আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !!
আমি কিছুটা সময় সাইরার দিকে তাকিয়ে রইলাম । বুঝতে পারতেছি আমার রাগ উঠতেছে ! আমি চাচ্ছি না যেন আমার রাগটা না উঠে ! কারন পরিসংখ্যান বলে রাগ উঠলে আমার মাথায় ঠিক মত কাজ করে না । আমার এই রেকর্ডও আছে যে রাগের মাথায় আমি আমার বেশ কিছু বান্ধবীদের কে থাপ্পর মেড়েছি ! এই রাগের জন্য আমার প্রথম গার্লফ্রেন্ড আমাকে ছেড়ে চলে গেছে ! আর এখন যদি রাগের জন্য আমার বিয়েটাও ভেঙ্গে যায় তাহলে কেমন করে হবে !
কথায় আছে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন !! কিন্তু এই মেয়ের উপর তো রাগটা ঠিক মত কন্ট্রল করা যাচ্ছে না !
আমি তবুও মাথাটা যথা সম্ভব ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করলাম । বললাম
-কি বললে তুমি ? আবার বল ?
সাইরা বলল
-তুমি ঐ মেয়েটার দিকে তাকিয়েছ কেন ?
-কোন মেয়েটার দিকে ?
-আ হা ! এখন বলছো আবার কোন মেয়েটার দিকে ? তুমি খুব ভাল করেই জানো কোন মেয়েটার দিকে ! ঐ যে তোমার ডান পাশের কালো টপস আর জিনস পরা !
এবার আমি তাকালাম মেয়েটার দিকে । সত্যি সত্যি এই প্রথম বার মেয়েটার দিকে তাকালাম ।
ভালই তো !
সাইরা বলল
-এই তো আবার কেন তাকালে ? আমি তো তোমাদের ছেলেদের কে খুব ভাল করেই চিনি । সুযোগ পেলেই হল !
আমার মেজাজ টা আর একটু খারাপ হল । খানিকটা মেজাজ নিয়েই বললাম
-তাকিয়েছি । ভাল । তো কি হয়েছে ?
সাইরা যেন আকাশ থেকে পড়ল ।
-কি হয়েছে মানে ? আমি তোমার সাথে রয়েছি তার পরেও তুমি অন্য মেয়ের দিকে তাকাবে কেন?
-কেন তাকাব না ? তুমি আমাকে বল কেন তাকাবো না ? তুমি যখন আমার সাথে থাকো তখন কি অন্য ছেলের দিকে তাকাও না । নাকি চোখ বন্ধ করে থাকো ?
এমন সময় ওয়েটার এসে হাজির । আমাকে বলল
-স্যার কি খাবেন ?
আমি ওয়েটারের দিকে তাকালাম । সাইরাও তাকালো !
-তুমি পরে আসো !
-জি আচ্ছা !
ওয়েটার চলে গেল । ওয়েটার চলে যেতেই সাইরা কে বললাম
-তুমি ওয়েটার দিকে কেন তাকালে ?
সাইরা এবার সত্যি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে ।
আমি যে এমন একটা কথা বলতে পারি এটা সাইরা ভাবতেই পারে নি !
-কি বললে তুমি ?
-তুমি ঠিক ই শুনেছ ! ওয়েটার দিকে কেন তাকালে ?
আমার দিকে আগুন দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে সাইরা বলল
-ছিঃ ! তোমার রুচি এতো নিচ ! আমি ভাবতেই পারি নি । আমি এই জন্য তোমাকে পছন্দ করতে চাই নি । কবল বাবা বলেছিল বলে ! আর তুমি বাবার বন্ধুর ছেলে বলে ! তা না হলে তোমার থেকে আরো হাজার গুন ভাল ছেলের সাথে আমি এঙ্গেইজমেন্ট করতাম । কত ছেলে আমার পরছনে ঘুরে
-খুবই ভল কথা । যাও সেই সমস্ত ভাল ছেলের কাছে যাও !
আমি উঠে চলে এলাম ।
এই মেয়ের সাথে আর একটু বেশিক্ষন থাকলে আমার মেজাজ ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে !
কি চমচৎকার কথা !
আম যদি অন্য মেয়ের দিকে তাকাই তাহলে সেটার কৈফৎ আমাকে তার কাছে দিতে হবে ?
কেন দিব ?
তোর সাথে বিয়ে হচ্ছে বলে ??
তোর বিয়ের আমি খ্যাতা পুরি !!
