আমার ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। সকলের জীবন সুন্দর ও সুখী হোক। সকলকে ধন্যবাদ। মাজেদুল নয়ন; স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) চার শিক্ষকের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে।
গত মঙ্গলবার দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব চালানোর সময় রাজধানীতে আটক শিবিরকর্মী বুয়েট ছাত্র শফিকুল ইসলামের কম্পিউটার, ফেসবুক, ই-মেইল ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে জামায়াত-শিবিরের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের প্রমাণ পাওয়া যায়।
গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বুয়েটে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় নিজেদের ‘সাধারণ শিক্ষক‘ বলে দাবি করলেও শিবিরের সঙ্গে তিনজন শিক্ষকের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে জামায়াত নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে মৌচাক থেকে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র শফিকুল ইসলামকে শিবির ক্যাডার হিসেবে আটক করে রমনা থানা পুলিশ।
এরপর মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় বুয়েটের সোহরাওর্য়াদী হলের ২০০৮ নং কক্ষে শফিকুলের অবস্থানে তল্লাশি চালায় বূয়েটের শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ২০১১ নং কক্ষও তল্লাশি চালানো হয়। কক্ষ দুটি থেকে বিপুল পরিমাণ জেহাদি বই, পুস্তক, সিডি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা কম্পিউটার ও একটি ডায়েরি থেকে বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য।
ডায়েরিতে বুয়েটে শিবিরের কর্মকাণ্ডের একটি ছক পাওয়া যায়। শিবির ক্যাডারদের নাম, তাদের ছদ্ম নাম, মেইল ও ফেসবুক আইডি এবং তার গোপন পাসওয়ার্ডসহ নানা তথ্য প্রমাণ রয়েছে ডায়েরিতে। পাসওয়ার্ড ও ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করলে বুয়েটে জামায়তপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ ও কর্মকাণ্ডের আলাপচারিতা পাওয়া যায়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা শিক্ষক আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষকের ব্যানারে জামায়াতের শিক্ষকদের অংশগ্রহণে প্রমাণও মিলেছে।
শফিকুল ইসলামের ফেসবুক আইডি ও মেইল আইডি’তে প্রবেশ করে দেখা যায়, জামায়াতী শিক্ষকরা তাকে মেইল, ফেসবুক ও চিঠি দিয়ে গত আন্দোলনে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন।
শফিকুলের মেইল ও ফেসবুকে শিবিরদের পরামর্শ, নির্দেশনা ও অর্থনৈতিক যোগান দিতে দেখা গেছে জামায়াতি শিক্ষকদের। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মাহবুব রাজ্জাকের সঙ্গে শিবিরের সার্বক্ষণিক যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দেখা যায়, আন্দোলন নিয়ে কথোপকথনের এক পর্যায়ে মাহবুব রাজ্জাক শফিকুল ইসলামকে বলছেন, “সালাম স্যার। কিন্তু আপনার লাস্ট আপডেটের প্রথম লাইনটা নিয়ে একটু সন্দেহ আছে।
আমি জাহাঙ্গীর স্যারের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেন, স্যার কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিষয়টা একটু পরিষ্কার করুন। ”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ড. জাহাঙ্গীর আলম সিভিল বিভাগের শিক্ষক। শফিকুল বলছেন, “সামনে ভিসি অফিস ঘেরাও কর্মর্সূচি আসছে।
আর আমি ছাত্র শিবিরের হল কমিটির জন্য আবেদন করেছি। ”
বুয়েটে সিভিল শিক্ষক স্নিগ্ধা আফসানার সঙ্গেও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় শিবিরের। ফেসবুকের এক আলাপচারিতায় তিনি শফিকুলকে বলেন, “শফিকুল, তোমরা কালকে যেসব বই বিতরণ করতে চাচ্ছো সেগুলোর নাম একটু আমাকে জানিও। আমি একটা বই প্রপোজ করতে চাই সেটা হলো ‘প্রত্যেক মুসলিমের যেসব বিষয় জানা একান্ত কর্তব্য। ’ যদি এই বইটা দিতে চাও আমাকে জানালে আমি ব্যবস্থা করতে পারবো।
আর কোনো ফাইনান্সিয়াল সাপোর্ট লাগলে প্লিজ অবশ্যই আমাকে জানাবে। আল্লাহ আমাকে যতটুকু তৌফিক দিয়েছেন তার মধ্যে কন্ট্রিবিউট করব- ইনশাল্লাহ, স্নিগ্ধা। ”
এই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আরেকটি আলাপচারিতায় স্নিগ্ধা বলেছেন, “তোমরা তো আমারে প্যাঁচের মধ্যে ফেলে দিলা। আসলে আমি প্রচার থেকে দূরে থাকতে চাই। যে জন্য মিডিয়ার সামনে কোনো সাক্ষাৎকার দেই না।
তোমার রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করলাম। ”
উদ্ধার করা ডায়েরিতে শিবিরকে শিক্ষকদের আর্থিক সহযোগিতারও প্রমাণ মিলেছে। এতে উল্লেখ রয়েছে, “জাহাঙ্গীর স্যার ১০০০। মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষক মো: আলী স্যার ৫০০ টাকা। ”
এ শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে ড. জাহাঙ্গীর আলম শনিবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, “এক শিক্ষার্থীর অ্যাডভাইজার ছিলাম আমি।
অ্যাডভাইজার মানে হচ্ছে, তার অভিভাবকের মতো এ চার বছরের দায়িত্ব আমার। ”
তিনি বলেন, “তার সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। তবে সে খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তবে নিজের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে কোনো মত দিতে চাননি এ শিক্ষক। ” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।