আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : আন্দোলনকারীদের দমনের নীল নকশা !!!

দৃশ্যপট-১ গতকাল, বৃহ:স্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে জামাত-শিবির বিরোধী একটি মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল । দুপুর আনুমানিক, সাড়ে বারটা; মিছিলের জন্য ব্যানার লেখা হচ্ছিল। “সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করো” এই দাবিটি লেখার পর “যুদ্ধাপরাধী.....................” । লেখা শেষ করা যায়নি। তার আগেই ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলা ।

ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা,গবেষণা ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রুদ্র মোস্তফাকে “শিবির” আখ্যা দিয়ে বেধড়ক মার শুরু করল ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। নেতৃত্বে সভাপতি শরিফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম স্বয়ং । কিছু বুঝার আগেই রুদ্রের ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরতে লাগল । ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের ঘুষি তার মুখে আঘাত করে । জীবন বাঁচাতে দৌড়ে নাগালের বাইরে যেতে চাইলেন রুদ্র।

কিন্তু ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে তাকে ধাওয়া করল জনা পঞ্চাশেক সন্ত্রাসী । শরিফুল ইসলাম দৌড়ে গিয়ে পিছন থেকে ঝাপটে ধরলেন রুদ্রকে । এই অবস্থায় নিজেদের করণীয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছাত্রলীগ কর্মীরা রুদ্রকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে কোনই কার্পণ্য করলেন না । রুদ্রকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি ফারুক আহমেদ আবিরও রেহাই পাননি। রুদ্রকে “শিবির” আখ্যা দেয়া হল, অত:পর কুকুর-বেড়ালের মত মারা হল।

এর পরের ধাপে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল প্রক্টর অফিসে । তাকে পুলিশে তুলে দেওয়া হবে। একজন চঞ্চল কুমার বোস। বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান । প্রিয় ছাত্র রুদ্রকে তারই আরেক ছাত্র শরিফুল ইসলামসহ অন্য গুণ্ডাদের হাতে মার খাওয়া থেকে বাঁচাতে না পারলেও পুলিশে তুলে দিতে দিলেন না।

প্রক্টর অফিসে ছুটে গিয়ে রক্ষা করলেন রুদ্রকে । রুদ্র “শিবির” নয় বরং ছাত্র ইউনিয়ন এর নেতা- একথা ছাত্রলীগ ,প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ভাল করেই জানেন । কিন্তু তবু চঞ্চল স্যার আসার আগ পর্যন্ত তাকে “শিবির” চিহ্নিত করার আয়োজন প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল । "সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করো / যুদ্ধাপরাধী..."। এইটুকু লেখার পর হামলা হয় দৃশ্যপট-২ গত ২০ অক্টবর ছিল সপ্তম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ র্যা লী ব্যাতীত কেন্দ্রীয়ভাবে আর কোন অনুষ্ঠানাদিার আয়োজন করেনি। সেদিন শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে যাতে যোগ দেয় বিশ্বিদ্যালয় শাখার উদীচী । বিশ্ববিদ্যালয়ে আগত প্রায় সকল শিক্ষার্থী সেদিন ঐ অনুষ্ঠানস্হলে জড়ো হন এবং বিকাল চারটা পর্যন্ত অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। কিন্তু অনুষ্ঠান চলাকালে অনুষ্ঠানস্হল লক্ষ্য করে একেরপর এক বাজি-পটকা নিক্ষেফ করে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আর উল্লেখ না করলাম।

এসব করেও তারা অনুষ্ঠান পন্ড করতে না পরে হঠাৎ করে দর্শক সারি থেকে একটি ছেলেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে মারতে থাকে । এসময় অনেক ভয়ে এদিক সেদিক পালাতে থাকে । কিন্তু সাথে সাথে কয়েকজ ন শিক্ষক এসে ছেলেটিকে উদ্ধার করলেও হামলাকারীদের কোন শাস্তি হয়নি। বাজি-পটকার তীব্র শব্দ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন এক শিক্ষার্থী । দৃশ্যপট -৩ ঠিক আকে সপ্তাহ আগে অর্থাৎ গত বৃহ:স্পতিবার রাতে ক্যাম্পাসে পোষ্টার সাঁটতেছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কয়েকজন কর্মী ।

