বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের পাহাড়সম অঢেল সম্পদের খবর জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্বস ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টানো। ৮ অক্টোবরের সংখ্যাটির কথাই ধরা যাক, এর প্রচ্ছদে জ্বলজ্বল করছে বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট ও অপরাহ উইনফ্রের ছবি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বের অন্যতম ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তি তাঁরা। কিন্তু পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে ম্যাগাজিনটির চলতি সংখ্যার (১৯ নভেম্বর, ২০১২) প্রচ্ছদে উঠে এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খান! খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সালমান অঢেল অর্থবিত্তের মালিক নন, খান একাডেমিও হাজার-কোটি ডলারের কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু গোটা পৃথিবীর শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর যে স্বপ্ন নিয়ে সালমান এগিয়ে চলেছেন, শেষ পর্যন্ত ফোর্বসও তার স্বীকৃতি না দিয়ে পারেনি।
কিন্তু পৃথিবীতে এত ধনকুবের থাকতে কেন সালমান খান? উত্তর মেলে ফোর্বস-এর অন্যতম সম্পাদক মাইকেল নোয়ারের কাছে। তিনি জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউতে অবস্থিত পুরোনো একটি ভবন এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্কুলে পরিণত হয়েছে বললে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। এই স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা এরই মধ্যে এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যদিও স্কুলটি চালাচ্ছেন সর্বসাকল্যে ৩৭ জন। আর এই ৩৭ জনের দলটির মধ্যমণি হচ্ছেন সালমান খান। বলাই বাহুল্য, সেই ‘স্কুল’টি খান একাডেমি।
এই খান একাডেমিকে নিয়েই ফোর্বস-এর এবারের প্রচ্ছদকাহিনি, যার শিরোনাম হলো, ‘একজন মানুষ, একটি কম্পিউটার, ১০ মিলিয়ন শিক্ষার্থী: কীভাবে খান একাডেমি শিক্ষাকে আমূল বদলে দিচ্ছে। ’
ফোর্বস ম্যাগাজিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালমান বলেন, ‘আমি দিব্যি খান একাডেমিকে একটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারতাম। হয়তো আমি ১০০ কোটি মানুষের কাছে ভিডিওগুলো বিক্রি করে দিতাম। কিন্তু তারপর? আজ থেকে ৫০ বছর পর কী হতো? কিছু কি আদৌ বদলাত?’
মুনাফা নয়, শত শত বছর ধরে চলে আসা শিক্ষাপদ্ধতি বদলে দেওয়াই সালমান খানের লক্ষ্য।
খান একাডেমির জনপ্রিয়তা এখন এতই বেশি যে গত দুই বছরে প্রায় ২০ কোটি বার ওয়েবসাইট থেকে ভিডিওগুলো দেখা হয়েছে।
প্রতি মাসে প্রায় ৬০ লাখ শিক্ষার্থী ভিড় জমাচ্ছে ওয়েবসাইটটিতে। স্বেচ্ছাসেবকেরা ২৪টি ভাষায় ভিডিওগুলোর অনুবাদ করছেন।
ফেসবুক ও টুইটারের প্রথম দিকের বিনিয়োগকারীদের একজন, রুশ পদার্থবিদ ইউরি মিলনার বলেন, ‘সালমানই পৃথিবীর প্রথম সুপারস্টার শিক্ষক। ’
যে প্রতিষ্ঠানটি কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শেখার পদ্ধতিটাই বদলে দিয়েছে, মাত্র দুই বছর আগেও তা ছিল স্টাডিরুমে একা একা বসে কাজে নিমগ্ন থাকা একজন মানুষের স্বপ্ন। তবে এখন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পালা।
সম্প্রতি দি ওয়ান ওয়ার্ল্ড স্কুলহাউস নামের সালমানের লেখা একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। খান একাডেমির পাশাপাশি এতে উঠে এসেছে আগামী দিনের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাঁর বৈপ্লবিক চিন্তাভাবনা। পরীক্ষায় গ্রেডিং সিস্টেমের ব্যাপারটিই তিনি উঠিয়ে দিতে চান। এর বদলে তাঁর প্রস্তাবনা হলো, গুণগত দিককে প্রাধান্য দিয়ে সারা বছর ধরে ধীরে ধীরে মূল্যায়নের একটি নতুন পদ্ধতি চালু করা, যাকে তিনি বলছেন ‘রানিং মাল্টি ইয়ার ন্যারেটিভ’।
এসব কিছুই এখন স্বপ্ন।
এগুলো বাস্তবে পরিণত হতে কত দিন লাগবে, কেউ জানে না। বাস্তববাদী ও ঝানু ব্যবসায়ীরাও কিন্তু এই স্বপ্নগুলোকে হেসে উড়িয়ে দিতে পারছেন না। তাঁদেরই একজন যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা বিনিয়োগকারী-প্রতিষ্ঠান জিএসভি ক্যাপিটালের সিইও মাইকেল মো। তিনি বলেন, ‘হয়তো সালমান এই মুহূর্তে শিক্ষাক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি, আর এর সবকিছুই ঘটে গেছে মাত্র দুই বছরে। তিনি একটি বিপ্লব সৃষ্টি করতে চলেছেন।
আমার কেবল একটি বিষয়েই খটকা লাগে; তাহলো, তাঁর কাজ তিনি কোনো একটি লাভজনক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারতেন। ’
ব্যবসা কিংবা লাভের প্রশ্নে সালমান তাঁর অবস্থানে অনড়। ‘বিলিয়নিয়ার হওয়াটা এখন পুরোনো ফ্যাশন হয়ে গেছে! মজার ব্যাপার হলো, আমি যখন প্রথমদিকে লোকজনকে খান একাডেমির সম্ভাবনা ব্যাখ্যা করতাম, তখন আমি বলতাম, এটি যদি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান না হয়ে কোনো ব্যবসা হতো, তাহলে আমি ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে থাকতাম!’
