লিখতে ভাল লাগে, লিখে আনন্দ পাই, তাই লিখি। নতুন কিছু তৈরির আনন্দ পাই। কল্পনার আনন্দ। "লেখক" হতে গিয়ে
মোহাম্মদ ইসহাক খান
সপ্তাদশ কিংবা অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্যাপারটা কেমন ছিল? হয়তো বেশ সহজই ছিল। তখন লিখত খুব কম মানুষ।
যদি লিখত, তাহলে পড়ার অনেক মানুষ থাকতো। তারা পড়তো, পড়ে প্রশংসা করতো, না হয় নিন্দা করতো। লেখকের কাজ ছিল লেখা, আর কিছু না।
এটা একবিংশ শতাব্দী। এখন ব্যাপারটি আর সেরকম নেই।
অনেকেই লেখে, অনেক কিছু। সব কিছু পড়ার সময় কারো নেই। অনেক তরুণ লেখক তাই চাপা পড়ে যায়। অনেক কষ্টে, অনেক যত্নে লেখা একটি রচনার কদর, আদর না দেখতে পেয়ে লেখক সত্তার মৃত্যু ঘটে। তারা ফিরে যান আটপৌরে জীবনে।
এই গল্পের নায়ক একজন তরুণ লেখক। একজন ঔপন্যাসিক। তার নাম মাহফুজ। মাহফুজ চৌধুরী।
আর দশজন তরুণ লেখকের মতো সে শুরু করেছিল মহা উৎসাহে।
কিছু একটা শুরু করা সহজ, ধরে রাখা ভীষণ কঠিন। তবুও অনেক দিন ধরে লিখে সে দাঁড় করিয়েছিল একটা উপন্যাস। সে সাহসী, এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই, ছোটগল্প কিংবা হালকা কিছু না লিখে প্রথমেই গুরুগম্ভীর একটা উপন্যাস ফেঁদে বসার মতো সাহস ক'জনের আছে?
সেই উপন্যাস ছাপার "ঝুঁকি" কোন প্রকাশক নিতে চান নি, বলাই বাহুল্য। তারা লেখার সমঝদার নন, তাঁরা ব্যবসায়ী। কাজেই তাঁরা ছাপবেন শুধুমাত্র সেই সব লেখা, যেগুলো পাবলিক "খাবে।
" নিরীক্ষামূলকভাবে একজন নাম-না-জানা লেখকের উপন্যাস ছাপার বিলাসিতা এখন আর নেই।
সে অনেক জায়গায় ধর্না দিলো। কাজ হল না। একটা উপায় আছে, উপন্যাসটা নিজের খরচে ছাপানো, কিন্তু কষ্টেসৃষ্টে যদি সে সেটা করেও, তাহলেও তো আর আসল উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। হয়তো দেখা যাবে, সেই উপন্যাস নিজেকেই কিনতে হচ্ছে, অটোগ্রাফ নিতে কেউ আসছে না।
বন্ধুদের অনিচ্ছায় তাদের হাতে ধরিয়ে দিতে হচ্ছে সৌজন্য কপি। একজন লেখকের কাছে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে?
তারপরও সে হয়তো চেষ্টা চালিয়ে যেত, কিন্তু মাহফুজের একটা বিরাট সমস্যা আছে। তার বয়স। বয়স খুবই কম, কাজেই তার রক্তের স্ফুটনাংক কম, অল্পেই সে ধৈর্যহারা হয়ে পড়ে। এই বয়সে কেউ অনেকক্ষণ ধরে ভাবে না।
উঠতি বয়সী যুবারা "ধরো তক্তা মারো পেরেক নীতিতে" বিশ্বাসী। একজন লেখক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা অনেক সময়সাপেক্ষ এবং দুরূহ ব্যাপার। মাহফুজ নামের এই যুবক এত লম্বা রাস্তায় যাওয়ার মানুষ নয়। সে দ্রুত কাজ এবং দ্রুত ফলাফল চায়।
তাহলে এই উপন্যাসের কী গতি হবে?
উর্বর মস্তিষ্ক কখনো খালি পড়ে থাকে না, একটা না একটা "বিধ্বংসী" আইডিয়া খেলেই যায়।
কাজেই মাহফুজ হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে, ইউরেকা। পেয়ে গেছি।
কী তার আইডিয়া?