আসলে পল্টু ভাই ঠিকই বলেছিল ।
-বৎস ! বিবাহ করিবে ঠিক আছে ।
কিন্তু বিবাহের জন্য যে কোন একটি গুন বিচার করিবে !
হয় সুন্দরী নারী অথবা ধনবান পিতার কন্যা !
আমি বলললাম
- ভাই আমি যদি ধনবান পিতার সুন্দরী কন্যা খুজি !
পল্টু ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তাহলে তুমি তাহার স্বামী হইবে না হইবে তাহার পালতু কুকুর !!
কথাটা আসলেই সত্যি ! আমি পালতু কুকুরই হয়ে যাচ্ছিলাম । আল্লাহ বাচিয়েছে ।
বাসায় আসতে না আসতেই মা বলল
-সাইরা ফোন করেছিল ।
আমার মেজাজ এমনিতেই খারাপ ছিল । তার উপর আসটে না আসতেই ই ফাজিল মেয়েটার কথা শুনে আরও খানিকটা মেজাজ খারাপ হয়ে গেল !
-তো আমি কি করবো ? নাচবো ?
মা বলল
-তোদের মধ্যে কিছু হয়েছে । ও বলল নাকি এঙ্গেইজমেন্ট টা অফ রাখতে !
আমি মার দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠ বললাম
-তুমি কি চাও ? তোমার ছেলে পলতু কুকুর হয়ে যাক ?
আমার মা বোধ হয় আমার কথা ঠিক মত বুঝতে পারলো না । কেবল অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো !
আমি বললাম
-ঐ মেয়েকে আমি বিয়ে করবো না । বিয়ের আগেই ঐ মেয়ে আমাকে যে ভাবে শাসন করা শুরু করেছে না জানি বিয়ে হলে কি করবে ! তুমি বাবা কে বল আমি ঐ মেয়েকে বিয়ে করবো না !
মা আর কিছু বলল না ।
বিরস মুখে চলে গেল !
সাইরার সাথে আামর পরিচয় অনেক দিনের । তবে ঐ ভাবে ঠিক কখনও ভাবিনি ! আব্বার বন্ধু মেয়ে তাই চিনতাম ! মাঝে মধ্যে আমাদের বাসায় আসতো ! তবে কথা হয়েছে খুবই কম ! ইতুর সাথে কথা বলত !
ইতু আমার ছোট বোন !
চাকরী পাওয়ার পর থেকে লক্ষ্য করলাম যে সাইরার এ বাড়িতে আসা যাওয়া যেন একটু বেড়ে গেছে ! আমি প্রথমে কিছু বুঝতাম না । আসলে বোঝার কোন দরকার ছিল না !
কিন্তু একদিন ঠিকই বুঝতে পারলাম যে আসার কারন কি ?
আমার মা যখন আমাকে সাইরার কথা বলল আমি একটু অবাক হলাম ।
মেয়েটা এমনিতেই একটু স্টাইলিস তার উপর বড়লোক বাপের মেয়ে ! এই টাইপের মেয়ে আমার মত ছেলেদের খুব একটা পছন্দ করে না । তাহলে এই মেয়ে কেন আমার সাথে বিয়েতে রাজি হল ?
কে জানে ?
মেয়েদের মাথায় কখন কি আসে !
আমি রাজি হয়ে গেলাম ! আর না রাজি হবার কোন কারনও অবশ্য ছিল না ! সব ছেলেদের মনে মধ্যে একটা স্বপ্ন থাকে সাইরার মত একটা বউ পাওয়ার ! আমার মনেও ছিল !
সাইরার সাথে যখন পারিবারিক ভাবে কথা বার্তা চলতে লাগলো আমিও বললাম খারাপ কি ?
সাইরার সাথে মেলামেশা বাড়তে লাগলো ।
আমরা এদিক ওদিক বেড়াতে যেতাম ফোনে কথা বলতাম ! ভালই লাগতো !
প্রথম প্রথম ভালই চলছিল ! কিন্তু আস্তে সাইরার ডোমিনেটিং ভাবটা টের পেতে লাগলাম ! সে আমাকে প্রায় বুঝানোর চেষ্টা করত যে সে সব দিক দিয়ে আমার থেকে পারফেক্ত ! তাই তার সব কথা আমাকে শুনতে হবে ! তার কথা মত চলতে হবে ! সব কিছুর আগে তাকে প্রধান্য দিতে হবে !
