আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত মৃত্যু বার্ষিকী, জন্ম বার্ষিকীসহ নানা অনুষ্ঠানের উচ্ছিষ্ট বিরিয়ানী কুড়িয়ে এনে ১০টাকা প্যাকেট হিসেবে বিক্রি হয় জয়দেবপুর রেলস্টেশনে। এসব প্যাকেট কিনে রেললাইনে বসেই ক্ষুধার্ত মানুষ উদরপূর্তি করছে। “স্যার... ১০টা টাকা দেন, বিরিয়ানী খামু!” জযদেবপুর রেলস্টেশেনে শ্লোগানের মত একথা বারবার আউড়ে ভিক্ষা করছে ১০ বছরের বালক সুমনসহ অন্যরা।
গাজীপুর শহরের জয়দেবপুর রেলজংশনে গিয়ে দেখা গেছে ওই দৃশ্য।
রেললাইনে বসে একটি ওয়াশিংপটে করে বিরিয়ানী বিক্রি করছেন আ. জব্বার মিয়া (৬০)। পিতার নাম আব্দুর রহমান। বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার গোসকা গ্রামে।
আ. জব্বার বাংলানিউজকে জানান, গাজীপুর শহরের ভুরুলিয়া গ্রামে একটি মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি শ্রমিকের কাজ করেছেন।
অনুষ্ঠানের কাজ শেষে উচ্ছিষ্ট বিরিয়ানী কুড়িয়ে এনেছেন তিনিসহ ৩/৪ জন মিলে। এখন ওয়াশিংপটে রেখে ছোট ছোট পলিথিনের প্যাকেটে বিক্রি করছেন। প্রতি প্যাকেট ১০টাকা। এক ওয়াশিংপট বিরিয়ানী থেকে ছোট পলিথিনে ১৫০ প্যাকেট বিরিয়ানী হয়। অর্থাৎ এক ওয়াশিংপট বিরিয়ানী বিক্রি হয় ১৫শ টাকা।
জব্বারের কাছ থেকে ১০টাকায় এক প্যাকেট বিরিয়ানী কিনে পাশেই বসে খাচ্ছেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার মশাখালি গ্রামের নজরুল ইসলাম(৫৫)।
নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বাড়িতে যাব। সারাদিন কিছু খেতে পারিনি। ১০টাকা ছিলো। এক প্যাকেট বিরিয়ানী কিনে খাচ্ছি।
দেখা গেল রেললাইনে বসে বিরিয়ানী খাচ্ছে ১২ বছরের বালক সুমনও। সুমন বাংলানিউজকে জানায়, টাকা নেই। খিদা লাগছে। ১০টাকায় বিরিয়ানী খাই।
জয়দেবপুর রেলস্টেশনে আব্দুল মিয়া (৫০) নামে আরেক ব্যাক্তি ইছালী গ্রামে এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানে শ্রমিকের কাজ করেন।
একই কায়দায় তিনিও বিরিয়ানী এনে বিক্রি করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, জয়দেবপুর স্টেশনে প্রতিদিন নিম্ন আয়ের ক্ষুধার্ত মানুষ সামান্য টাকায় বিরিয়ানী পাওয়ায় লোভে ছুটে আসেন এই স্টেশনে। ফলে জয়দেবপুর স্টেশনে সন্ধ্যারাতে ক্ষুধার্ত মানুষের ভীড় বেড়ে যায়। আর সেই বিরিয়ানীর প্রসঙ্গ টেনে ভিক্ষুকরা স্টেশেনে ভিক্ষা করার কৌশল বদলে বলে, “স্যা...র, ১০টা টাকা দেন বিরিয়ানী খামু। ” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।