দৃষ্টির ধর্ম বড় কঠিন ব্যক্তি উদ্দ্যোগে এমন পাখির অভয়ারণ্য বানাবার ইতিহাস আমার জানা নেই। তবে জেনেছি এমন এক কাহিনী। যে কাহিনীর জন্মদাতা নুরুদ্দিন সাহেব। সিলেটের ছালিয়া গ্রামে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্দ্যোগে যে পাখিদের অভয়ারণ্য গড়েছেন স্থানীয় পর্যায়ে এই বাড়িকে বলে পাখিবাড়ি।
সিলেট শহর থেকে মাত্র ১৩/১৪ কিলোমিটার দূরে ছালিয়া গ্রামে এই পাখিবাড়ির অবস থান।
সিলেটের আম্বরখানা ইস্টার্ণ প্লাজার সামনে থেকে সিএনজি অটোরিক্সা করে সে বাড়িতে যাওয়া যায়; সময় লাগে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট। ভাড়া মাত্র ২৫ টাকা। রাস্তার ডানদিকে আলিশান একটি বাড়ি যা পাখিবাড়ি নামেই পরিচিত। সালুটিকর পাগলা বাজারের কিলোমিটার খানেক আগেই এই বাড়িটি পাখিদের নিরাপদ এক আশ্রয়স্থল।
জানা যায়, বাড়ির মালিক নুরুদ্দিন বাজারে গেলেই পাখি কিনতেন।
কখনো এক জোড়া, কখনো চার-পাঁচ জোড়া। বাড়িতে এনে সেগুলোকে ছেড়ে দিতেন। বলতেন, ‘পাখির জায়গা খাঁচায় না, আকাশে। ’ কিছু পাখি তাঁর তিন একর বাড়ির গাছগাছালিতে থেকে যেত। দেখাদেখি আরো পাখি আসতে থাকে, একসময় তা সংখ্যা ছাড়িয়ে অসংখ্য হয়ে যায়।
বাড়ি থেকে পাখিদের জন্যে খাবারও দেয়া হয়। কেউ সে বাড়িতে পাখি শিকার করতে আসেনা এবং বাড়ির কেউই পাখিও শিকার করেনা। তাদের ধারণা, কেউ এ পাখি শিকার করলে বাড়ি থেকে বের হতে পারবেনা। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে মারা পড়বে!
নুরুদ্দিন সাহেব বর্তমানে বেঁচে নেই। কিন্তু তার অমর হয়ে যাবার অনেক কাজ তিনি করে গেছেন।
বাড়িকে বানিয়ে গেছেন পাখিদের নিরাপদ অভয়াশ্রম। নুরুদ্দিন সাহেবের ছেলে বাড়ির দেখভাল করেন। প্রতিদিন অনেক লোক এ বাড়িতে বেড়াতে আসে পাখি দেখবে আর পাখিদের সাথে সময় কাটাবে বলে। কিন্তু তাদের কেউ বিরক্ত হয়না দর্শনার্থীদের প্রতি। মানুষজন বাড়ির সব জায়গায় ঘুরতে পারেন অনায়াসে।
বাড়ির পুকুরের মধ্যে বিশালাকার শান বাধানো ঘাট। এ ঘাট বাঁধতে গিয়ে একটিও গাছ কাটেননি বলে জানা গেছে। ঘাটের উপরের ছাদের মধ্য দিয়ে যে গাছগুলো পড়েছে সেগুলোকে কায়দা করে রক্ষা করা হয়েছে।
পাখি পাখি অনেক পাখি এত পাখি কোথায় আগলে রাখি!
লিখেছেনঃ কবির য়াহমদ
ছবিঃ আমার তুলা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।