আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যাংক ড্রাফটের ফাঁদে চাকরি প্রার্থীরা

গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাংক ড্রাফটের ফাঁদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চাকরিপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষ। নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই আবেদনপত্রের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত অর্থের ব্যাংক ড্রাফট চাওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগের পাহাড় জমছে। কিন্তু, তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না।

ইতিমধ্যেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সময় নানা পদক্ষেপ নিতে বললেও সে দিকে নজর দিচ্ছে না বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শ আমলে নিতে নারাজ ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পারতপক্ষে ব্যাংক ড্রাফট বাবদ কোনো টাকা আদায় না করতে বলা হয়। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেহেতু একটি বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় হয়, সেহেতু যতোটা কম সম্ভব ততো টাকা নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়।

কিন্তু ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট চাওয়া হচ্ছে, যা বহন করা বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে সর্বশেষ অভিযোগ করেছেন সদ্য স্নাতোকোত্তর পাস করা ছয়জন যুবক। অভিযোগকারীরা হলেন, এমবিএ ডিগ্রিধারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডলার কুমার রায়, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইকরাম হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসানুল আজম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজীব ঘোষ ও ইয়াসিন। অভিযোগপত্রে বিশেষ করে এনসিসি ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থের ব্যাংক ড্রাফট চাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ব্যাংক ড্রাফট বাবদ যে টাকা আদায় করা হচ্ছে তার দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ চাকুরিপ্রার্থীর।

তাছাড়া সিজিপিএ’র ক্ষেত্রেও যে পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে, তাও অনেক ক্ষেত্রে ভোগান্তির কারণ হচ্ছে। আবেদনে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করার পাশপাশি ব্যাংক ড্রাফট্ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার খরচ মেটাতে ৪০০/৫০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট্ নির্ধারণের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের আয়ের আর একটি উৎস বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। মাত্রাতিরিক্ত ব্যাংক ড্রাফট্ বাবদ অর্থ আদায় সম্পর্কে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কারণ ও অন্যান্য তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিলো।

চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে জানানো হয় যে, নিয়োগ প্রক্রিয়া ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডে ব্যাংকগুলোর অনেক অর্থ ব্যয় হয়। এতে প্রচুর লোকসান গুণতে হয়। এই ব্যাংক ড্রাফট্ আরো কমানো হলে বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লোকসানের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, অন্য এক তথ্য। মূলত চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন করা থেকে নিরুৎসাহিত করার জন্যই ব্যাংক ড্রাফট্ বাবদ এতো টাকা আদায় করা হয়।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন এবিবি’র সভাপতি মো. নুরুল আমীন। তিনি বলেন, বছরে কয়েক বার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ব্যাংক ড্রাফটের ব্যবস্থা না রাখা হলে নিয়োগ প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হতো আর আবেদনপত্রের সংখ্যাও বেড়ে যেত। ফলে আবেদনপত্র বাছাইয়ে অনেক বেশি সময় লাগত বলে জানান তিনি। তাছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় সে হিসেবে ব্যাংক ড্রাফট্ বাবদ আদায়কৃত অর্থ অতি সামান্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.