আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নতুন ভূবনে ৬ মাস ও এলোমেলো কিছু ভাবনা।

জীবনকে ভালোবাসি, তার চেয়েও বেশী ভালোবাসি মেয়েকে। ব্লগে আমার অনেক আগের একটি নিক আছে যার বয়স ৩ বছর ৩ সপ্তাহ, কিন্তু ঐ নিকটি অনেক অপেক্ষার পরও পর্যবেক্ষণের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারেনি বলে এই নিকটি খুলি, দেখতে দেখতে এই নিকের বয়সও ৬মাস পেরিয়ে গেলো, অনেক ব্লগারই অর্ধবর্ষপূর্তি উপলক্ষে বা বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পোস্ট দেয়। আমারও ইচ্ছে ছিলো এমন পোস্ট দিবো কিন্তু গত কয়েকটা দিন এতো ব্যস্ততা আর এতো সব দূর্ঘটনা দেখে কিছু লেখার মতো মন মানসিকতা ছিলোনা। তবুও আজ লিখছি অনেক না বলা কথা জমে আছে বুকের ভেতরে, মনে হচ্ছে এক বুক মেঘ নিয়ে চলছি আমি। জানিনা কবে এই মেঘগুলো বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে আর আমি কিছুটা হাল্কা হয়ে যাবো।

এই না বলা কথাগুলো বলার মতো কেউ নেই আমার, এজন্যই আসলে ব্লগে আমার এই নিকের মাধ্যমে নিয়মিত হওয়া শুরু করি। যখনই মন খারাপ হয় বা কোন কারনে মন ভালো হয় মনে হয় কিছু লিখি। জানি অনেকেই হয়তো বিরক্ত হবে আমার ব্যাক্তিগত জীবনের এসব গল্প শুনে তবুও আমি লিখবো আমার নিজের জন্য। কারন এছাড়া আমার নিজেকে ভারমুক্ত করার অন্য কোন উপায় জানা নেই। সম্পর্কগুলোকে আজকাল অনেক বড় বোঝা মনে হয় আমার কাছে, মনে হয় এসব সম্পর্ক ঠিক রাখতে গিয়ে আমি আমার স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছি।

মেয়েদের স্বকীয়তা অবশ্য ভুলে যেতেই হয় বিয়ের পর, নতুন মানুষগুলোর সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিজের অনেক অভ্যাস, স্বাদ - আহ্লাদ, পছন্দ অপছন্দ সব ভুলে যেতে হয়, ভুলে গিয়েছিলামও আমি। তবু কেন ভালো থাকা হোলনা আমার? তাই আজকাল মনে হয় কেন এতো বিসর্জন, যে বিসর্জনের কোন মূল্যায়ন বা নূন্যতম সম্মানটুকু নেই কারো কাছে, তাই আজকাল আর কোন কিছুতে ছাড় দিতে ইচ্ছা হয়না আমার। কতকাল কাঁদিনা চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করে। অসহায় মানুষগুলোর এতো নির্মম মৃত্যু দেখেও কেন চিৎকার করে কাঁদতে পারিনা আমি? বুকের ভেতরে কি তাহলে পাথর জমে গিয়েছে? যে পাথরে কোন কিছুতেই কোন প্রভাব পড়েনা। কত নরম স্বভাবের মেয়ে ছিলাম আমি, যে আমি কারনে বা অকারনে কখনোই কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করিনা সে আমি আজকাল সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করি, কারনে অকারনে সবাইকে কষ্ট দিতে ইচ্ছা করে, এতো খারাপ কেন হয়ে যাচ্ছি আমি?খুব ভালো বা খুব খারাপ কোন কিছুই কেন যেন আর আমাকে স্পর্শ করতে পারেনা।

