জীবনের অর্থ খুজিনা,তাই জীবনকে অর্থহীন মনে হয়না শিক্ষার সবচেয়ে বড় গুন হলো,শিক্ষা মানুষকে বেকুব বানায়,ভীতু বানায় আর বানায় চাপাবাজ। কথাগুলো অদ্ভুত শোনাচ্ছে,তাইনা??উদাহরণ দিয়ে বোঝাই। ৭১ এ যে সব মহান মানুষেরা নিজেদের জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছিলেন তারা কিসের আশায় যুদ্ধ করেছিলেন জীবন বাজি রেখে???শুধু নিজের দেশটাকে স্বাধীন দেখবেন বলে। আর সে সময়ের বুদ্ধিজীবিরা কি করেছেন????সেই সব মহান আত্মত্যাগী মানুষগুলোকে শ্রেণীবিন্যাসে বিন্যাস্ত করেছেন। তুমি বীরশ্রেষ্ঠ,তুমি বীর বিক্রম…তারা নিজেদের বলেছেন কলম সৈনিক।
হ্যা,আমি মানি তাঁদের পরিশ্রম অবশ্যি ছিলো। ছিলো তাদের সুচিন্তিত মতামতের দাম। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তি দেশে তাঁরা কি করেছেন????বিদ্ধস্ত একটা দেশকে মেরামত করা বাদ দিয়ে সেই মুক্তিযুদ্ধের কাঁটাছেড়া করেছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে সেই মহান মুক্তযুদ্ধের আদর্শ তুলে ধরেছেন। তাতে হয়েছে কি????তাদের মত কিছু কলম সৈনিক তৈরি হয়েছে দেশের পথে প্রান্তরে।
আমাদের দেশের ১৭ কোটি মানুষের অর্ধেক শিক্ষিত। সেই শিক্ষিত জনগোষ্ঠির অর্ধেকের কাছে “ব্লগ” শব্দটা পরিচিত। আর এই ব্লগাররাই হলেন কলম সৈনিক। আমি আমার মোটামুটি ৫ বছরের ব্লগ জীবনে দখেছি,গুটিকয়েক ব্লগার ছাড়া দেশের জন্য,সমাজের জন্য মাঠে নেমে কাজ করেছেন,এরকম পাওয়া দুষ্কর। ব্লগে বসেই তারা জাতির উন্নতির জন্য সুচিন্তিত রায় দিয়ে ফেলেছেন একমুহূর্তেই।
সাথে সাথে দুই ধরনের সাড়া পরছে তারের ব্লগে। পক্ষে,বিপক্ষে। ধীরে ধীরে উত্তেজনা বাড়ছে। কথার যুদ্ধ চলছে। তারপর কেউ কেউ মাথা গরম করে গালি দিয়ে ফেলছেন।
ব্যাস। আর যায় কোথায়। শুরু হয়ে যাচ্ছে নিজেকে নীচে নামানোর অদ্ভুত সুন্দর প্রতিযোগিতা। কে কয়টা গালি দিয়ে কাকে ধরাশায়ী করতে পারেন,তার এক চিত্তাকর্ষ নমুনা এঁকে চলেছেন ব্লগের পাতায় পাতায়। কিন্তু তাতে ওই কমলাপুরে ষ্টেশনে রাত কাটানো মানুষের কি দুই পয়সার লাভ হচ্ছে???আরেক পদের ব্লগার আছেন।
তারা হলেন সবচেয়ে উচুশ্রেনীর বুদ্ধিজীবি। তারা ধর্ম এবং বিজ্ঞান নিয়ে এতই জ্ঞান রাখেন যে স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে রীতিমত কাটাছেড়া করতে বসে গেছেন। এদিকে এদের বিরোধী পক্ষের খুব আঁতে ঘা লাগছে। নাস্তিক নাস্তিক বলে রব উঠছে চারিদিকে। সেটা সে পর্যন্ত থাকলেও কথা থাকে।
সেখানে আওয়ামীলীগ,বি এন পি,জামাত,ভাদা,পাদা,ছাগু,হাগু,মুতু মিলিয়ে মিশিয়ে সে এক অদ্ভুত অবস্থা। তাতেই দেশের কোন উন্নতি হচ্ছে আমার ছোট মাথায় ঢুকেনা। তারা সবাই দেশের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে নিজেদের লুঙ্গি খুলে ফেলেছেন বহু আগেই,সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপও নাই!!!
আমার মায়ের পরনে জামদানি শাড়ি। জন্মের পর থেকেই তা দেখে আসছি। শুনেছি এই শাড়ি আমার মায়ের ই।
কিন্তু কি আজব,আরেক জন এসে মায়ের সেই জামদানি নিজের বলে দাবী করল। আমরা তা মায়ের শরীর থেকে খুলে দিয়েও দিলাম। বাংলা মায়ের কি আজব সন্তান আমরা। কি আজব একাত্তরের বুদ্ধিজীবিদের সেই শিক্ষা। এ বিষয়টা নিয়ে ব্লগে যথারীতি আলোচোনার ঝড় উঠলো।
তাতে কি কোনো লাভ আছে????
সীমান্তে দৈনিক মারা যাচ্ছে বাংলাদেশের সন্তানেরা। যারা আমাদের মত কারো ভাই,বোন,মা,বাবা কিনবা সন্তান। আমরা ব্লগ লিখছি। ফলাফল???পরদিন পত্রিকায় আবারো সীমান্তে হত্যার খবর। আজব আমাদের দেশপ্রেম।
এদিকে হয়েছে আরেক জ্বালা। যেই প্রতিবেশি রাষ্ট্র এসব করছে,তারা আবার একাত্তরে আমাদের মিত্রপক্ষ ছিলো। ফলে তাদের বিরুদ্ধচারন করাও যাবেনা। তাইলেই রাজাকার!!!!!!!!!”লাত্থি তোরে যাই দেই,তুই রাগ করবি ক্যা???আগে একবার চুম্মা দিছিনা!!!” টাইপের এক সম্পর্ক আমাদের সাথে ভারতের। সত্যিই অবাক হই।
চিন্তা করে দেখলাম আসলে আমাদের কিছু করারও নাই। কারণ আমাদের মিশরের তাহরির স্কয়ার নাই। নাই মস্কোর রেড স্কয়ার। যেখানে লাখো বুদ্ধিজীবি এক হয়ে এক নতুন বিপ্লবের ডাক দেবেন। রাস্তা ঘাটে তো আর বিপ্লব করা যায়না!হাজার হলেও আমরা ব্লগার।
বুদ্ধিজীবি। আমাদের একটা মান সম্মান আছেনা????
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।