আইডিয়াটা সে পেয়েছে একজন লেখকের জীবনী ঘেঁটে। এই লেখক ছিলেন ক্ষণজন্মা। জীবনের একমাত্র উপন্যাসটা লিখেই তিনি নিজের সুরম্য দালানের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।
মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী পাণ্ডুলিপিটা আবিষ্কার করেন। প্রকাশকদের টনক নড়ে। তাঁরা ফলাও করে প্রচার করেন, এই অসাধারণ ঔপন্যাসিক তাঁর জীবনের একমাত্র রচনাটি লিখে উপন্যাসের সাথে সাথে নিজের জীবনেরও পূর্ণচ্ছেদ টেনে দিয়েছেন।
পত্রপত্রিকায় বড় বড় কলাম ছাপা হল। কেন এই লেখক নিজেকে শেষ করে ফেললেন? তা জানতে হলে পড়তে হবে তাঁর এই উপন্যাসটি।
প্রকাশকেরা পাঠকদের কয়েক মাস ধরে অপেক্ষায় রাখলেন। আগাম ফরমাশ দিলেন হাজার হাজার পাঠক।
ঈপ্সিত দিনে বই আকারে উপন্যাসটি বের হল। সব বইয়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়, সূর্য ডোবার আগেই বিক্রি হয়ে গেলো সব কপি, সপ্তাহ পেরুনোর আগেই বিক্রয়ের সংখ্যাটি লাখের ঘর অতিক্রম করলো। প্রকাশকেরা বাজিমাত করলেন।
শুধুমাত্র লেখকের মৃত্যুর খবর গোলাবারুদের মতো করে প্রচারেই এটা সম্ভব হয়েছে, বলাই বাহুল্য। পাঠকেরা মুগ্ধ বিস্ময়ে শুধু যে উপন্যাস পড়লেন তাই নয়, এই লেখকের নাম ইতিহাসের পাতায় স্থায়ীভাবে উঠে গেলো।
মাহফুজের উৎসাহ চলকে ওঠে। কয়েক শতাব্দী কেটে গেছে, এখন আবার যদি কেউ এই পদ্ধতি খাটাতে যায়, তাহলে কেমন হয়? সেই "কেউ" টা যদি হয় মাহফুজ নিজেই?
মাহফুজ চোখ বন্ধ করে ভাবার চেষ্টা করে, সে মরে পড়ে আছে, মৃত্যুর পর তার ঘর থেকে আবিষ্কার হল তার উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি, তারপর খবর চলে গেলো কাগজে, লোকজন আগ্রহ প্রকাশ করলো বইটি পড়ার। রাতারাতি বইটি প্রকাশিত হল, মানুষজন হুমড়ি খেয়ে পড়ল, সবাই এক কপি করে বই সংগ্রহ করলো, কেন এই লেখক আত্মহত্যা করেছেন সেটা জানার জন্য।
একজন বিখ্যাত লেখক হিসেবে সে পরিচয় পেয়ে গেলো। নিজের চোখের সামনে যেন স্পষ্ট দেখতে পেলো মাহফুজ।
পাণ্ডুলিপি যদি কেউ খুঁজে না পায়? পাবে না কেন, মৃত্যুর আগে সে একটা চিঠি লিখে যাবে, সে নিজের অভিমানের কথা লিখে যাবে। লিখে যাবে যে মানুষ তার মহামূল্য এই উপন্যাসটি না পড়ে একজন লেখককে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। পাবলিক একটা বড় শক খাবে।
নিজেদেরকে মনে করবে অপরাধী, কাজেই যারা বইপত্র পড়ে না, তারাও আগ্রহী হয়ে বই কিনে কৃত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে।
কিন্তু এই প্ল্যানের একটা সমস্যা আছে। এই প্ল্যান ঠিকমতো খাটাতে হলে, রাতারাতি "লেখক" হয়ে যেতে হলে মাহফুজকে আগে মারা যেতে হবে।
কাজটি বড় সহজ নয়, সে তো সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু এই বয়সে সাহস থাকে বেশি, বুদ্ধি থাকে কম।
মাহফুজের তাই এই আত্মঘাতী প্ল্যানটিকে মনে হল গ্র্যান্ড আইডিয়া।
***
মাহফুজের "শেষ চিঠি" লেখা হয়ে গেছে।
চিঠিতে সে সমগ্র মানবজাতিকে সম্বোধন করে একটা আবেগঘন পরিবেশের অবতারণা করেছে। সে লিখেছে,
হে মানবজাতি,
