আরিফ যখন রিক্সা থেকে নামল তখন রাত প্রায় আটটা। চারদিকে ঘন অন্ধকার। শীতের রাত। তার ওপর আবার পাড়াগাঁ । সন্ধে হলেই বাড়িগুলোর বাতি নিভে যায়।
দু একটা বাড়িতে টিম টিম করে আলো জ্বলে। আরিফ চারদিকটা একবার ভাল করে দেখে নিলো। ক্ষেতের আইল ধরে সোজা এগুতে হবে তারপর বড় রাস্তা ধরে আর বেশ খানিকটা গেলে ওদের বাড়ি। ক্ষেতের কাছে এসে ও চাদরটা ভাল করে জড়িয়ে নিলো। শহরে তেমন শীত নেই কিন্তু গ্রামে প্রচণ্ড শীত এ সময়।
এখন ভরা পূর্ণিমা কিন্তু কুয়াশা থাকার কারনে আলোটা স্পষ্ট না। আরিফ ক্ষেতের পথ ধরল। হাতের ব্যাগ বেশ ভারী। কিন্তু কোরবানির ঈদ । ছুটি বেশ কয়েকদিন।
তাই কাপর চোপর একটু বেশি। ক্ষেতের মাঝামাঝি এসে আরিফ থমকে দাঁড়াল। তার থেকে বেশ দূরে পিছনে একটা যেন মানুষের মতন। ওর দিকেই যেন আসছে। ও শহরের ছেলে ভূতের ভয় অর নেই।
কিন্তু এই খোলা মাঠের নির্জন প্রান্তরে ও একা। ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক। আরিফ পা চালিয়ে দিল। কিন্তু যেন এগুতে পারছে না। মাঠ ছাড়িয়ে বড় রাস্তার মোড়ে জয়নাল ভাইয়ের দোকান।
তারপর একটা কবরস্থান। বড় রাস্তাতে উঠে দেখল দোকান বন্ধ। ওর ভয় আর বেড়ে গেল। এদিকে পেছনে কেউ একজন তার দিকেই আসছে। যেন হাওয়াতে ভর করে এগুচ্ছে প্রাণীটা।
অশরীরী কিুছু নয়তো? নিজের পা দুটোকে বোঝা মনে হচ্ছে। আরিফ দেখল কখন তার গা থেকে চাদরটা পরে গেছে। শরীর ভিজে উঠেছে। চোখ বুজল আরিফ। এক মনে খোদাকে স্মরন করল।
জোর করে পা এগুতে লাগল। বাড়ির কাছাকাছি এসে পরেছে সে। আর ভয় নেই। কিন্তু পা দুটো যেন আর পারছে না। বাড়ির উঠোনে এসে চিৎকার করে পরে অজ্ঞান হয়ে গেল।
পরে সুস্থ হলে সবাইকে মাঠের পাড়ের মানুষের ঘটনাটা বলল। কিন্তু একি? সবাই হাসছে কেন ? শেষে আরিফের মা ঘটনাটা বলেলন। আসলে আরিফের আসার কথা শুনে ওর বড় চাঁচাকে পাঠিয়েছিলেন ওকে আনতে। কিন্তু আরিফ একটু আগেই এসে পড়াতে আরিফকে ধরতে পারেন নি। কিন্তু পেছন থেকে ডাকলেও আরিফ তাতে সাড়া দেয়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।