আমি প্রথম প্রথম ব্যাপারটা আমলে নেওয়া চেষ্টা করতাম না ! কিন্তু এক সময় ব্যাপার টা খুব প্রকট আকার ধারন করা শুরু করলো যে আমি খানিকটা বিরক্ত হয়ে উঠলাম ।
ব্যাপার আমি প্রথম বুঝতে পারি একদিন রাতে !
আমি আমার বন্ধু সাথে কথা বলছিলাম ! এমন সময় সাইরা ফোন দিল ! আমি মনে করলাম যে বন্ধুর সাথে কথা বলি তারপর ওকে ফোন দিবো ! ধশ পনের মিনিট পরে ফোন দিলাম সাইরা কে !
-কার সাথে কথা বলছিলা ?
আমি সাইরার গলার স্বর শুনে একটু অবাকই হলাম ! সাইরার গলায় স্পষ্ট কর্তৃত্বের সুর !
-মানে ?
-তুমি এতো রাতে কার কাছে কথা বলছিলা ? আমি ফোন দিলাল তারপরও তুমি কথা বলছিলা !
আমি বললাম
-দেখ ! আমি আমার এক বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম !
-বন্ধু না কি বান্ধবী ?
আমি সাইরার কথায় অবাক না হয়ে পারলাম না !
বললাম
-বান্ধবীর সাথে কথা বললেই বা কি ? কোন সমস্যা আছে কি ?
-কি বললে তুমি ? কোন সমস্যা নাই ?শোন আমার সাথে এসব চলবে না !
-কোন সব চলবে না ?
-যা তুমি করছো ! রাত রাত ভরে তোমার অন্য গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলা আমি একদম সহ্য করবো না !
আমি মেজাজটা খানিকটা খারাপ হল । আমি আর কথা না বলে ফোন রেখে দিলাম ! কথা বললেই আমার মেজাজ আরো খারাপ হবে !
আমি পারলে ঐদিন সাইরার সাথে সব কিছু শেষ করে দেই । কিন্তু আমাদের পরিবার এর ভিতরে জড়িত ছিল তাই হুট করে কিছু করা যাচ্ছিল না !
আমি দিনদিন সাইরার এসব জ্বালাতন সহ্য করছিলাম । কিন্তু আর না !
আর সহ্যের একটা সীমা থাকে তো !
সব জাহান্নামে থাকুক !!
রাতের বেলা বাবা ব্যাপার টা জানতে চাইলেন ! আমি বাবাকে সব কিছু বললাম ।
বললাম যে সাইরা কে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না । কারন টাও ব্যাখ্যা করলাম !
বাবা খানিকটা অসন্তুষ্ট হলেও কিছু বললেন না । আসলে বাবা কোনদিন আমার উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেই নি ! আমি মোটামুটি সব কিছু সবকিছুতেই স্বাধীনতা পেয়েছি ! আর এটা তো আমার জীবনের কথা !
তারপর থেকে দিন ভালই কাটতে লাগলো ! সাইরার খবরদারী ছিল না ! এটা ভাল লাগছিল ! এটো দিন ওর জন্য আমি ঠিক মত ফুচকাও খেতে পারতাম না ।
ওর কথা মত ফুচকা হল একটা অখাদ্য ! রাস্তার পাশে দাড়িয়ে খেতে হয় ! জার্ম খেতে হয় ! আমার একটা ছুটির দিনও আমি শান্তি মত কোথাও যেতে পারি নি ! তার পছন্দ কাচে ঘেরা দোকান ! আমেরিকান বার্গর কেএফসি অথবা বিএসছি !
জীবনটা একে বারে ছাড়া ছাড়া হয়ে গেছিল !
অনেকদিন পর আজ ভার্সিটি এলাকায় আসলাম । আজিজ মামা ফুচকা না খেলে কি হয় ! পুরো জীবন বৃথা !!
এই ফাজিল মেয়েটার জন্য এই জিনিস আমি খেতে পারি নি ! আজ শান্তি মত কাহবো !
আমি সবে মাত্র একটা ফুচকা মুখে নিয়েছি ঠিক তখন আমি একটা অদ্ভুদ দৃশ্য দেখলাম ।
সাইরা কে দেখলাম এদিকে আসতে ! প্রথমে মনে হল হয়তো ভুল দেখছি !
নাহ ভুলই দেখছি ! সাইরা প্রাইভেটে পড়ছে ! নর্থসাউথে ! এখানে আসার কোন মানেই নেই ! আর এই এলাকা ওর পছন্দও না !
