লিখতে ভালোবাসি যাস্ট মিচুয়াল ফান্ড, বন্ড, জিরো কুপন বন্ড কি ?
ডিএসই -এর নতুন বিনিয়োগকারীদের প্রধান সমস্যা হলো তথ্যের অভাব ও জ্ঞানের সল্পতা ফলে অতি সহজেই গুজব ও ভুল তথ্যের উপর নির্ভর করে ধরা খাওয়া এক কথায় অতি সাধারন ঘটনা নতুনদের জন্য। এ রকম একটা ব্যপার নিয়েই আজকের আলোচনা করি, কি বলেন?
নতুনদের পাশাপাশি শেয়ারবাজারের অনেক বিনিয়োগকারীই সাধারন শেয়ার, মিচুয়াল ফান্ড, জিরো কুপন বন্ড, বন্ড ইত্যাদির পার্থক্য বোঝেন না। ফলে সবগুলকেই এক জিনিস মনে করে ধরা খান।
মিচুয়াল ফান্ড: ধরুন আপনার বন্ধু করিম অনেক দিন ধরেই শেয়ার বাজারে আছে। ছোট বড় ঠেলা-ধাক্কা খেয়ে স্বশিক্ষিত হইছে মানে ব্যবসাটা বেশ ভালই বোঝে আর কি ।
তাই নতুন বিনিয়োগকারী বন্ধুরা মিল্লা ঠিক করলেন একা একা ধরা না খাইয়া সবার পুজি করিমরে দিলেন ব্যাবসার জন্য যাতে সে নিজের বুদ্ধি খাটিইয়া ভাল ব্যবসা করবার পারে।
মানে বলতে পারেন এক ধরনের সমবায় সংঘ যার পরিচালনার ভার পরেছে আপনার ঐ বন্ধুর কাধে। ঠিক এই কাজটিই করে মিচুয়াল ফান্ড ম্যানেজার, ফান্ডের ই্উনিট হোল্ডারদের টাকা বিনিয়োগ করা হয় শেয়ার বাজারে এবং এই বিনিয়োগের লাভ-লোকশানের অংশিদার হল ফান্ডের ই্উনিট হোল্ডারগন। সুতরাং মিচুয়াল ফান্ড কোন কম্পানি শেয়ার নয় এবং তার আয়-রোজগার সম্পূর্ন নির্ভরকরে শেয়ার বাজারের খারাপ-ভাল অবস্থার উপর।
ধরুন মিচুয়াল ফান্ড ক এর মোট মূলধন ১০,০০০ টাকা এবং ইউনিট সংখ্যা ১০০ অর্থাৎ ফেস ভ্যালু ১০ টাকা।
এই টাকায় শেয়ার ১,২,৩ কেনা হয়েছিল শুরুতে যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২,৫০০ টাকা। মানে মিচুয়াল ফান্ডের বেসিক NAV ১০ টাকা এবং চলতি NAV ১২'৫ টাকা। ধরুন বছর শেষেও একই অবস্থা অতএব প্রতি ইউনিটে আয় ২'৫ টাকা যার ১ টাকা বোনাস দেয়া হল এবং বাকি ১'৫ আগের ১০ টাকার সাথে যোগ করে পুনরায় বিনিয়োগ করা হলো। এই ভাবে ৩-৪ বছর পর দেখা গেল ঐ মিচুয়াল ফান্ডের বেসিক NAV ১৪ টাকা এবং চলতি NAV ১৭'৫ টাকায় দাড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হল আপনি এই মিচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে গেলে কত টাকায় কিনবেন ?
আইডিয়াল সিচুয়েশনে ১৪ টাকা এবং রিয়েল সিচুয়েশনে ১৭'৫ টাকা বড় জোর ১৮-২০ টাকা।
কিন্তু আমাদের বাজারে এই শেয়ার বিক্রি হয় ৩০-৫০ টাকায়। পৃথিবীর সব মার্কটে মিচুয়াল ফান্ড ইউনিটের দাম তার চলতি NAV এর ধারে কাছে হয়।
জিরো কুপন বন্ড বা বন্ড : এটা অনেকটা সরকারী সন্চয় পত্রের মত পার্থক্য হল এর কিছু অংশ মেয়াদ শেষে শেয়ারে কনভার্ট হয়। ধরুন কম্পানি খ ৫ বছর মেয়াদি ১,৫০০ টাকার বন্ড ছাড়ল যা ১০০০ টাকায় বিক্রি হবে এবং এর ১০% শেয়ারে কনভার্ট করা হবে। এখন আপনি এই বন্ড ১০০ টা কিনলেন।
বিনিয়োগ: ১০০০*১০০ =১,০০,০০০ টাকা
এখন ৫ বছর পর আপনি পাবেন -
১৫০০*৯০ =১,৩৫,০০০ টাকা এবং ঐ কম্পানির ১০ টি শেয়ার।
প্রসংগত এই ৫ বছরে কম্পানি আপনাকে কোন লভ্যাংশ দেবে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এটা সাধারন শেয়রের মত নয়। মূলত ধীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগের জন্যই বন্ড কেনা উচিত।
এই বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ড মূলত সবচেয়ে সেফ বিনিয়োগ হিসেবে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় এবং এগুলোর দাম খুব বেশি ওঠা-নামা করে না অর্থাৎ তা বাজার স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে ।
অথচ আমাদের দেশে বিনিয়োগকারীদের অগ্যতার সুযোগ নিয়ে বেশি দামে এগুল তাদেরকে গছিয়ে দেয়া হয় যা বাজারকে স্থিতিশীল করার পরিবর্তে আরো অস্থিতিশীল করে। সুতরাং বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে ভাল ভাবে যাচাই-বাছাই করে স্বীদ্ধান্ত নিন।
বাজার চিত্র : মনে রাখা উচিত মার্কেট ম্যানুপুলেশন হয়ত ক্ষনিকের জন্য কোন শেয়ারের দাম আকাশে বা পাতালে নামিয়ে দিতে পারে কিন্তু অবশ্যই তা ক্ষনস্থায়ী সময়ের জন্য। তাই ভাল মৌল ভিত্তির শেয়ার কিনুন লাভ বেশি না হলেও ক্ষতির শিকার হবেন না।
সর্বশেষে একটা কথা না বললেই নয় নিজে জানুন অন্যকেউ জানান ধন্যবাদ
শেয়ার ব্যবসায় যা জানা প্রয়োজন -০১
শেয়ার ব্যবসায় যা জানা প্রয়োজন -০২ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।