আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চার্লি চ্যাপলিন

চার্লি চ্যাপলিন তাইফুর সরোয়ার ছোট্ট গোফ, মাথায় শক্ত হেট,হাতে বাকা লাঠি, ভবঘুরে চাহনি-এ সব মিলিয়ে যে মানুষটি তিনি-ই হলেন চার্লি চ্যাপলিন। কিছুটা ভবঘুরে,কিছুটা রসিক প্রকৃতির খাটো আকৃতির এই মানুষটার ছিল প্রচন্ড সৃজনসীল প্রতিভা। তিনি একাধারে ছিলেন জগৎ বিখ্যাত অভিনেতা,কাহিনী নির্মাতা, এবং পরিচালক। তিনি গানও লিখতেন আবার তাতে সুরও দিতেন। তার সাফল্যের ঝুড়িতে রয়েছে বিখ্যাত অনেক ছবি।

চার্লি চ্যাপলিনের পুরো নাম চার্লস স্পেনসর চ্যাপলিন। জন্ম ১৮৮৯ সালের ১৬ ই এপ্রিল ইংল্যা্ন্ডের লন্ডনে। বাবা চার্লস চ্যাপলিন সিনিয়র এবং মা হান্নাহ হীল উভয়ে ই ছিলেন কন্ঠ শিল্পী এবং অভিনয় শিল্পী। তারা মি্উজিক হলের বিভিন্ন আনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। বাবা মায়ের দাম্পত্য জীবনটা ভাল যাচ্ছিল না।

চ্যাপলিনের জন্মের পর পর্ ই তার মা বাবার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর পর দুখ এবং কষ্টকে সঙ্গী করে ই চ্যাপলিনের বেড়ে ওঠা । বাবা মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে চ্যাপলিন ও তার ভাই সিডনী মায়ের তত্ত্বাবধানেই ছিলেন। কিন্তু ১৮৯৬ সালে মা হান্নাহ হীলের আর্থিক অচলাবস্তা এবং অসুস্থতার কারনে তিনি চ্যাপলিন ও সিডনীর দায়িত্ব নিতে অক্ষম হয়ে পরেন্। এর পর তাদের প্রথমে লেমরবেথ ওয়ার্কসপ এবং পরে হেন্ওয়েল স্কুলে ভর্তী করানো হয়।

স্কুল দুটি ছিল অনাথ ও বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা দানের জন্য। পরিশ্রমকে পূজি করে নিতান্ত খারাপ অবস্থা থেকে ও যে নিজেকে উপরে তুলে আনা যায়-চার্লি চ্যাপলিন হলেন তার বাস্তব উদহারন্। শিল্পী মা বাবার শৈল্পিক প্রতিভাটা তিনি পেয়েছেন জন্মগত ভাবেই। আর যখন ই এই প্রতিভা পরিশ্রমের ছোয়া পেয়েছে তখন ই তা বিকাশিত হয়ে আলোড়ন তুলেছে সারা পৃথিবীতে। বাবা মায়ের মত চ্যাপলিন ও মিউজিক হলকে আপন কর্ নিলেন।

এক ছোকরা ভৃত্যের ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে বার বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে পা রাখেন তিনি। ১৯০৬ সাল থেকে তিনি ফ্রেড কার্নোর মমমিং বার্ডস কোম্পানিতে ভারের চরিত্রের অভিনয় করেন। অসাভাবিক বলিষ্ঠতা , সুন্দর প্রকাশ ভঙ্গি , চরম সময় নিষ্ঠা, অসীম উদ্ভাবনী চিন্তা শক্তি এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই চ্যাপলিন সবার দৃষ্টিতে চলে আসেন। ১৯১০ সালে চ্যপলিন প্রথম বারের মত আমেরিকাতে আসেন ফ্রেড কার্নোর মুকাভিনয় দলের সথে। ১৯১৩ সালে তিনি নিউ ইয়র্কে কী স্টোন স্টুডিও কোম্পনির সাথে ছবি নির্মান করেন যেখানে তার অতীত জীবনের কঠিন অবস্থাগুলো প্রকাশ পেয়েছে হাস্যরস, করুনা এবং দুঃখের মাধ্যমে।

১৯১৪ সালে ”কীড অটো রেস” ছবিতে হাতে বাকা লাঠি, শক্ত হেট, আটসাট জ্যাকেপ, ঢিলেঢালা প্যান্ট নিয়ে ভদ্রবেশী ভবঘুরে সাজে নিজেকে উপস্থাপন করেন যা পরবর্তীতে তার ট্রেডমার্ক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তী চার বছর তিনি তার জনপ্রিয়তা বাড়াতে আপ্রান চেষ্টা করতে লাগলেন। এসময় তিনি তার ভবঘুরে জীবনটাকে কিছুটা ঘসে মেজে সংশোধন করে হাসি ও দুঃখের সংমিশ্রনে একটা কব্যিক রুপ দিলেন। বিংশ শতাব্দীর সংস্কৃতি, অভিনয় এবং সিনেসা জগতে চ্যাপলিন ছিলেন আইকন। সারা পৃথিবী ছিল চ্যাপলিন জ্বরে মাতোয়ারা।

চ্যাপলনের মত করে অঙ্গ ভঙ্গী করা, নাচা চ্যাপলিন ভক্তদের মাঝে সচরাচর দেখা যেত। চ্যপলিন প্রতিকৃতির পুতুল এবং কমিকস বইয়ের চাহিদা ছিল হট কেকের মত জনপ্রিয়। আলবার্ট আইনস্টেন, জর্জ বার্নাড শ, এডলফ হিটলরেরে মত মনি লোকেরা ও ছিলেন চ্যাপলিনের ভক্ত। চ্যপলিনের প্রতি হিটলারের ভালোবসা এত বেশি- ই ছিল যে হিটলার নিজের গোফ রাখেন চ্যাপলিনের গোফের মত করে। চ্যাপলিনের বিখ্যাত ছুবির মধ্যে এ ডগস লা্ইফ, সোলজার আর্মস, এ ওমেন অব প্যারিস, দি গোল্ডেন রাস, দি সার্কাস, সিটি লাইফ, মর্ডন টাইমস উল্লেখযোগ্য।

তিনি চারটি বই ও লিখেন। বইগুলো হলো- মাই ট্রিপ এবরোড,এ কমেডিয়ান সিস দি ওয়াল্ড, মাই অটোগ্রাফী, মাই লাইফ ইন পিকচার । তিনি মাঝমাঝে গানও লিখতেন। তার লেখা উল্রেখযোগ্য গান হল-সং এ সং, উইথ ইউ ডিয়ার ইন বোম্বে প্রভৃতি। কাজের স্বীকৃতির থলিটা ও কিন্তু অনিক বড় এই গুনী শিল্পীর।

লক্ষ কোটি ভক্তের ভালোবসা,জাতীয় ও আন্তর্জতিক বিভিন্ন পদক পুরষ্কার ছাড়া্ও তিনি১৯৭৩ সালে চলচিত্রে নোভেল নামে পরিচিত অস্কার পদক পান । ১৯৭৫ সালে ৮৬ বছর বয়সে রানী দিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে নাইট উপাধী পান। ১৯৭৭ সালের ২৫ ডিসেম্ভর অসম্ভত প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি ইহলোক ত্যাগ করে পরলোকে গমন করেন। । ১৫-১০-২০১২ ইং ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.