‘বিয়ের পর অনেক দিন কেটে গেলেও আমাদের সন্তান হয়নি। অবশেষে ১৫ বছর পর আমাদের ঘরে আসে ফুটফুটে এক মেয়ে। প্রথমবারের মতো আমরা মা-বাবা হওয়ার স্বাদ পাই। আমার স্ত্রী মেয়েকে পেয়ে তো খুব খুশি। কিন্তু তার সে হাসি মুছে যেতে সময় লাগেনি।
’
কন্যাশিশু জন্ম দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে স্ত্রী হারানো বাবলু যাদব এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা জানান। বলেন, কোলের শিশুকে নিয়ে কীভাবে তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকার জোগান দিচ্ছেন।
বিবিসি অনলাইনে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্তানকে নিয়ে রিকশাচালক বাবলু যাদবের কষ্টকর জীবিকা চালানোর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজস্থান রাজ্যের একটি হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যান বাবলু যাদবের স্ত্রী শান্তি। এতে শিশু কন্যাকে নিয়ে তিনি বিপাকে পড়ে যান।
আশপাশে এমন কেউ নেই, যার কাছে তিনি তাঁর সন্তানকে রেখে কাজে যেতে পারবেন। বাবলু তাই বেছে নিয়েছেন বিকল্প পথ। গলায় ঝোলানো পোঁটলায় মেয়েকে রেখে রিকশা চালাচ্ছেন।
ভরতপুর শহরের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী যাদব বলেন, ‘শান্তি মারা যাওয়ার পর থেকে আমার মেয়েকে দেখার কেউ নেই। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েকে সব সময় আমার সঙ্গে রাখতে হচ্ছে।
এমনকি আমি যখন রিকশা চালাই, তখনো ও আমার সঙ্গে থাকে। ’
যে বয়সে এই ছোট্ট শিশুটির মায়ের কোলে পরম মমতায় থাকার কথা, সে বয়সে শিশুটি রোদ-বৃষ্টিতে বাবার গলায় বাঁধা পোঁটলায় ঝুলছে। এর মধ্যে একবার শিশুটির পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছিল। তখন নিয়ে যেতে হয়েছিল হাসপাতালে।
বাবলু যাদব বলেন, ‘জীবন খুব কঠিন।
প্রতি মাসে আমাকে ৫০০ রুপি ঘরভাড়া দিতে হয়। রিকশার মালিককে প্রতিদিন জমা দিতে হয় ৩০ রুপি করে। ’ বাবলু যাদব আবার বিয়ে করতে রাজি নন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে আমার মেয়ের যত্ন ও তার লালনপালন সবার আগে। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।