তোমরা, হ্যাঁ, তোমরাই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। তোমরা পড়ে দেখো নি আমার গল্পটি।
তাই আমি তোমাদেরকে ত্যাগ করলাম। যদি পারো, তবে আমার ঘরেই থাকা পাণ্ডুলিপিটিকে একটা বইয়ের রূপ দান কোরো। আফসোস, আমি সেটা দেখে যেতে পারবো না। হে পৃথিবী, হে সুন্দর পৃথিবী, তোমাকে সজল নয়নে বিদায় জানাচ্ছি।
মাহফুজ
মাহফুজ একবার পড়লো, দুবার পড়লো চিঠিটা।
পড়ে নিজেই কেঁদে বুক ভাসালো। তার নিজেরই যখন কান্না পাচ্ছে, সাধারণ মানুষ তো কোন্ ছার।
কিন্তু মরবো বললেই কি মরা যায়? সবাই এটা পারে না। প্রবল ঘোরের মধ্যে থাকা মানুষ ছাড়া আর কেউ এই কাজ করবে না, শেষ মুহূর্তে হলেও পিছিয়ে আসবে। মাহফুজ এখন আছে প্রবল ঘোরের মধ্যে, তার মাথায় এখন ঘুরছে একটাই কথা, এই উপন্যাস মানুষের কাছে পৌঁছতেই হবে।
মানুষকে দিয়ে পড়াতেই হবে। সবাইকে স্বীকার করতেই হবে, মাহফুজ চৌধুরী একজন লেখক ছিলেন। বিরাট বড় লেখক।
মাহফুজ এখন তাদের বাড়ির রেলিংবিহীন ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। তার ভয় করছে, খুব ভয় করছে।
একটা উপন্যাসের জন্য সে জীবন দিতে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পরেই তার ভয় উবে যায়, এত বড় ত্যাগ কে স্বীকার করতে পেরেছে? সেই লেখক পেরেছিলেন, কিন্তু তাঁর আত্মহনন বই প্রকাশের জন্য ছিল না, পরে জানা গিয়েছিলো যে স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হওয়াতে তিনি এই রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন। কাজেই সেই বিদেশী লেখকটির মারা যাওয়াকে "ত্যাগ" বলা চলে না, মাহফুজের উদ্দেশ্যটিই বরং সৎ এবং মহৎ। নিজের সৃষ্টিকর্মকে সে সবার কাছে তুলে ধরার নিমিত্তে জীবনকেও তুচ্ছ জ্ঞান করছে, এটা কি কম কথা?
মাহফুজ লাফিয়ে পড়ার আগে চোখ বন্ধ করলো। ধেয়ে আসা মৃত্যুকে চোখ খুলে দেখার সাহস খুব কম মানুষের থাকে।
পরদিন পত্রিকায় যথারীতি ছাপা হল, বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু।
সচিত্র খবর ছেপেছে কোন কোন পত্রিকা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে মাহফুজের পিতামাতার আহাজারি (ইনসেটে নিহত মাহফুজ)।
কোন কোন পত্রিকা সন্দেহ করছে, এটা আত্মহত্যা না হয়ে খুনও হতে পারে। ঘাতক সন্দেহে মাহফুজের এক বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ।
"জোর তদন্ত" চলছে।
আরেকটি পত্রিকা বেশ গবেষণাধর্মী একটা নিবন্ধ ছেপেছে, মাহফুজের আত্মহত্যা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যুবসমাজের মধ্যকার প্রবল হতাশার কথা। দিনে দিনে এই পূতিগন্ধময় সমাজের প্রতি তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে বিতৃষ্ণা, তা থেকেই তারা ঝুঁকছে নেশাদ্রব্যের দিকে। যারা তাতেও নিজের ঠিকানা কিংবা শান্তি খুঁজে পাচ্ছে না, তারা নিজেকেই শেষ করে ফেলছে। এই প্রসঙ্গে আমরা স্মরণ করতে পারি গত মাসে ঘটে যাওয়া মৌরির আত্মহননের কথাটি।
সাংবাদিকটি শেষে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, এর দায় কার? আর কত সম্ভাবনাময় যুবকের জীবনের ইতি দেখবো আমরা?
***
কিন্তু মাহফুজের উপন্যাসটার কী হল?
