আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিরে আসেনি বেলা বোস।কারণ বেলা বোসেরা কখনও ফিরে আসেনা

দেশটা আমাদের। এর জন্য ভাল কিছু করতে হলে আমাদেরই করতে হবে। Mail:rabiul@gmail.com আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটির নাম আরিফ। আমরা স্কুল থেকে এক সাথেই পড়েছি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। একসময় এক বালিকা ওর গভীর প্রেমে পড়েছিল।

আমরা তার নাম দিয়েছিলাম ৩২২৯১। আমি আর আমার বন্ধু এভাবেই তার এই নাম দেই যাতে আমরা ৩২২৯১ এর ব্যপারে কথা বল্লেও বন্ধুর বাসার কেউ কখনো বুঝতে না পারে বা আমদের অন্যান্য বন্ধুরাও বুঝতে না পারে। মেয়েটি আইডিয়েল স্কুলে তখন ৭ম শ্রেণিতে পড়ত। আর আমরা তখন এস এস সি পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। আমি যদিও বন্ধুর প্রেম করার বিরোধী ছিলাম।

কারণ আমি আবার বিয়ের পরে প্রেমে বিশ্বাসী। মেয়েটি আবার আমার এই মনোভাবের কথা জানতো এবং এটাও জানতো যে আমি ওর প্রেমিকের খুবই প্রিয় বন্ধু। আমি চাইতাম না আমার বন্ধু বিয়ের আগে আর দশটা ছেলে মতো প্রেমিককে নিয়ে রাস্তায় ঘুরুক। প্রেম করছে ভাল কথা ঘুরবে বিয়ে করার পর। মেয়েটি চাইতো অন্তত মাঝে মাঝে হলেও তারা ঘুরবে।

আমি তখন বন্ধুকে হুমকি দিতাম মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে বের হলেই তোর বাসায় বলে দিব। একদিকে আমার হুমকি আর একদিকে ওই মেয়ের অনুরোধ রাখা নিয়ে বন্ধুর তখন চরম বিপদ। মাঝে মাঝে আমাকে ফাকি দিয়ে সাবধানে বের হত। আমার কানে এই খবর আসলেই আমি সরাসরি বব্ধুর বাসায় ওর আম্মাকে বলে দিতাম। ফলাফল স্বরুপ রাতে বন্ধু বাসায় আসলে মার খেতে হত।

ওইটা যখন ওই মেয়ের কানে যেত তখন বেচারী আমার উপর রাগে ফেটে পড়ত। মেয়েটি যখন ১০ম শ্রেণীতে পড়ত তখন তার বাবা তখনকার ও এখনকার প্রধানমন্ত্রী সাথে আমেরিকা সফরে যান। আমেরিকা থেকে মেয়ের জন্য চমতকার একটা ডায়েরী নিয়ে আসেন। ওই ডায়েরী জুড়ে ছিল আমার প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে ওর যত আবেগের প্রকাশ। আর ছিল কিছু কবিতা।

ওই ডায়রীতা আমার পড়ার সুযোগ হয়েছিল। আমার এখনো ওই ডায়রীতে লিখা কথাগুলো চোখের সামনে ভাসে। ওই ডায়েরীতে বন্ধুকে ওর ভালবাসার কথা আর তাদের ভবিষ্যতের সপ্ন নিয়ে লেখার পাশে আমার উপর যে তার কত রাগ সেটাও লিখা ছিল। যাহোক আমি ওই ডায়রী পড়ার পর মনে হয়েছিল এমন প্রেম আসলেই আসাধারণ। আমার বন্ধুটি ভাগ্যবান এমন মেয়ে পেয়েছে বলে।

উপরের কবিতাটি ওই ডায়েরী থেকেই আমার ডায়েরীতে টুকে রেখেছিলাম। সেখান থেকেই এখানে লিখা বাস্তবের এই প্রেমের কবিতাটি। অতৃপ্ত বাসনা ---৩২২৯১ বেনারশীর লাল পাড়ের আড়ালে নিজেকে ক্ষণে ক্ষণে শুধু সাজিয়েই যাই কখনো নববধু রুপে কখনও কপট রাগে কখনো চিরাচরিত সেই অভিমানীনীর ছায়ায় অথবা লজ্জার শ্রোতধারায়। আমার এই সাজের সপ্নে আমিই নায়িকা ভাগ বাসানোর কেউ নেই। কিন্তু তবুও আমি অতৃপ্ত আমার নতুন বসনে,নতুন ভূষনে কেমন যেন অষ্পষ্টতার ছায়া বোধহয় কোথাও ফাক রয়ে গেছে শুধু মনে হয়- দুরে যেন আরো ভাল সাজ আমার প্রতীক্ষা করছে তাই ভয় হয়।

পথ ভুলে যদি তোমাকে এড়িয়ে যাই আর এই ভয়ই হয়তো আমার অতৃপ্ততা তবু আমি সপ্ন দেখে যাই- তোমার বধু হবার তোমার সংগীনী হবার তবে সে দিন বোধ হয় খুব বেশী দূরে নয় যেদিন আর কল্পনার আয়নায় নয় বাস্তবের আয়নায় দেখতে পাব নিজেকে কোন এক নতুন সাজে তখনই বুঝতে পারব- বাস্তবের সাথে কল্পনার মিল কতটুকু- আর তা এখন শুধু- “সময়ের আপেক্ষা”। (রাত ১টা ৪০ মিঃ) আমার প্রিয় বন্ধুটির ভুলেই সে ওই মেয়েকে হারিয়েছে। বর্তমানে ৩২২৯১ বি সি এস ক্যাডারের ঘরনী আর আমার প্রিয় বন্ধুটি অনার্স করার পরই বেলজিয়াম প্রবাসী হয়। প্রবাস জীবনে তার সবচেয়ে বড় সম্পদ মেয়েটির দেয়া ওই ডায়েরীটি। যেদিন বন্ধুটি চলে যাবে তার আগের দিনও বন্ধুটি ওই মেয়েকে ফোন দিয়েছিল রিলেশনটা ঠিক রাখার জন্য।

ঘন্টাখানেক ফোনে কাদতে কাদতে কত অনুনয় বিনয় করেছিল। আমার প্রিয় বন্ধুটির কষ্টে আমার সেদিন বুক ফেটে যাচ্ছিল। কিছুই হয়নি। ফিরে আসেনি বেলা বোস। কারণ বেলা বোসেরা কখনও ফিরে আসেনা ব্লগে কবিতাটি লেখিকার অনুমতি না নিয়েই প্রকাশ করা হলো।

এত বছর পরে মনে হয় কবিতাটিতেই মেয়েটি নিজের আজান্তেই তাদের রিলেশন যে ভবিষত এ থাকবে না সেটাই প্রকাশ করেছে যদিও ওই বয়সে আমার বন্ধু বা আমার কাছে কবিতাটির অর্থটা সেই রকম মনে হয়নি। বয়সের সাথে সাথে মনে হয় একই কবিতার অর্থও পরিবর্তন হয়ে যায়। কবিতাকেও বয়সে ধরে নাকি!!!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.