এসময় উপস্হিত ছিলেন ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শরিফুল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির মোরশেদ । রাত প্রা্য় সাড়ে এগরাটা। হঠাৎ করে ছাত্রলীগের কয়েজন কর্মী এসে পোষ্টার লাগাতে বাধা দেন। শুরু হয় বাকবিতন্ডা । এক পর্যায়ে তারা মারধর শুরু করে শরিফুল চৌধুরীসহ অন্যান্যদের।

মাথা ফেটে যায় তার। কিন্তু এতেই শেষ নয় । মোর্শেদ ও আরেক কর্মী রাজীবকে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্রলীগ কর্মীরা এবং পরদিন দুপুর বারটা পর্যন্ত তাদেরে ক্যাম্পাসে রাতের বেলা গাঁজা সেবনের অবিযোগে আটক রাখা হয়। এসময় প্রক্টর অশোক কুমারের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায় । ফোন খুললেও শুক্রবারও তিনি ফ্রন্ট নেতাদের ফোন রিসিভ করেননি।

বলা বাহুল্য লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও সে ঘটানার সাথে জড়িতদের কোন সাজা হয়নি। দৃশ্যপট- ৪ গত ১৬ অক্টোবর একটি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম: উপাচার্যের গাড়ি বিলাস, অথর্কান্ড” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । এই প্রতিবেদনে উঠে আসে বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয় , ভর্তি পরীক্ষার টাকা নিয়ে ব্যপক অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য । রিপোর্টটি প্রকাশিত হবার দিন তাৎক্ষনিকভাবে ভিসির দুর্নুতীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা । সেই মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল বাম ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

কিন্তু এর পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় ঈদ-পূজার ছুটিতে বন্ধ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখ থেকে আপাতত রেহাই পান দুর্নীতিবাজ উপাচার্য । তবে তার ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে আরো বেশি করে চলে আসেন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা । মিছিলের সর্ববামে রুদ্র মোস্তফা , সাদা শার্ট পরিহিত-শরিফুল চৌধুরী, মাঝে ফারুক আহমেদ আবির দৃশ্যপট-৫ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে খাবারের দাম কমানো, ক্যান্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে নেয়াসহ কয়েকটি দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দেয় গত ৮ সেপ্টেম্বর । আন্দোলনের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ ও প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে ১৩ সেপ্টেম্বর ক্যান্টিন বয়কটের মত কঠোর কর্মসূচী সফলভাবে পালন করে ছাত্র ইউনিয়ন। ছাত্র ইউনিয়নের এই কর্মসূচীর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ উল্লেখ করার মত ।

এরই প্রেক্ষিতে ১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে বৈঠকে বসেন উপাচার্য । সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় পহেলা অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করবে ক্যান্টিনটি। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে শিক্ষার্থীরা। কারণ ক্যান্টিনটি ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা পরিচালনা করে আসছিলেন এবং আকাশ ছোঁয়া দামে অখাদ্য-কুখাদ্য গ্রহণ করতে হচ্ছিল সেখানে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এতে ভর্তুকিও দিয়ে আসছিল।

দৃশ্যপট-৬ পহেলা অক্টোবর থেকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ক্যান্টিন পরিচালনা করার কথা থাকলেও কার্যকর করা হয় ১১ নভেম্বর থেকে । কেন এত দিন দেরি হল ! কারণ যিনি ক্যান্টিন পরিচালনা করে আসছিলেন তার রাজনৈতিক প্রভাব অনেক। যাইহোক এই সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের তরফ থেকে দফায় দফায় কর্তৃপক্ষের সাথে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হয়। ক্যান্টিন মুনাফালোভীদের থেকে মুক্ত হবার পর প্রথম দিন থেকেই পূর্বেকার তুলনায় অনেক কম দামে খাবার সরবরাহ করে প্রশাসন । সকালে ১০ টাকা ও দুপুরে ২০ টাকার মধ্যেই খাবার সরবরাহ করা হয়।