একটু গোলমাল হয়ে গেছে।
মাহফুজের সেই চিঠিটি টেবিলের ওপরে রাখা পানির গ্লাসের নিচে আলতো করে চাপা দেয়া ছিল। জানালা দিয়ে এসেছিলো তীব্র বাতাস, কাজেই পলকা কাগজটা বাতাসের তোড়ে উড়ে গেলো জানালা গলে, কোথায় চলে গেলো কোন খোঁজ রইলো না।
চিঠি গেলো, কিন্তু পাণ্ডুলিপি তো আর যায় নি, সেটা তো আগের জায়গাতেই আছে। ছিল।
কিন্তু বাসার কাজের ছেলে জাহাঙ্গীর একদিন পুরনো রদ্দি কাগজ ভেবে পাণ্ডুলিপিটা বেচে দিলো অনেকদিনের বাসী খবরের কাগজের সাথে এক করে। প্রতি কেজি বিশ টাকা করে পাওয়া যায়, কম কী? আর এসব কাগজপত্র তো আর মৃত "ভাইজানের" আর কোন কাজে আসবে না, কাজেই ঘর থেকে দূর করে দেয়াই ভাল।
মাহফুজের ঘরটা এখন ঝকঝকে তকতকে করে রাখা হয়। ঘরের এক কোণায় মাহফুজের একটা বড়সড় বাঁধাই করা ছবি, তাতে গাঁদা ফুলের মালা জড়ানো। মাঝেমধ্যেই মাহফুজের মা আলেয়া বেগম এই ঘরে আসেন, মৃত ছেলেকে মনে করে কাঁদেন।
শুধু চোখের পানিই ফেলা হয়, মাহফুজ আর ফিরে আসে না।
মাহফুজের বাবা চাকরি থেকে সদ্য রিটায়ার করেছেন। তিনি অন্য ঘরে পায়চারি করেন, এই ঘরে কখনো আসেন না। তাঁর কেমন যেন লজ্জা লাগে। ছেলে তাঁর আত্মহত্যা করেছে, কেন, কেউ জানে না।
তিনি নিজের মনেই এই প্রশ্নের জবাব খোঁজেন, পান না। মাহফুজের ঘরে ঢোকার সাহস হয় না তাঁর।
মাহফুজের একটা ছোট বোন আছে। সে অবশ্য এই ঘরে আসে, খেলতে খেলতে ঢুকে পড়ে। সে বড় ভাইয়ের মুখ খুব একটা মনে করতে পারে না।
এটুকু মনে আছে, মারা যাওয়ার আগে অনেকদিন ধরে ভাইয়া তার ঘরের দরজা বন্ধ করে কী যেন করতো। কে জানে, কী করতো।
মাহফুজের উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি প্রথমে পুরাতন কাগজওয়ালাদের দোকানে গেলো, সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়লো অনেক জায়গায়, বহু খণ্ডে বিভক্ত হয়ে।
বুড়ো দোকানদার আসলাম মিয়া খদ্দেরকে ঠোঙায় করে এক হালি ডিম দিলেন। খদ্দের বলতে একটা বাচ্চা ছেলে।
এক হালি ডিম ছত্রিশ টাকা।
ছেলেটা ডিমের ঠোঙাটা নিয়ে বাসার পথ ধরেছে। সে লক্ষ করেছে, যেসব কাগজ দিয়ে মুদী দোকানের ঠোঙা বানানো হয়, তাতে লক্ষ করলে ভারী মজার জিনিস দেখা যায়। কখনো কারো পরীক্ষার খাতার অংশবিশেষ, শিক্ষক লাল কালিতে গোল্লা দিয়ে রেখেছেন, কখনো বাংলা "আমার বই" এর একটা পাতা দিয়ে বানানো ঠোঙা, কখনো আঁকিবুঁকি করা কাগজ।
ছেলেটা একটু কৌতূহলী হয়ে দেখার চেষ্টা করলো, ঠোঙার গায়ে কী লেখা আছে।
গোটা গোটা অক্ষরে লেখা আছে, আনন্দলোকে। মাহফুজ চৌধুরী। বসন্তের প্রথম সমীরণ যখন শরীরে এসে লাগলো ... ...
তারপর লেখা আছে আরও কয়েক লাইন।
ছেলেটা আগ্রহ হারাল। মুদী দোকানের ঠোঙার লেখা পড়ার আগ্রহ সবারই কয়েক মুহূর্তে উবে যায়।
সেই ডিমের ঠোঙাটি ছিল আমাদের মাহফুজের লেখা উপন্যাস "আনন্দলোক" এর প্রথম পাতা।
প্রথম পাতাটির মতো অন্য পৃষ্ঠাগুলোও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঐ তো, যে লোকটি স্কুলের সামনে ভীড় করা ছেলেপুলেকে ঝালমুড়ি বানিয়ে দিচ্ছে, প্রবল বেগে প্লাস্টিকের মগে করে ঘুঁটছে ঘুগনি, পেঁয়াজ, মরিচ, মুড়ি, তার কাছেও আছে উপন্যাসের কয়েকটা পাতা। ছেলেপুলেরা সেই শঙ্কুর মতো দেখতে ঠোঙাগুলোতে করে ঝালমুড়ি আর চানাচুর খাচ্ছে, তারপরই পায়ের নিচে ফেলে দিচ্ছে।
মাহফুজ মানুষের কাছে পৌঁছতে চেয়েছিল।
সে আজ সবার হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে, তাদের অজান্তেই। কিন্তু এভাবে মুদী দোকানের কিংবা ঝালমুড়ির ঠোঙা হিসেবে কারো কাছে পৌঁছতে বোধহয় সে চায় নি।
(২ ডিসেম্বর, ২০১২)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।