দেশপ্রেমীক
হতাশার প্রথম বিপিএলে অপমানও সইতে হয়েছিল তামিম ইকবালকে।
চিটাগং কিংসের অস্ট্রেলিয়ান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডিন জোন্স নাকি এক দিন তামিমকে বলেছিলেন, ‘তোমরা (খেলোয়াড়েরা) হলে চাকর। আমি হলাম বস। ’
বিপিএলে জোন্সের সঙ্গে তামিমের ঝামেলা নিয়ে তখন পত্র-পত্রিকায়
নানা ধরনের খবর ছাপা হয়েছিল। আসলে কী হয়েছিল, এত দিন পর তা খুলে বললেন তামিম।
বিপিএলের প্রথম ম্যাচের পর কুঁচকিতে চোট
পেয়েছিলেন। পরের দিন মিরপুরের একাডেমি মাঠে অনুশীলনের সময়
জোন্সের সঙ্গে সমস্যার শুরু বলে জানান তামিম, ‘ডিন জোন্স আমাকে এসে বললেন, “তোমার কিছু করার দরকার নেই। তুমি শুধু ফিজিওর সঙ্গে হাঁটাহাঁটি করবে। ” কিন্তু ফিজিও টেস্ট করে বললেন, “আমি ব্যাটিং করতে পারব। ” আমি তখন বলি, আগে আপনি ডিন জোন্স জিজ্ঞেস করে নেন ব্যাটিং করতে পারব কি পারব না।
ফিজিও তাঁকে জিজ্ঞেস করে আমাকে বললেন, পারব। আমি নেটে ঢুকে দুই বল খেলার পরই ও (জোন্স) চিৎকার করে উঠল, “গেট আউট, গেট আউট। ” আমি তখন প্রতিবাদ করি, আপনি আমাকে ডাকলেন, আবার আপনিই এমন অপমান করছেন! আমি জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড়। এত মানুষের সামনে এমন বিচ্ছিরিভাবে আমাকে বের করে দিচ্ছেন, এটা ঠিক না। ’ কুঁচকির চোটের পর জাতীয় দলের ফিজিও বিভব সিংয়ের সঙ্গে কথা বলে চিটাগং কিংসের ফিজিও বায়েজেদুল ইসলাম খান দু- তিন দিনের বিশ্রাম দেন তামিমকে।
কাল বায়েজেদুল প্রথম আলোকেও টেলিফোনে বলেছেন, ‘তামিমকে আমরা দুই থেকে তিন দিনের বিশ্রাম দিই। ১৬ ফেব্রুয়ারি বরিশাল বার্নার্সের বিপক্ষে ম্যাচ পর্যন্ত তাঁকে খেলতে দিইনি। এর পর থেকে পুরো টুর্নামেন্টে সে খেলারমতো ফিট ছিল। ’ অথচ ডিন জোন্স নাকি তামিমকে বলেছিলেন, দুই সপ্তাহের আগে তিনি ফিট হতে পারবেন না।
তামিম-জোন্স দ্বৈরথ এর পর থেকেই চলতে থাকে।
মাঝে এক দিন ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক সামির কাদের চৌধুরী তামিমকে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর জোন্সের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। প্রথমে রাজি না হলেও পরে দুঃখ প্রকাশ করতে জোন্সের হোটেল রুমে যান তামিম। চূড়ান্ত অপমানিত হন সেখানেই। ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের সম্মান রাখতে আমি জোন্সের রুমে যাই। কিন্তু তাঁর কথাবার্তা ছিল খুবই রূঢ়।
শেষ পর্যন্ত তিনি আমাকে এমনও বললেন, “তোমরা (খেলোয়াড়েরা) হলে চাকর। আমি হলাম বস। ” আমি হতভম্ব হয়ে যাই। কিন্তু কিছু করার ছিল না। তখন আমি এমন একটা অবস্থায় ছিলাম...পত্র পত্রিকায়ও আমার ব্যাপারে উল্টাপাল্টা কথা লেখা হচ্ছে।
এ জিনিসটা নিয়ে কিছু করলে আমার নামে আরও লেখা হবে। আমি মালিককেও কিছু বলিনি। ’
চট্টগ্রামে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচের আগেও এক চোট হয় তামিম-জোন্সের মধ্যে। খেলার দিন সকালে দেওয়া খেলোয়াড় তালিকায় নাম থাকার পরও শেষ পর্যন্ত তামিমের ওই ম্যাচে না খেলা ছিল তারই পরিণতি।
‘রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন উনি (জোন্স) জিজ্ঞাসা করেন, আমি তিনে ব্যাটিং করব কি না।
আমি বলি, আমি তো কোনো দিন
তিনে ব্যাটিং করিনি। ওপেন করলে বেশি ভালো, তবে তিনে হলেও
সমস্যা নেই। কিন্তু ম্যাচের আগের রাতে সুজন ভাইকে (কোচ খালেদ মাহমুদ) জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “তুই ওপেনই করবি। ”’ পরদিনের ঘটনা তামিমের জবানিতেই শুনুন, ‘পরদিন ম্যাচের আগে ওয়ার্মআপ করছিলাম। তিনি (জোন্স) আমার কাছে এসে মা-বাপ তুলে গালাগাল শুরু করে দিলেন।
বারবার বলতে থাকেন, “তুমি মালিকের কাছে অভিযোগ করেছ তিনে ব্যাটিং করবে না। ” আমি বললাম, আমি তো কিছুই বলিনি। সুজন ভাই ব্যাপারটা দেখে তাড়াতাড়ি কাছে এসে বললেন, “ও তো মালিককে কিছুই বলেনি। ও আমাকে জিজ্ঞেস করেছে তিনে ব্যাটিং করবে নাকি ওপেন করবে। আমাকে জিজ্ঞেস না করলে কাকে করবে? আই অ্যাম দ্য হেড কোচ অব দ্য টিম, নট ইউ।
”’ এ ঘটনার পর তামিম নিজেই ওই ম্যাচে না খেলার সিদ্ধান্ত নেন, ‘ডিন জোন্স এমন পরিস্থিতি তৈরি করলেন যে আমার আর ওই সময় খেলার মতো অবস্থা ছিল না। আমি নিজ থেকেই বলি ম্যাচটা আমাকে না খেলাতে। কিন্তু অফিশিয়ালি বলা হলো, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণে আমি খেলছি না। ’
সংগৃহীতঃ ফেইসবুক
Rakibs Diary ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।