এ নিশ্চই অন্য কেউ ! সাইরার মত কেউ হবে হয়তো ! চশমা পরি নি তাই মনে হয় এমন মনে হচ্ছে ।
চশমাটা পরবো নাকি?
তারপর মনে হল কি দরকার ?
কাল মা বলছিল যে বাবা নাকি সাইরার বাবার সাথে কথা বলেছে ! আমি যে বিয়ে করতে চাইছি না এটা জানিয়ে দিয়েছে । সুতরাং আমার এটা নিয়ে ভাবার কোন দরকার নাই ! সাইরা হোক বা না হোক ! আমার কি !
হু কেয়ারস ম্যান !!
আমি এখন আমার ইচ্ছা মত কাজ করবো ! কারো দিকে দেখার টাইম নাই !!
আমি আর একটা ফুচকা মুখে দিলাম !
আহা ! কি মজা !!
সাইরার মত মেয়েটা ফুচকার অর্ডার দিল !
আমি নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে সাইরা হতেই পারে না ! সাইরা বাইরের এরকম খোলা জায়গার খাবার কখনও খায় না !
এই মেয়েটা সাইরা হবার প্রশ্নই আসে না !
আরে না হোক !
কি যায় আসে !!
ফুচকা নিয়ে মেয়েটা আমার থেকে একটু দুরেই বসলো ! কিছু সময় যাওয়ার পরেও মেয়েটা যখন একটা ফুচকা মুখে দিল না তখন আমার মনে একটু সন্দেহ দেখা দিল ! মেয়েটা যেন খানিকটা ইতস্তঃ করছে ! আমার মনে এবার একটু কৌতুহল হলই !
আমি এতো ক্ষন ভাল করে দেখি নি ! এবার চশমাটা পরে তাকালাম মেয়েটার দিকে ! সত্য কথা বলতে কি আমার মন ছিল অন্যদিকে ! তাই সাইরা কে আমি ভাল করে চিনতে পারি নি ! আর সাইরার এদিকে আসার কোন সম্ভাবনাই ছিল না । কিন্তু এতো সাইরাই ! এখানে কি করছে !?
আশ্চার্য ব্যাপার !!
যতই বিয়ে না হোক ! আমার পরিচিত আর তার উপর মেয়েটার সাথে ভালই সময় কাটিয়েছি ! এখন এরকম জায়গায় দেখা ! কথা না বললে কেমন হয় ?
আমি নিজেই সাইরার দিকে এগিয়ে গেলাম ! বসলাম ওর পাশে !
একটা ফুচকা মুখে দিতে দিতে বললাম
-এখানে ?
সাইরা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বলল
-এমনি !
আজ ওর কন্ঠস্বর বেশ নমনীয় !
আহা ! সব সময় যদি এমন হত ! ভালহত ! মেয়েটা এমনিতে খারাপ না শুধু ঐ কর্তৃত্বের ভাব টা না থাকলেই হত !!
আমি খানিক টা অবাক হয়ে বললাম
-তুমি ফুচকা খাচ্ছ? আশ্চার্য !!
সাইরা আমার দিকে আবারও কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো ! ওর চোখে কেমন একটা বিষন্নতা দেখলাম ! সাইরা বলল
-তুমি তো তাই চাইতে !
আমি আরো বেশি অবাক হলাম ! সাইরার কন্ঠে একটু যেন অভিমান ?
সত্যি কি ?
কিন্তু কেন ?
আশ্চার্য !!
-আমি কখনও চাই নি ? আমি কখনও বলি যে তুমি ফুচকা খাও ! ওটা আমার পছন্দ ছিল ! আমি কখনও আমার পছন্দ তোমার উপর চাপিয়ে দেই নি !
-তাহলে কি আমি দিয়েছি ?
বাব্বা !!!
কন্ঠে এতো অভিমান ?
কিন্তু কেন ?
বিয়ে তো ভেঙ্গে গেছে !! এখন এসব করে কি লাভ ?
আর ও এমন টা কেনই বা করছে ?
আমি বললাম
-এখন আমি মিথ্যা কথা বলটে চাই না !
আমি হাসলাম ! আমি খুব একটা কেয়ার করি না ! কি দরকার !! আবার বললাম
-ফুচকা খাও ! ভাল লাগবে !
আমি লক্ষ্য করলাম সাইরা কাঁদছে !
সেকি !!
কেন?
