মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। লেখার শিরোনামটা দেখে হয়তো অনেকের মনে খটকা লাগতে পারে, পোশাক শ্রমিকের সাথে ভাঁঙ্গা হারিকেন শব্দটা কেন জুড়ে দিলাম? আশা করি লেখাটা পড়ে একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলে কারনটা সবাই ধরতে পারিবেন বলেই আমার বিশ্বাস।
কথাটা শুনতে যদি বেমানান তবুও আমরার প্রায় বন্ধু বান্ধবের মাঝে একটা কথার বহু ব্যবহার লক্ষ করা যায়। কোন কিছু খুঁজে না পেল আমরা একজন অন্যজনকে বলি “দোস্ত ভাঁঙ্গা হারিকেন দিয়ে খুঁজে দেখ” প্রবাদটা মনে পড়ার পিছনে মূলত কাজ করেছে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়ে শয়ের উপরে পোশাক শ্রমিকে মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। নেট ঘেটে বিভিন্ন সময় পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটে যাওয়া ঘটনা খুঁজে দেখলাম এযাবত কালে যত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ভাঁঙ্গা হারিকেন দিয়ে খুঁজেও কোথাও কোন পোশাক কারখানায় কর্মরত মালিক পক্ষের কেউ আগুনে পুড়ে মারা গেছে এমন সংবাদ চোখে পড়ে নাই।
তবে হ্যাঁ কোথাও কোথাও দেখা যায় অগ্নিকাণ্ডের সময় মালিক পক্ষ সামান্য আহত হয়ে সহি-সালামতে কারখানায় আগুন লাগার পর বের হয়ে এসেছে। এখন প্রশ্ন হলো কোন কারখানায় আগুন লাগলে মালিক পক্ষ যদি সহি-সালামতে বের হয়ে আসতে পারে তবে সাধারন যে সব শ্রমিকের রক্ত চুষে আজ মালিক পক্ষ দামী দামী গাড়ীতে ঘুরে বেড়ায় সেই সকল শ্রমিকরা নিরাপদে বের হবার কোন ব্যবস্থা নেই কেন?
একটা সময় ছিল আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় অংশই আসত পাট থেকে রপ্তানী যোগ্য পন্য গুলোর মাঝে পাট জায়গা করে নিয়েছিল পাঠ্য পুস্তকে সোনালী আঁশ হিসেবে। কালক্রমে দেশী-বিদেশী সড়যন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসের দুয়ারে পাটকে নিয়ে আমরা এখন জাদু ঘরে তুলেছি। বর্তমানে দেশের পোশাক শিল্পই হলো বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি বড় মাধ্যম ও গরীব অসহায় মানুষের দুই বেলা অন্ন জোগাড়ের একটি বড় পথও বটে। মাঝে বেশ কিছুদিন আগে বিভিন্ন পত্র পত্রিকার নিউজে এই শিল্পকে ধ্বংস করার বিষয় নিয়ে বেশ লেখা-লেখি হয়ে হঠাৎ করে ঝিমিয়ে গেছে।
প্রবাদ আছে “যা রটে কিছুনা কিছুতো বটে” অনুসন্ধানী রিপোট তৈরী করলে হয়তো বেরিয়ে আসবে কিছু দিন পর পর পোশাক কারখানায় আগুন লাগার মূল কারন। আমাদের ভুলের কারনে এক আদমজী বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সে সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে যায়।
এখনি যদি পোশাক শিল্প নিয়ে চলা দেশী-বিদেশী চক্রান্তের মূল হোতাদের ধরে এই শিল্প এবং এই খাতে জড়িত লক্ষ লক্ষ পোশাক শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি যথাযথ দৃষ্টি না দেয়া হয় তবে অচিরেই আমরা হারাব বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি বিশাল খাত। সেই সাথে বেকার হয়ে যাবে লক্ষ লক্ষ পোশাক শ্রমিক যা দেশ ও সমাজের জন্য বয়ে আনবে অভিশাপ সৃষ্টি হবে অরাজগতা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।