সত্যিই অদ্ভুত! মাত্র দুই বছর পর আজ ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে তাঁর ছবি শোভা পাচ্ছে।
প্রথম আলোকে সালমান
প্রথম আলোকে লেখা এক ই-মেইল বার্তায় সালমান বলেন, ‘ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে নিজের ছবি দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেছি। আমি জানতাম, খান একাডেমি নিয়ে একটি লেখা ছাপাবে তারা, কভার স্টোরি হতে পারে, এমন কথাও কানে এসেছিল দু-একবার।
কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম, শেষ পর্যন্ত প্রচ্ছদে কোনো বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক কোম্পানির সিইও কিংবা বিলিয়নিয়ারের ছবিই আসবে। অঢেল ধনসম্পদের মালিক না হয়ে ফোর্বস-এর কাছে পাত্তা পাওয়া প্রায় অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল আমার। খান একাডেমির মতো অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে যে ফোর্বস এতখানি গুরুত্ব দিয়েছে, এটি সত্যিই দারুণ আনন্দের ও সম্মানের বিষয়!’
ফোর্বস ম্যাগাজিনের অনলাইন সংস্করণ অবলম্বনে লিখেছেন অঞ্জলি সরকার View this link বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের পাহাড়সম অঢেল সম্পদের খবর জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্বস ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টানো। ৮ অক্টোবরের সংখ্যাটির কথাই ধরা যাক, এর প্রচ্ছদে জ্বলজ্বল করছে বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট ও অপরাহ উইনফ্রের ছবি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বের অন্যতম ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তি তাঁরা।
কিন্তু পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে ম্যাগাজিনটির চলতি সংখ্যার (১৯ নভেম্বর, ২০১২) প্রচ্ছদে উঠে এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খান! খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সালমান অঢেল অর্থবিত্তের মালিক নন, খান একাডেমিও হাজার-কোটি ডলারের কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু গোটা পৃথিবীর শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর যে স্বপ্ন নিয়ে সালমান এগিয়ে চলেছেন, শেষ পর্যন্ত ফোর্বসও তার স্বীকৃতি না দিয়ে পারেনি।
কিন্তু পৃথিবীতে এত ধনকুবের থাকতে কেন সালমান খান? উত্তর মেলে ফোর্বস-এর অন্যতম সম্পাদক মাইকেল নোয়ারের কাছে। তিনি জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউতে অবস্থিত পুরোনো একটি ভবন এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্কুলে পরিণত হয়েছে বললে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। এই স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা এরই মধ্যে এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যদিও স্কুলটি চালাচ্ছেন সর্বসাকল্যে ৩৭ জন।
আর এই ৩৭ জনের দলটির মধ্যমণি হচ্ছেন সালমান খান। বলাই বাহুল্য, সেই ‘স্কুল’টি খান একাডেমি। এই খান একাডেমিকে নিয়েই ফোর্বস-এর এবারের প্রচ্ছদকাহিনি, যার শিরোনাম হলো, ‘একজন মানুষ, একটি কম্পিউটার, ১০ মিলিয়ন শিক্ষার্থী: কীভাবে খান একাডেমি শিক্ষাকে আমূল বদলে দিচ্ছে। ’
ফোর্বস ম্যাগাজিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালমান বলেন, ‘আমি দিব্যি খান একাডেমিকে একটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারতাম। হয়তো আমি ১০০ কোটি মানুষের কাছে ভিডিওগুলো বিক্রি করে দিতাম।
কিন্তু তারপর? আজ থেকে ৫০ বছর পর কী হতো? কিছু কি আদৌ বদলাত?’
