যেভাবে ধরা পড়ল কোকো ও সায়মন।
৯-১১র টুইন টাওয়ার হামলার পর মার্কিন হোমল্যান্ড সিকুরিটি সংস্থা গঠিত হয়। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে তো বটেই, সাম্ভাব্য সকল সেক্টরেই শক্ত নজরদারি সুরু হয়ে যায়।
সন্ত্রাসিরা কোন কোন বৈধ চ্যানেলে অর্থ লেনদেন করে সেটাও মনিটরিং করা
সুরু হয়ে যায়। সকল দেশকে হুন্ডি এবং ব্যাঙ্কিং লেন দেন কঠিন ভাবে মনিটরিং করারন অনুরোধ করা হয়।
লেনদেনে উদার আইন যেসব দেশে আছে তাদের কে আইন সংশোধন করতে বলা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন গোয়েন্দারা নিজেরাই নজরদারি করে।
একপর্যায়ে দেখা যায় লিম ইউ চ্যাং নামে একজন ২০০৪ সালে সিঙ্গাপুর ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন (ব্যক্তি একাউন্ট) একাউন্টে ২.৫ মিলিয়ন ডলার এসেছে। যা আমেরিকায় রেজিস্টার্ড জার্মান সিমেন্স কোম্পানির পাঠানো। কিন্তু কোন সাপোর্টিং LC , ইনভয়েস, বা ভাউচার কিছুই নেই।
মার্কিন FBI এর অনুরোধে লেনদেনে উদার আইনের দেশ সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ তদন্ত সুরু করে। দেখা যায় মিঃ লিম ইউ চ্যাং এর একাউন্টটি সর্তসাপেক্ষ। অর্থাৎ টাকা উত্তলোন করতে হলে আরাফাত রহমান নামে এক ব্যাক্তির স্বাক্ষর লাগবে। সিংগাপুর, হংকং প্রভৃতি দেশের ব্যাংকিং ব্যাবস্থা যতেষ্ঠ উদার। এখানে টাকার সুত্র অস্পষ্ট থাওলেও ইনফো গোপন রাখা হয় গ্রাহকের স্বার্থে এবং ওয়েজ আর্নিং বৃদ্ধির স্বার্থে।
মার্কিন FBI এর অনুরোধে সিংগাপুর কতৃপক্ষ তদন্ত সুরু করে ও মামলা দায়ের হয়
কোকোর পাচার করা অর্থ রাখা এবং এ বিষয়ে দুর্নীতি তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে না জানানোর অপরাধে সিঙ্গাপুরের আদালত ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে লিম ইউ চ্যাংকে দোষী সাব্যস্ত করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়। এবং সমুদয় একাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ কারণে টাকা ফেরত আনা সহজ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সে সময় সিংগাপুর স্ট্রেইট টাইমস পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, অভিযুক্ত কোকোর সহযোগী লিম ইউ মূলত কোকোর আদেশ অনুযায়ী পাচার করা মুদ্রা ব্যাংকে নিজ নামের হিসাবে রেখেছিলেন। একই সঙ্গে অপরাধমূলকভাবে পাচার হওয়া ওই টাকার বিষয়টি তিনি গোপন করেন এবং তা পুলিশ বা কর্তৃপক্ষ বা করাপ্ট প্র্যাকটিস ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোকে জানাননি।
এ অপরাধে সিঙ্গাপুর আদালত তার একাউন্টের সমুদয় অর্থ বাজেয়াপ্ত করে তাঁকে নয় হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার জরিমানা করেন।
কাজ পেতে কোকোকে ঘুষ দেওয়ার এই ঘটনায় মার্কিন আদালতেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল সিমেন্স। এ জন্য তাদের পাঁচ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হয়। সিমেন্সের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে গত ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম আলোতেই প্রথম অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
"বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট রমনা কর্পোরেট শাখায় দুদকের
অ্যাকাউন্টে ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার এসেছে।
"
বাকি ৯ লাখ ৩২ হাজার ডলার ফেরত আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দুদকের তদন্ত টিম জানায়, ২০০৮ সালে তত্তাবধায়ক আমলে প্রথম অর্থপাচারের অনুসন্ধান শুরু হয়।
অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগের উপপরিচালক আবু সাঈদ এ বিষয়ে তদন্ত করেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী কোকোর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০০৯এর ৪
(২) ধারায় মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন।
১৭ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায়
মামলা দায়ের করা হয়। এর পর দুদক এ ঘটনার জোরালো তদন্ত করে। তদন্তে কোকোর সঙ্গে সায়মনের নাম আসায় দু`জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে আদালতে চার্জশিট দেয় দুদক।
মূলত চট্টগ্রাম বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণ এবং সরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি
টেলিটকের যন্ত্রাংশ কেনার সুবাদে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থই এই অ্যাকাউন্টে
রাখা হয়েছিল। খুব দ্রুত চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া নয় লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ মার্কিন ডলারও বাংলাদেশে ফিরে আসছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ পেতে চিনা প্রতিষ্ঠানটি কোকোকে ওই অর্থ ঘুষ দেয়।
এ ঘটনায় দুদকের উপপরিচালক আবু সাঈদ বাদী হয়ে ২০০৯ সালের মার্চে কোকো এবং সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী আকবর হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন সায়মনকে আসামি করে কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সিঙ্গাপুরের ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে কোকোর ওই হিসাব বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাংলাদেশ। দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে এ জন্য সমঝোতা সই হয়।
পরে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে ওই অর্থ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশের আদালতের ওই রায়ে কোকো ও সায়মনকে ছয় বছরের কারাদণ্ড এবং ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। মামলায় দুজনকেই পলাতক দেখানো হয়েছে।
Click This Link
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।