নিজেকে আদিবাসী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমাদের জাতিস্বত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই! কিন্তু আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার। পরাগ অপহরণের ঘটনা
‘মূল পরিকল্পনাকারী’ আমির গ্রেপ্তার
রাজধানী ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জে ছয় বছর বয়সী শিশু পরাগ মণ্ডল অপহরণের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ আমির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে টঙ্গী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, আমির ১৬ নভেম্বর থেকে টঙ্গীর মুদাফা এলাকার তিলারগাতি সিংবাড়ি রোডে সৌদিপ্রবাসী মো. মনিরের বাসায় ভাড়া আছেন—এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল রাতে সেখানে অভিযান চালায়।
আমিরের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে। বাসার দরজা খুলতে বললেও খোলেননি আমির। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় দরজা ভাঙতে গেলে ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে আমির দরজা খুলেই পুলিশকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়েন।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে আমির মাথার বাম দিকে কানের কাছে ও বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে টঙ্গী মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. শাহিন শেখের নেতৃত্বে আহত আমিরকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিত্সক শামসুননাহার তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ শনিবার সকালে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, আমিরের কাছ থেকে দুটি পিস্তল ও ৮৫টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমিরের স্ত্রী বিউটিকে আটক করেছে পুলিশ।
বাড়ির মালিকের স্ত্রী রানু প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গতকাল রাতে গোলাগুলির শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে।
দরজা খুলে তিনি দেখতে পান পাশের রুমে রক্তাক্ত অবস্থায় আমির পড়ে আছেন। পুলিশ বাড়ি ঘিরে রেখেছে। আমির তাঁদের পূর্বপরিচিত ছিলেন না বলে তিনি দাবি করেন।
টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন আমিরের গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন আরও জানান, শিশু পরাগ মণ্ডল অপহরণের ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি অপহরণের মামলা করা হয়।
মামলাটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশও তদন্ত শুরু করে। অপহরণের পর আমির আলী তাঁর কেরানীগঞ্জের বাসা থেকে পালিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায় ডিবি পুলিশ।
কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা পশ্চিম পাড়ার বাসার সামনে থেকে ১১ নভেম্বর সকালে মা লিপি মণ্ডল, বোন পিনাকী মণ্ডল ও গাড়িচালক নজরুল ইসলামকে গুলি করে শিশু পরাগকে অপহরণ করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এর তিন দিন পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে কেরানীগঞ্জের আটিবাজার এলাকায় মোটরসাইকেলে করে এনে প্রায় অচেতন অবস্থায় পরাগকে রেখে চলে যায় অপহরণকারীরা।
রাজধানীর পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিত্সাধীন থাকার পর ২২ নভেম্বর বিকেলে পরাগ সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যায়।
শিশু পরাগ অপহরণের ঘটনায় এ নিয়ে মোট ১১ জন গ্রেপ্তার হলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন অপরাধ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
(প্রথম আলোর অন লাইন নিউজ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।