আসুন অন্যের বিচার করার আগে আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখি।
লটারি !!! লটারি !!! লটারি !!! মাত্র ২০টাকায় জিতে নিন ওয়ালটন মোটরসাইকেল।
যাদের মোটরসাইকেল চালানোর খায়েস তারা তাড়াতাড়ি আগাইয়া আসেন। মোটরসাইকেল কেনার মত সামর্থ নাই, তো কি হয়েছে ? নিজের ভাগ্যটা পরীক্ষা করেন। কপালে থাকলে ঠেকায় কে??? মাত্র ২০টাকায় আপনিও জিতে নিতে পারেন একটি ওয়ালটন মোটরসাইকেল।
জলদি আপনের টিকিট সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন ড্র। প্রতিদিনই ৩টি ওয়ালটন মোটরসাইকেল। প্রতিদিন ৩জন সৌভাগ্যবান পাবেন একটি করে ওয়ালটন মোটরসাইকেল। আপনি বেশি ভাগ্যবান হলেই একাই ৩টি মোটরসাইকেল জিতে নিতে পারেন।
যে যত খুশি টিকিট কিনতে পারেন। যত বেশি টিকিট, তত বেশি পুরষ্কারের সম্ভাবনা।
ঘোষনা শুনে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে গেলো মুহুর্তেই। কেউ ৫টা, কেউ ১০টা, কেউ ৫০টা, কেউবা ১০০টা করে লটারি কিনতে থাকলো। যেহেতু প্রতিদিনই ড্র তাই ফাকিবাজির কিছু নাই।
যদি ভাগ্যে থাকে !!!
প্রতিদিনই প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকার লটারি বিক্রি হতে থাকলো। দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে মেলায় আসা হাজার হাজার মানুষ পূজা ও ঠাকুর দেখার মজাকে বাদ দিয়ে লটারির কাউন্টারে এসে উপচে পড়তে লাগলো। এমনিতেই এই এলাকাতে সব ধনী লোকদের বাস। তাই এক একজন হাজার হাজার টাকার লটারি কিনতেও দ্বিধা করছেন না। যদি কপালে থাকে!!!
প্রতিদিন ৩টি করে মোটরসাইকেল পুরষ্কারও দেয়া হলো বটে।
ভাগ্যবানদের খুশি দেখে কে ??? আনন্দে এক একজন আত্মহারা।
এভাবে প্রায় ৫-৬ দিন কেঁটে গেলো। প্রতিদিনই লটারির দোকানে সবার দৃষ্টি। অন্য দোকানীরা ক্ষোভে অস্থির। তাদের বেচাকেনার চরম বেহাল অবস্থা।
কেউ তাদের দোকানের দিকে ভিড়ছেও না। প্রতিদিনই ভাগ্যবানরা মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরেন। আর প্রতিদিনই বাড়তে থাকে লটারি বিক্রির হার।
৭ম দিনে সবাই আগ্রহের সাথে মেলায় গেলো। কিন্তু লটারির দোকানের কোন চিহ্ন নাই।
সবারই একটা প্রশ্ন এরা গেলো কই? চাট্টিবাট্টি গোল করে কি ভাগলো ? তা কেন করবে? ওরা তো প্রতিদিনই পুরষ্কার দিচ্ছিল। কোন ফাকিবাজি নাই। তাহলে সমস্যা কোথায়???
সবারই মন ভীষণ খারাপ। কত আশা নিয়ে আজ লটারি কিনে নিজের ভাগ্য বদলাতে চাইছিল। কিন্তু শারারা কিছু না বলেই গায়েব !!!!! আস্ত হারামির দল।
কেউ কেউ অভিমানে তাদের গালি দিতে লাগলো।
অবশেষে আসল খবর জানা গেলো..............
লটারি বিক্রেতারা তাদের লটারির পুরষ্কারের জন্য নির্ধারিত মোটরসাইকেল কেনার জন্য স্থাণীয় ওয়ালটন মোটরসাইকেল ডিলারদের সাথে একটা চুক্তি করেছিল। চুক্তি অনুসারে তারা বাকিতে লটারি বিক্রেতাদের মোটরসাইকেল সাপ্লাই দিচ্ছিল। মেলা শেষে একবারে টাকা পরিশোষ করার কথা ছিল। কিন্তু মেলা শেষ হওয়ার আগেই তারা লাপাত্তা।
লটারি বিক্রি করে তো লোভ দেখাইয়া লাখ লাখ টাকা হাতাইয়া নিছে ই, ওয়ালটন সেলস্ এজেন্টেরও বারোটা বাজাইয়া দিয়া গ্যাছে।
সবাই আসল কাহিনী শুনে আবালের মত মাথা চুলকাইতে লাগলো। আর অন্যান্য দোকানীরা খুশিতে টগবগ করতে লাগলো। তাদের বেচাকেনা মনে হয় একটু প্রাণ পেল।
পুনশ্চঃ ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়াতে।
আজ আমি আমার এক বন্ধুর মারফত জানতে পারলাম। দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে প্রতিবছর জয়পাড়াতে বিরাট মেলা বসে। এখনো মেলা চলছে। তাই সবাই সাবধান। লটারি মানেই ঠকবাজি।
তাই লোভে পড়ে কেউ ঠকবেন না যেন।
উৎসর্গঃ বন্ধু রায়হানকে। যার মধ্যমে ঘটনাটি আজ জানতে পারলাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।