কিন্তু এই দামেও খাবার গ্রহণ করতে অপারগ ছিল একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা । নিজেদের জন্য দৈনিক ২০০ প্লেট ফাও খাবার এর দাবি করেন তারা । কিন্তু ক্যান্টিন পরিচালনার জন্য কমিটির আহ্বায়ক, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমেদ তাতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ক্যান্টিন থেকে জোর করে বের করে দেয় তারা । অবশেষে চালু হবার দ্বিতীয় দিনই (১২ নভেম্বর) নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে ক্যান্টিন বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন । ১৩ তারিখ শ্যামাপুজোর ছুটির পর ১৪ তারিখ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়ন ।

দাবি ছিল , ক্যান্টিন অবিলম্বে খুলে দিতে হবে। সময় বেধে দেয়া হয় ২৪ ঘণ্টা। বৃহ:স্পতিবারের মধ্যে ক্যান্টিন না চালু হলে রবিবার থেকে জোরদার আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয় । কিন্তু বৃহ:স্পতিবারেই জামাত-শিবির বিরোধী একটি মিছিল শুরুর আগে ফাও খাওয়ার আবদারকারীদের দ্বারা হামলার শিকার হন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা-কর্মীরা । বুধবার(১৪নভেম্বর) এর মিছিলেও সামনের সারিতে(মাঝে, সাদাকালো স্ট্রাইপ টি-শার্ট)রুদ্র মোস্তফা।

দৃশ্যপট -৭ এতক্ষণকার বক্তব্য শুনার পর আপনাদের মনে হতে পারে সুধুমাত্র ছাত্রলীগের বিরুদ্ধ লেখার জন্যই আমি এই ব্লগটি লিখছি । কিন্তু এখন যা বলব তা সারাদেশে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তী(!)কে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়েগিয়েছিল। এবং এই কাজটি করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতারা । গত ১৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের নবনির্বাচিত কমিটিকে ক্যাম্পাসে মিষ্টি দিয়ে বরণ করেন তারা। সারাদেশে ছাত্রলীগ-দলে সংঘর্ষ বেধে থাকলেও জবিতে এরা মাসতুতো ভাই।

পরিশেষ : গত বছর ২৭/৪ ধারা বাতিলের আন্দোলন ,চলতি বছরের শুরুর দিকে উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতৃত্বে সফল আন্দোলনসহ সাম্প্রতিক সময়ে ক্যান্টিন নিয়ে বাম-প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো দিনকে দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থীদের আস্হা অর্জন চলেছে । অন্যদিকে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির ঘটনায় কাগজে শিরোনাম হচ্ছে ছাত্রলীগ । সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের ফাও খাওয়ার প্রবণাতার জন্য সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে দুইবার ক্যান্টিন বন্ধ করে প্রশাসন। যার ফলে একদিকে বাম-প্রগতিশীল সংগঠনগুলো দিনকেদিন শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয় হচ্ছে এবং অন্যদিকে ছাত্রলীগ হারাচ্ছে তাদের নূন্যতম ভবমূর্তী । সদ্যই অষ্টম বছরে পা দেয়া এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এমনকি ভিসি’র দুর্নীতির বিভিন্ন অধ্যায় সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে উন্মোচিত হয়েছে ।

এককথায় এখানকার ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের দৈরাত্ম এবং প্রশাসনের দুর্নীতির মোকাবেলায় যারা সোচ্চার তাদেরকে দমন করার এক নীল নকশার অংশ হিসেবেই সাম্প্রতিক সময়ের এই হামলার ঘটনাগুলো ঘটছে বলে প্রতীয়মান হয়। কারণ শোনা যাচ্ছে জবি;র দুর্নিতী পরায়ণ ভিসিকে আরেক মেয়াদে রাখার জন্য খুব তৎপর তার অনুগত ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃবৃন্দ। ক্যান্টিন নিয়ে আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সোচ্চার ব্যক্তিটি রুদ্র মোস্তফা । এবং মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে রুদ্র অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বুধবার রাতে ফেসবুকে পোষ্ট করা তার একটি কবিতা দিয়ে এই লেখাটি শেষ করব ।

