আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুঁজিবাজারে কালোটাকা সাদা করার বিশেষ সুযোগ নেই

কেবল ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কালোটাকা আর সাদা করা যাবে না। এই বিশেষ সুবিধার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ জুন। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এই সুযোগের মেয়াদ বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব করা হয়নি। মেয়াদ বাড়াতে হলে বাজেট পাসের সময় নতুন করে প্রস্তাব করতে হবে। আর ৩০ জুনের মধ্যে বাজেট পাস হবে।


পর পর গত দুই অর্থবছরে শেয়ারবাজারে কালোটাকা সাদা করার বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। যত কালোটাকা সাদা করা হবে, তার ১০ শতাংশ কর দিলেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সেই অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করেনি। চলতি জুন মাসের মধ্যে এই সুযোগ নিলেও কোনো প্রশ্ন করবে না এনবিআর। কিন্তু গত দুই অর্থবছরে সেই সুযোগের খুব একটা ব্যবহার হয়নি।
এনবিআরের সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে মাত্র ৮২ জন শেয়ারবাজারে কালোটাকা সাদা করেছেন।

সেই অর্থবছরে মোট ৩৮২ কোটি টাকা কালোটাকা বিনিয়োগ করেছেন। এতে এনবিআর মাত্র ৩৮ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে। এর মধ্যে বড় করদাতা রয়েছেন মাত্র ১৭ জন, যাঁরা আবার বৃহৎ করদাতা ইউনিটে (এলটিইউ) অন্তর্ভুক্ত।
তবে চলতি অর্থবছরের পরিসংখ্যান চূড়ান্ত হয়নি। কেননা, চলতি অর্থবছরে যাঁরা শেয়ারবাজারে কালোটাকা সাদা করেছেন বা করবেন, তাঁরা ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এনবিআরকে জানাবেন।


অবশ্য অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে। চলতি অর্থবছরের (২০১২-১৩) বাজেট পাসের সময় আয়কর অধ্যাদেশে ‘১৯ই’ নামে নতুন একটি ধারা সংযোজন করে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ স্থায়ী করা হয়েছে। চলতি বা পূর্ববর্তী যেকোনো বছরের আয় বার্ষিক আয়কর বিবরণীতে কোনো কারণে দেখানো না হলে বা বাদ পড়ে গেলে সেই অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়ার জন্যই এই ধারাটি সংযোজন করা হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
সেই ধারার আওতায় অর্থ বৈধ করে শেয়ারবাজারসহ যেকোনো খাতে বিনিয়োগ করা যাবে। তাই আগামী অর্থবছর থেকে সরাসরি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কালোটাকা সাদা করতে পারবেন না কেউ।

আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ই ধারার আওতায় আগে টাকা বৈধ করতে হবে। এরপর বৈধ হয়ে যাওয়া সেই টাকা চাইলে শেয়ারবাজারেও বিনিয়োগ করা যাবে।
তবে এই ধারার আওতায় টাকা বৈধ করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে জরিমানাসহ বেশি কর দিতে হবে। প্রথমে চলতি বছরের প্রযোজ্য করহারে কর দিতে হবে। এরপর সেই করের ওপর ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।


উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো করদাতা যদি এক কোটি টাকা বৈধ করতে চান, তবে ওই করদাতাকে ২৫ লাখ টাকা কর দিতে হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে করের ১০ শতাংশ জরিমানা বা আড়াই লাখ টাকা। এই প্রক্রিয়ায় ওই করদাতাকে এক কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে খরচ করতে হবে সাড়ে ২৭ লাখ টাকা। তবে এ বছরের ৩০ জুনের মধ্যে মাত্র ১০ লাখ টাকা খরচ করে সমপরিমাণ কালো টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে।
এ ছাড়া আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ই ধারায় সুযোগ নিলে টাকার উৎস দেখাতে হবে।

বার্ষিক আয়কর বিবরণীপত্রে আয় খাতে তা উল্লেখ করতে হবে।
আয়কর অধ্যাদেশে আয়ের যে সাতটি খাত চিহ্নিত করা রয়েছে, তার যেকোনো একটি খাত থেকে সেই টাকা আয় হতে হবে। আয়ের খাতসমূহ হলো বেতনাদি, সিকিউরিটিজের ওপর সুদ, গৃহসম্পত্তি থেকে আয়, কৃষি আয়, ব্যবসা বা পেশা থেকে আয়, মূলধনি আয় এবং অন্যান্য উৎস থেকে আয়। এর মধ্যে অন্যান্য উৎস থেকে আয় ছাড়া অন্য সব আয়ই মোটা দাগে বৈধ আয়। তবে অন্যান্য উৎস থেকে আয়ের পরিধি পরিষ্কার করা হয়নি অধ্যাদেশে।


এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) সৈয়দ আমিনুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, মূলত বৈধ অপ্রদর্শিত আয়কে ঘোষণা দেওয়ার সুযোগ দিতেই এই নতুন ধারাটি সংযোজন করা হয়েছে।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি ২০ বছর আগে জমি বিক্রি করে এক কোটি টাকা আয় করলেও পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে সেই জমির দাম দলিলে ৩০ লাখ টাকা উল্লেখ করতে হয়েছে। ফলে তিনি সেই ৩০ লাখ টাকার ওপর কর দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বাকি ৭০ লাখ টাকাও পরিষ্কারভাবে বৈধ আয়। এখন তিনি চাইলে সেই টাকা বার্ষিক আয়কর বিবরণীতে ঘোষণা দিয়ে বৈধ করতে পারবেন।

এ জন্য তাঁকে জরিমানাসহ কর দিতে হবে। আর বৈধ করার পর সেই টাকা শেয়ারবাজারসহ যেকোনো খাতে বিনিয়োগ করা যাবে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.