"আমি সবচেয়ে সুখি মানুষ" যখন আমি খুব ছোট ছিলাম, তখন মনে হতো "মা" বোধ হয় শিশু বলে আমাকে পছন্দ করেন না। সব সময় রাগি রাগি চোখে কড়া ভাষায় কথা বলেন, যা আমাকে ভয় পাইয়ে দেয়।
"মা" অনেক কঠিন কঠিন নিয়ম নীতি দিয়ে বেঁধে দিতেন। এটা ধরা যাবে না, ওটা ধরা যাবে না, সেখানে যাওয়া যাবে না, টিভিতে হাত দেওয়া যাবে না, ফ্রিজ খোলা যাবে না, পাশের বাসায় গেলে চুপ করে থাকতে হবে, মেহমান আসলে দৌড়াদৌড়ি করা যাবে না, এমন কতো শতো নিয়ম।
আম্মু যখন বাসায় থাকতো না, তখন একটু দৌড়াদৌড়ি- চিল্লাচিল্লি করলে আন্টি বকা দিতো।
"তোমার আম্মু আসলে সব বলে দিবো, তোমাকে মেরে ফেলবে"- এমন কতো কথাই বলতো। বয়স ৭ হবার আগে বুঝতে পারলাম , আমি আমার "মা" কে ঘৃণা করি। সে আমাকে পছন্দ করে না, শুধুই কষ্ট দেয়, মারে, শাসন করে, চোখ রাঙ্গানি দেয়। ।
যখন একটু বড় হলাম, তখন আগের অনেক নিয়ম নীতি আমার জন্য শিথিল করা হলো।
এখন আমি অনেক কিছু করতে পারি, যা "মা" আমাকে আগে করতে দিতো না।
যখন বয়স আমার ১০, তখন মায়ের ভালোবাসা বুঝতে শুরু করলাম। নিয়মিত স্কুলে নিয়ে যাওয়া, টিফিন বানিয়ে দেওয়া, ভাতের লোকমা তুলে খাইয়ে দেওয়া। এমন অনেক কিছুতে মায়ের ভালোবাসা আর স্নেহের সাধ পেতে থাকলাম।
আরেকটু বড় হওয়ার পর বুঝতে পারলাম, মা আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে।
ততদিনে অনেক বাঁধা ধরা নিয়ম ই আমার উপর থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত হাত খরচার জন্য পকেটে টাকা গুজে দেন। বাহিরে যাবার পর পথ চেয়ে বসে থাকেন, কোথাও যাওয়ার সময় পথ এগিয়ে দেন। এখন আর কেউ একটু বেশি টিভি দেখলে বকে না। মায়ের প্রতি আগের সেই ক্ষোভ আর নেই।
এখন "মা"কে আমিও অনেক ভালবাসি।
এরপর অনেক বড় হয়ে গেলাম। পড়াশুনার কারনে "মা" এর কাছ থেকে দুরেই থাকা লাগে। "মা" খুব করে চায় তার কাছে গিয়ে থাকি। অনেকদিন পর যখন "মা" এর কাছে ফিরি তখন মা আনন্দে কেঁদে দেন, আবার যখন ছেড়ে চলে আসতে হয় তখনো "মা" কেঁদে দেন।
মায়ের ভালোবাসা বুঝি এমনি। অনেকদিন পর আবার "মা" এর কাছে যাবো এই ঈদে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।