তার আগে কিছু আক্ষেপের কথা বলে নেয়া সমীচীন মনে করছি । অধিকাংশ সময়েই ক্ষমতাসীন সংগঠনের অন্ত:কোন্দলের ঘটনায় সৃষ্ট মারামারির ঘটনায় পত্রিকার শিরোনাম হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় । এছাড়াও আন্দোলনের সময়ও প্রচার মাধ্যমের নজরে আসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ক্যান্টিন নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের আন্দোলনের খবরাখবর প্রচারে সংবাদ মাধ্যমে চরম উদাসীনতা লক্ষণীয়। এমনকি ছাত্রলীগের ফাও খাবার আবদার রক্ষা করতে না পেরে ক্যান্টিন বন্ধ করে দেয়ার ঘটনাও এড়িয়ে যায় দেশের শীর্ষস্থানীয় অনেক সংবাদ মাধ্যম।

গতকালে ঘটনাও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে । এভাবে ছাত্র রাজনীতির অশুভ ধারাকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে এবং অন্যদিকে আদর্শিক ধারাকে অনুৎসাহিত করা হচ্ছে । অন্ধদখলদার রুদ্র মোস্তফা বাবা রেখে গেছে মসনদ স্বামী রেখে গেছে গদি উত্তরাধিকার সূত্রে শ্রদ্ধাটাও থাকে যদি গুদামের চাল আর প্রজাদের মাল ওপারের বিল আর এপারের খাল জলের মাছ আর ডাঙার গাছ প্রজাদের পুঁজি আর মজুরের রুজি উত্তরাধিকার সূত্রে থাকে যদি তবে কে চায় রক্ত কে বলে শাসন শক্ত? খবর এসেছে মসনদে গুদামের চাল আর মসুরের ডাল দোকানের কেরোসিন আর আরতের ঢেউটিন গাছের ফল আর নদীর জল হাড় হাভাতের দল ওরা সবকিছুর চায় দখল । ভাবে শাসক সবকটা প্রবঞ্চক রাজ্যের সবকিছুই তার বাপ দাদার হক নির্দেশ করে তাই শাসক প্রিয় নির্দেশ পালক আর হয়ে থেকো না সুবোধ বালক হাতে নাও চাবুক ওরা একটু ভাবুক তাও যদি না হয় কাজ মাথায় ফাটাও বাজ হাতে তুলো বন্দুক খুলছি সিন্ধুক লাগে যত নাও টাকা প্রয়োজনে হও বাঁকা ঝরাও বিদ্রোহীদের রক্ত নিন্দুকদের দেখিয়ে দাও কে বলে শাসন শক্ত ? ওরা প্রজা ওরা জনগণ ওরা শুধু ঠকে পায় না শাসকের মন ওরা নির্যাতিত ওরা অবহেলিত ওরা ওদের টাকায় অন্যের কাছে প্রতিপালিত তাই ওরা ভাবে সদা বাপ দাদা পর দাদা পায়ে মেখেছে অনেক কাদা কঠিন মাটি চষে আঘাত পেয়েছে কষে পায়নি ফসলের ন্যায্য হিসেব । শূন্য হাতে তবু তারা চালিয়েছে রক্তের কারবার অন্ধতীরন্দাজ হয়ে ছুড়েছে তীর বারবার শরীরের ঘামে আর দেহের কামে তবু ওদের বিদ্রোহ উঠেছে জমে গণতন্ত্রের পথে শাসকের হাতে শোষণের রথে ওরা স্বপ্ন দেখে তবু বাঁচবার ওরা অন্ধদখলদার ওরা অন্ধতীরন্দাজ।

________________________ রুদ্র মোস্তফা এই কবিতাটি বুধবার(১৪ নভেম্বর) রাতে ফেসবুকে পোষ্ট করেন এবং এর পরদিনই তার উপর হামলা করে ছাত্রলীগ। ক্যান্টিন নিয়ে প্রথম দফা আন্দোলনের সময় গত ১০ সেপ্টেম্বর সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন রুদ্র। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.