শূন্যতার এক চোরাবালিতে যেন ডুবে যাচ্ছি আমি। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে পারিনা, কোন স্বপ্ন দেখতে পারিনা। কোন সুন্দর কিছু আমার জীবনে ঘটবে এমন কোন আশা কেন করতে পারিনা আমি? আসলে কিভাবে করবো আমি বুঝিনা। যে দেশে ঘরে বাইরে কোথাও জীবনের নিরাপত্তা নেই যে দেশে আমি আজ বেঁচে বাসায় ফিরবো কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই সে দেশে কিভাবে আমি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবো? জানি এর মাঝেও অনেকে অনেক সুন্দরভাবে বেঁচে আছে, আমি কেন পারছিনা, এটা কি শুধু আমার ব্যর্থতা? মাঝে মাঝে মনে হয় সব ছেড়ে ছুড়ে যদি খুব দুরে একা কোথাও হারিয়ে যাওয়া যেত, কোন বৃদ্ধাশ্রম বা কোন এতিমখানায় যেখানে শুধু আমার বেঁচে থাকার নিরাপত্তা আর নিশ্চয়তাটুকু থাকলেই হবে, আর কোন কিছু নিয়ে আমাকে ভাবতে হবেনা, সেখানে আমি অসহায় মানুষগুলোর সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেবো জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। জানিনা এমন কোন দিন আসবে কিনা আমার জীবনে।

তারপরও মনের মাঝে একটা শিশু অবিরত যুদ্ধ করে যায়, সব ভুলে শুধু আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। মন চায় আমার মেয়েটা যেভাবে আমি অফিস সেরে বাসায় যাওয়ার পর আদরের আব্দার করে সেভাবে আমিও আমার প্রাপ্য ভালোবাসাটুকু সম্মানটুকু আদায় করে নেই। আমার মেয়েটার মতো ভাবনা হীন থাকি। জোর করে ভালো থাকার চেষ্টা করি। মেয়েটার কথা ভেবে ভালো থাকতে চাই।

কারন ওর শেষ ও পরম আশ্রয় যে আমি। এবার ব্লগে আমার অভিজ্ঞতা কিছুটা শেয়ার করি। গত ছয়টা মাসে ব্লগ আমার জীবনে নতুন একটা মাত্রা যোগ করেছে। অনেকের লেখা পড়ে আমি ভেবে ভেবে অবাক হয়ে যাই এতো সুন্দর করে কিভাবে লেখেন তারা। প্রিয় কয়েকজন ব্লগারের নাম উল্লেখ করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু করছিনা, কারন অন্যদের পোস্ট পড়ে আমার নিজের বেলায় দেখেছি অন্যদের প্রিয় ব্লগারের তালিকায় নিজের নাম অসচেতনভাবেই খুঁজেছি, যদিও কারও প্রিয় ব্লগার হবার মত কোন যোগ্যতাই আমার নেই বা তেমন কোন পোস্ট ই আমি দেই নি।

তবুও এমন অনুভূতি হয়। তাই সব ব্লাগরদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি সবাই আমার প্রিয় ব্লগার (যারা অন্যদের সাথে ক্যাচাল করে বা অন্যকে অসম্মান করে মন্তব্য করে তারা বাদে)। আমি অনেকের লেখাই পড়ার চেষ্টা করি, কোন পোস্টের টাইটেল আমার পছন্দ হলেই সময় থাকলে আমি পড়ি। আমি ব্লগারের নাম দেখে পড়িনা, পোস্টের টাইটেল দেখে পড়ি। এভাবে কারো কয়েকটা লেখা ভালো লেগে গেলে তাকে আমার লিংকে এ্যাড করে নেই, নিয়মিত তার ভালো লেখাগুলো যেন পড়তে পারি।

এই ভার্চুয়াল জগতে অনেকের সাথে পরিচয় হয়েছে, যাদের কোনওদিন দেখিনি তাদের লেখা নিয়মিত পড়তে পড়তে মনে হয় এরা যেন আমার কতদিনের পরিচিত!!! ঠিক এভাবেই আজ রুশানকে আমার মনে হয় আমারই কোন বোনের ছেলে, মনে হয় তাকে কোন ভাবেই হারিয়ে যেতে দেয়া যাবেনা,তার জন্য আমার ক্ষুদ্র সামর্থ অনুযায়ী যা কিছু সম্ভব আমি করবো, যেন ও ওর মায়ের বুকে সুস্থভাবে ফিরে যেতে পারে। রুশানকে নিয়ে যারাই ভাবছেন বা যারা ওকে আর ওর মাকে সাহায্য করার জন্য নিরন্তর কষ্ট করে যাচ্ছেন তাদের জন্য রইলো অনেক অনেক দোয়া আর সশ্রদ্ধ সম্মান। শুভ কামনা সবার জন্য। কাউকে অজান্তে বিরক্ত করে থাকলে দুঃখিত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.