আমরা কেউ অপদার্থ নই, সুতরাং আমরা সবাই... তথ্যসূত্র: উন্মোচনডটকম থেকে নেয়া।
বুধবার বিকালে সংবাদ কর্মীরা ১৩ বছরের কিশোরীর কাছে গেলে সে হু হু করে কেঁদে উঠে। জানায় প্রতিবেশী চাচা শহিনের পাশবিক নির্যাতনের কথা। এসময় তার বুকফাটা কাঁন্নায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।
ঈদের পোশাক কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণ করেছে প্রতিবেশী চাচা মোঃ শাহিন (৩২)।
এ কিশোরী বগুড়ার কাহালু উপজেলার দুর্গাপুর মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
স্থানীয় মাতবরা অবৈধ শালিসের মাধ্যমে মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে জোরপূর্বক বিষয়টির মিমাংসা করেন। তাতে থেমে যায়নি কিশোরীর আর্তনাদ। এ কিশোরী ও তার মা ধর্ষকের শাস্তির দাবী করছেন।
উপজেলার হারলতা গ্রামের আলকেছ আলী একজন হত দরিদ্র শ্রমিক।
আলকেছ আলীর দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তার বাড়িতে কিছু দিন আগে থেকে যাতয়াত শুরু করে একই গ্রামের বাদেশ আলীর ছেলে মোঃ শাহিন। সেখানে যাতায়াতের এক পর্যায়ে শাহিনের কু-দৃষ্টি পড়ে আলকেছ এর মাদ্রাসা পড়–য়া কন্যার উপর।
গত ২০ অক্টোব্বর শাহিন তার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে সুন্দরী কন্যাকে ঈদের কাপড়-চোপর কিনে দেওয়ার কথা বলে দুর্গাপুর বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে শাহিনের স্ত্রী-সন্তান না থাকায় কিশোরী বাড়িতে ফিরতে চাইলে শাহিন জোর করে তাকে বগুড়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে আদমদিঘী উপজেলার অজ্ঞাত একটি গ্রামের এক ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে তাকে আটকে রাখে।
তখন কিশোরী চিৎকার করে কাঁন্নাকাটি শুরু করলে শাহিন তাকে চড়থাপ্পর মেরে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে।
ওই দিন কিশোরীর পিতা কাহালু থানার ওসিকে বিষয়টি অবগত করলে এবং গ্রামবাসীর চাপে পরদিন সন্ধ্যায় শাহিনের স্ত্রী কিশোরীকে ঘটনাস্থল থেকে এনে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। তার মুখে সব শুনে তার মা-বাবা স্থানীয় মেম্বার আ. হামিদকে ২২ অক্টোবর বিষয়টি অবগত করলে সে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার পরামর্শ দেয়।
গত ২৬ অক্টোবর ধর্ষকের বড় ভাই আলহাজ্ব আঃ মান্নান, স্থানীয় মাতবর নাজির হোসেন, মোশারফ হোসেন, ঠান্ডুমিয়া গ্রামে শালিস বসায়। শালিসে ধর্ষকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে কিশোরীর পিতাকে দিয়ে জোরপূর্বক বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।
এদিকে কিশোরীর ধর্ষিত হওয়ার বিষয়টি সাংবাদিক ও প্রশাসন যাতে না জানতে পারে সেজন্য মাতবর ঠান্ডুমিয়াসহ কতিপয় ব্যক্তি কড়া নজরদারী রেখেছে এই দরিদ্র পরিবারের উপর।
খবর পেয়ে বুধবার কাহালু প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা কিশোরীর বাড়িতে তার পিতার কাছে গেলে ছুটে আসে ঠান্ডুসহ কতিপয় মাতবর। তাদের ভয়ে মেয়ের ধর্ষিত হওয়ার কথা বলতে না পারলেও বিষয়টি ২০ হাজার টাকায় মিমাংসার কথা স্বীকার করেন কিশোরীর পিতা।
তখন কিশোরীর মা ডলি খাতুন ওই মাতবরদের সামনেই তার কন্যার উপর শাহিনের পাশবিক নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে তার শাস্তির দাবি করেন। সংবাদ কর্মীরা কিশোরীর কাছে গেলে সে হু হু করে কেঁদে উঠে শহিনের পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে।
এসময় তার বুকফাটা কাঁন্নায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।
হারলতা গ্রামবাসী জানায় শাহিন মোট ৮টি বিয়ে করে। বর্তমানে তার ঘরে ২ স্ত্রী আছে। ক্ষমতা ও টাকার জোরে শাহিন বহু বিবাহ করেও কোন শাস্তি পায়নি। যার ফলে সম্প্রতি কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় শাহিনের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাচ্ছেনা এই পরিবারটি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার আ. হামিদ উন্মোচনডটকমকে জানান, তিনি এই শালিসের বিষয়ে কিছু জানেন না।
দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ মাসুদ হাসান রুনজু জানান, তাকে না জানিয়ে গোপনে এই শালিস করা হয়েছে।
কাহালু থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, কিশোরীকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অবগত হয়ে তিনি মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন কিন্তু কেউ মামলা করতে আসেনি।
মূল লিংক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।