মুনাফা নয়, শত শত বছর ধরে চলে আসা শিক্ষাপদ্ধতি বদলে দেওয়াই সালমান খানের লক্ষ্য।
খান একাডেমির জনপ্রিয়তা এখন এতই বেশি যে গত দুই বছরে প্রায় ২০ কোটি বার ওয়েবসাইট থেকে ভিডিওগুলো দেখা হয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় ৬০ লাখ শিক্ষার্থী ভিড় জমাচ্ছে ওয়েবসাইটটিতে। স্বেচ্ছাসেবকেরা ২৪টি ভাষায় ভিডিওগুলোর অনুবাদ করছেন।
ফেসবুক ও টুইটারের প্রথম দিকের বিনিয়োগকারীদের একজন, রুশ পদার্থবিদ ইউরি মিলনার বলেন, ‘সালমানই পৃথিবীর প্রথম সুপারস্টার শিক্ষক।
’
যে প্রতিষ্ঠানটি কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শেখার পদ্ধতিটাই বদলে দিয়েছে, মাত্র দুই বছর আগেও তা ছিল স্টাডিরুমে একা একা বসে কাজে নিমগ্ন থাকা একজন মানুষের স্বপ্ন। তবে এখন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পালা। সম্প্রতি দি ওয়ান ওয়ার্ল্ড স্কুলহাউস নামের সালমানের লেখা একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। খান একাডেমির পাশাপাশি এতে উঠে এসেছে আগামী দিনের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাঁর বৈপ্লবিক চিন্তাভাবনা। পরীক্ষায় গ্রেডিং সিস্টেমের ব্যাপারটিই তিনি উঠিয়ে দিতে চান।
এর বদলে তাঁর প্রস্তাবনা হলো, গুণগত দিককে প্রাধান্য দিয়ে সারা বছর ধরে ধীরে ধীরে মূল্যায়নের একটি নতুন পদ্ধতি চালু করা, যাকে তিনি বলছেন ‘রানিং মাল্টি ইয়ার ন্যারেটিভ’।
এসব কিছুই এখন স্বপ্ন। এগুলো বাস্তবে পরিণত হতে কত দিন লাগবে, কেউ জানে না। বাস্তববাদী ও ঝানু ব্যবসায়ীরাও কিন্তু এই স্বপ্নগুলোকে হেসে উড়িয়ে দিতে পারছেন না। তাঁদেরই একজন যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা বিনিয়োগকারী-প্রতিষ্ঠান জিএসভি ক্যাপিটালের সিইও মাইকেল মো।
তিনি বলেন, ‘হয়তো সালমান এই মুহূর্তে শিক্ষাক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি, আর এর সবকিছুই ঘটে গেছে মাত্র দুই বছরে। তিনি একটি বিপ্লব সৃষ্টি করতে চলেছেন। আমার কেবল একটি বিষয়েই খটকা লাগে; তাহলো, তাঁর কাজ তিনি কোনো একটি লাভজনক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারতেন। ’
ব্যবসা কিংবা লাভের প্রশ্নে সালমান তাঁর অবস্থানে অনড়। ‘বিলিয়নিয়ার হওয়াটা এখন পুরোনো ফ্যাশন হয়ে গেছে! মজার ব্যাপার হলো, আমি যখন প্রথমদিকে লোকজনকে খান একাডেমির সম্ভাবনা ব্যাখ্যা করতাম, তখন আমি বলতাম, এটি যদি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান না হয়ে কোনো ব্যবসা হতো, তাহলে আমি ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে থাকতাম!’
সত্যিই অদ্ভুত! মাত্র দুই বছর পর আজ ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে তাঁর ছবি শোভা পাচ্ছে।
প্রথম আলোকে সালমান
প্রথম আলোকে লেখা এক ই-মেইল বার্তায় সালমান বলেন, ‘ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে নিজের ছবি দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেছি। আমি জানতাম, খান একাডেমি নিয়ে একটি লেখা ছাপাবে তারা, কভার স্টোরি হতে পারে, এমন কথাও কানে এসেছিল দু-একবার। কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম, শেষ পর্যন্ত প্রচ্ছদে কোনো বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক কোম্পানির সিইও কিংবা বিলিয়নিয়ারের ছবিই আসবে। অঢেল ধনসম্পদের মালিক না হয়ে ফোর্বস-এর কাছে পাত্তা পাওয়া প্রায় অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল আমার। খান একাডেমির মতো অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে যে ফোর্বস এতখানি গুরুত্ব দিয়েছে, এটি সত্যিই দারুণ আনন্দের ও সম্মানের বিষয়!’
ফোর্বস ম্যাগাজিনের অনলাইন সংস্করণ অবলম্বনে লিখেছেন অঞ্জলি সরকার View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।