীয় অবকাঠামোর অনুপস্থিতির কারনে দূর্যোগ থেকে বিপর্যয় শুধুই এখন মানবিক বিপর্যয়ে রুপ নিচেছ। বিগত কয়েক বছর ধরে জার্মানওয়াচ নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠণ জলবায়ু ঝুকির সূচক প্রকাশ করে আসছে। সূচকে ২০০৭, ২০০৮, ও ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সর্বাধিক ঝুকিপূর্ণ দেশ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে । ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘুর্ণীঝড়ের পরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন তৈরীর উদ্যে্গ নেওয়া হলেও পরে তা আর আলো্র মূখ দেখেনি।

রাজনৈতিক সদিচছার অভাবে সরকারকে আমরা এ বিষয়ে তেমন আগ্রহী হতে দেখিনি। ভালমন্দ অনেক কাজের ভিতর তত্তাবধায়ক সরকার সর্বপ্রথম ২০০৮ সালে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের খসড়া তৈরী করে । বিগত ২০০৯ সালের আইলায় ১১ টি জেলার ৬৪ টি উপজেলার ১৭৪২ কিমি বাধ,২২৩৩ কিমি রাস্তা, ১৫৭ টি কালভার্ট , ৪৪৫ টি শিক্ষা প্রতিস্ঠান সম্পুর্ণ ভাবে ধংস হয়, আংশিক ভাবে ৬৬২১ কিমি রাস্তা ধংস হয়। ২০১০ সালে বর্ষপূর্তীতে খবরের কাগজে আমরা দেখি যে আইলা, সিডড় দুর্গতরা দুখঃ কষ্ট নিয়ে দিনযাপন করছে, তাদের কষ্ট লাগবের উপযোগী কোন অবকাঠামোই নির্মান করা হয়নি । উপরোক্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে ঐ সময় দুর্গতদের দুখঃ কষ্ট লাঘবে ও অবকাঠামো পূণঃনির্মানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকো্র্টে জন সার্থে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন জনাব এ্যাডঃ শহিদুল ইসলাম।

এ প্রেক্ষিতে মাননীয় হাইকো্র্টের একটি বেঞ্চ ১,০৮,২০১০ তারিখে সরকারের উদ্দেশ্যে কারন জানতে একটি রুল জারি করেন যে “ আইলায় ধংশপ্রাপ্ত অবকাঠামো পূণঃনির্মানে এর জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবেনা ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের বিধি প্রনয়নে (আইন প্রনয়ন মাননীয় সংসদের এখতিয়ার) কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না। ‘’ মামলার চুড়ান্ত শুনানী পর্যায়ে তৎকালীন ডিজি (দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর) দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর খসড়া মাননীয় আদালতে উপস্থাপন করে বলেন, এই খসড়াটি অচিড়েই স্টেক হোল্ডারদের মতামত নিয়ে এটা আইনে পরিনত হবে। মাননীয় আদালত ৬ মাসের ভিতর এটি কার্যকর করার নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ২০১০ এর খসড়াটিকে আরও সংশোধন করে, ১২। ০৯।

২০১২ তারিখে মহান জাতীয় সংসদে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন -২০১২ পাশ হয়। দূর্যোগের দেশে দীর্ঘ ৪০ বছর পর যাও বা ১ টি দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন পাশ হলো – সেটিও দূর্যোগ আক্রান্ত ও গোজামিলে ভরা । আইনটি সংশোধনের জন্য বিভিন্ন মহল হতে (বাপা,এনজিও, আইনজীবি, বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক) দাবি জানাচেছন।  কিছু গুরুত্বপুর্ণ দিক যা সংশোধনের বিকল্প নেই ---  জাতীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল , দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সাড়াদান গ্রুপ ,জাতীয় কমিটিসমূহ ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে এই আইনের আওতা থেকে উদ্ভুত ফৌজদারি অপরাধ ও দেওয়ানী দায় এর আওতায় আনতে হবে। ( তাদের অপরাধের ক্ষেত্রে আইনে দায়মুক্তি দেওয়া আছে যা কাম্য নয় )  সে্চছাসেবী সংগঠনের পরিবর্তে একটি প্রশিক্ষিত পেশাগত বাহিনীকে দূর্যোগ মোকাবিলায় দায়ীত্ব অর্পন করা।

 দূর্যোগ ঝুকি হ্রাসে পৃথক অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা রাখা।  আন্তর্জাতি কবাধ্যবাধকতা মেনে হুগো ফ্রেম ওয়ার্ক ফর একশন অনুযায়ী দূর্যোগ ঝুকি ব্যবস্থাপনাকে জাতীয় উন্নয়ন পরিক- ল্পনার সাথে একীভূতকরন করতে হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.