-তুমি এতো সহজে ব্রেকআপ করে ফেললে !
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম ! বললাম
-আমি ব্রেক করেছি ! আমি?? সেদিন তুমি কি বলেছিলে মনে আছে ? আমার থেকে আরো হাজার টা ভাল আর হ্যান্ডসাম ছেলে....।
-ওটা তো আমি রাগের মাথায় বলেছি !
-আর কি কারনে তুমি রেগেছিলে মনে আছে? আশ্চার্য এক কারন ! আমি নাকি কার না কার দিকে তাকিয়েছি ! শোন সাইরা তোমার সাথে আছি তার মানে এই নয় যে আমার জীবনে আর কিছু নাই আমার চারপাশে আরো অনেক কিছু আছে !
-তাই বলে তুমি অন্য মেয়ের দিকে তাকাবে !
-তাকালে কি হবে শুনি !! কি হবে ? আমাকে ব্যাখ্যা কর ! যদি আমার ট্রাষ্টই না থাকে তাহলে এসবের কি দরকার !
-আমি ট্রাষ্ট করি তো ! আমি ঐ সময়ে রেগে গিয়েছিলাম ! এই জন্য যা মুখে এসেছে বলেছি ! তারউপর তুমি আবার ঐ ওয়েটারের কথা বলে আমাকে আরো রাগিয়ে দিয়েছিলে !!
আমি একটু চুপ করলাম ! আসলেই ঐ ওয়েটারে কথা বলা বলা মনে হয় হটিক হয় নি ! যে কেউ রেগে যেতে পারে !
সাইরা বলল
-আমি ভেবেছিলাম তুমি বিকালে এসে আমাকে মানাবে ! আমার রাগ ভাঙ্গাবে ! কিন্তু তুমি কি করলে ?
আমি খানিক অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম সাইরা আসলেই কাঁদছে ! বেশ ভাল ভাবেই কাঁদছে ! চারিপাশের লোকজন কেমন করে যেন তাকাচ্ছে !আমি ব্যস্ত হয়ে বললাম
-আরে ঠিক আছে ! কাঁদতে হবে না ! আমরা কথা বলে ঠিক করি !
সাইরা আবার বলল
-এই কয়দিন আমি তোমাকে কি পরিমান মিস করেছি ! আমি কোনদিন কোন ছেলের সাথে রিলেশন করি নি ! আমার ইচ্ছায় বাবা তোমার বাবার কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেছে !
আমি সত্যি এবার খুব অবাক হলাম ! এটা কি সত্যি ?
-আর এটা খুব বেশি দোষের ? যদি তার পছন্দের মানুষ অন্য মেয়ের দিকে তাকায় যে কোন মেয়েই রেগে যেতে পারে !
-আচ্ছা ! আচ্ছা বাবা ! আমার ভুল হয়েছে ! ঠিক আছে ! চল এখান থেকে !
সাইরা ফুচকার প্লেট টা একপাশে সরিয়ে রাখল ! একটা ফুচকাও ও মুখে নেয় নি ।
বলল
-চলল ! এখন তুমি আমার সাথে কাজী অফিসে যাবে !
-এখন ?
-হ্যা ! এখন । আমি আর কোন রিস্ক নিতে চাই না । আমি রাগ করবো আর তুমি আমার রাগ ভাঙ্গানোর বদলে বিয়ে ভেঙ্গে দেবে ! তা হবে না ! চল এখনই চল! এখনই যেতে হবে !
-কিন্তু এখন ? এখন বিয়ে হবে কিভাবে ? বিয়ে করতে তো একটু প্রস্তুতি লাগে ? তার উপর সাক্ষী লাগবে না ? বিয়ের সা্ক্ষী পাবো কোথায় !
-ওটা নিয়ে তুমি চেনশন কর না ! মগবাজার কাজী অফিসে পাশে বিয়ের সাক্ষী সাপ্লাই কোম্পানী ! আছে ! ওখানে থেকে সব মেনেজ করা যাবে !
-কি কোম্পনী ? এরকম কোন কোম্পানী আছে নাকি ? গেলেই দেখবা ! চল এখন !
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না ! সাইরা আমাকে প্রায় জোর করে টানতে টানতে নিয়ে গেল !
আমি স্বাধীন ভাবে বাঁচার দিন মনে হয় শেষ হয়ে এল !!
(একটি নাটকের থেকে খানিকটা অনুপ্রানিত । খানিকটা ! যতসামান্য ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।