আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! পরীবাগের ওভার ব্রীজটার কাছে এসেই মনটা খারাপ হয়ে গেল । ওভার ব্রীজটা পার হলেই নিশি রিক্সা নিবে । রিক্সা নিয়েই চলে যাবে । কেমন করে সময় চলে গেল । প্রায় তিন ঘন্টা নিশির সাথে ছিলাম অথচ মনে হচ্ছে যেন আধা ঘন্টাও হয় নি ।
বেটা আইনষ্টাইন ঠিক কথাই বলেছিল । পৃথিবীতে সব কিছুই আপেক্ষিক । আসলেই সুসময়টা বড় জলদি চলে যায় ।
আমি নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে । খানিকটা অবক হলাম ।
এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেন মেয়েটা !! আমি বললাম
-কি ব্যাপার ?
-নাহ । কোন ব্যাপার না ।
নিশি সুন্দর করে হাসল । বলল
-সময়টা তাড়া তাড়া চলে গেল তাই না ?
-হুম ।
আমার মনটা ভাল হয়ে গেল ! তার মানে ওর কাছেও হয়তো আমার সঙ্গ ভাল লেগেছে !!
নিশি আবার হাসল ।
-তোমার সাথে সময় ভাল কাটলো । ইস !! কেন যে আরো আগে তোমার সাথে মিশি নি ।
নিশির কথাটা শুনে কেন জানি মনের ভাল লাগাটা আরো একটু বেড়ে গেল । আসলেই নিশির সাথে আরো আগে কথা বললেই হত । এমতেই শুধু শুধু ভয় পেয়েছি ।
ভেবেছি কথা বলতে গেলে নিশি কি না কি মনে করে !
তাই নিশিকে ভাল লাগলেও ওর কাছে যেতাম না এই ইতস্তত মনোভাবের কারনেই ।
আমি ভেবেছিলাম হয়তো কোনদিন ওর সাথে আমার কথাই হবে না । কেবল ওকে দুর থেকে দেখেই যাবো । কিন্তু একদিন কেমন করে যেন নিশির সাথে কথা হয়েই গেল ।
শরীফ স্যার আমাদের এসাইনমেন্ট দিয়েছিল আর বলেছিল যে দুজন করে একটা গ্রুপ করতে ।
এবার দুজন মিলে এসাইনমেন্ট কম্লিট করতে । আমি ক্লাসে সব সময় চুপচাপই থাকতাম । খুব একটা কথা বলতাম না কারো সাথে । আর আমার গ্রুপ করার কোন ইচ্ছাই ছিল না ।
আমার একা একাই কাজ করতে ভাল লাগে ।
কিন্তু আর তা হল কই ? ঐদিন ক্লাসের পর ক্যান্টিনে বসেছিলাম এমন সময় নিশিকে আসতে দেখলাম । প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো ক্যান্টিনে কিছু কিনতে এসেছে কিন্তু সরাসরি আমার দিকে এসে আমার টেবিলের উপর ব্যাগটা রাখল ।
আমার বুকটা তখন পনের রিক্টার স্কেলে ভুমিকম্প হচ্ছে । আমার সামনে বসে নিশি বলল
-তোমার সাথে কয়টা কথা বলতে পারি ?
-বল ।
আমার গলাটা কেমন যেন কেঁপে উঠল ।
-আসলে স্যার যে গ্রুপ করতে বলেছিল না , ঐ ব্যাপারে কথা বলতাম ।
আমার মন খানিকটা খারাপ হল । আমি ভেবেছিলাম কি না কি বলবে, কিন্তু এখন দেখি দরকারী কথা !
আমি বললাম
-বল !
-আসলে, স্যার তো দুজন করে গ্রুপ করতে বলেছে কিন্তু আমার না কোন গ্রুপ করা হয়নি । আমি কদিন আসি নিতো তাই ঠিক মত জানতাম না !
-ও আচ্ছা ! আমি কি করতে পারি একটু বলবা ?
-তুমি তো একাই আছো !! আমি তোমার সাথে আসি ?? প্লিজ !!
আমি যতই নিশিকে পছন্দ করি না কেন গ্রুপে মেয়েদের নেওয়া মানে ঝামেলা সৃষ্টি করা । এই মেয়েগুলো কোন কাজ করবে না, কেবল বসে বসে সুফল নিবে ! আর ন্যাক ন্যাকা কথা বলবে !!
কিন্তু নিশিকে না বলা গেল না কিছুতেই ! মেয়েদের এই একটা দিক যে মেয়েদের অনুরোধ সহজে ফেলা যায় না ! অনুরোধের ঢেকি গিলতেই হল ।
অবশ্য আমার খুব একটা সমস্যা হবার কথা না ! আমি এমনিতেও একা একাই কাজ করতাম । সুতরাং ব্যাপর না !
লাভের দিক দিয়ে এটা হল যে নিশির সাথে এখন কিছু কথা হবে !
আমাদের কাজ ছিল পদ্মা ওয়েল কোম্পানীর অফিসে গিয়ে কিছু ডাটা সংগ্রহ করা । স্যার আমাদের ঐ কোম্পানীর উপর একটা রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছিলেন । আমি সিওর ছিলাম যে নিশি বলবে যে আমারতো ঐদিন খুব জরুরী একটা কাজ আছে আমি যেতে পারবো না, তুমি একটু কষ্ট করে যাও না প্লিজ !
আমি সেই রকমই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম । কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে নিশি বলল যে আমি সময় মত পৌছে যাবো !
ঠিক সময় মতই নিশি হাজির হল ।
কিভাবে যে সময়টা চলে গেল বুঝতেই পারলাম না !
ওভার ব্রীজটা পার হবার পর যখন রিক্সা নিতে গেলাম নিশি বলল
-খুব কি জরুরী কাজ আছে কোন ?
-কেন বল না?
আমি অবাক হলাম ওর কথায় ! নিশি বলল
-না মানে, আবার কবে এমন করে আসবো, তোমার সাথে সময়টা ভাল যাচ্ছিল । আরো কিছু ক্ষন থাকা যেত !
আমি যেন আকাশ হাতে পেলাম । এই মেয়েটা বলে কি ? মনটা আসলেই আনন্দে ভরে উঠল । বললাম
-না কোন তাড়া নাই
-তাহলে চল । ঐদিকটাতে একটা সুন্দর রাস্তা আছে ।
আমি মাঝে মাঝে আসি এখনটাতে । তোমার ভাল লাগবে !
-চল !
নিশির সাথে হাটা শুরু করলাম ! সত্যি এমন একটা দিন আসবে কখনও ভাবি নি ।
নিশি হাটছে আমার পাশাপাশি !
বিঃদ্রঃ আজ এই লেখা টা লেখার কোন কথা ছিল না । একটা গল্পের শেষ টার জন্য জানি অনেকেই অপেক্ষা করে আছেন । কিন্তু আমি লিখতে পারছি না ।
মনটা খুব বেশি বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে ! কিছুই ভাল লাগছে না । দয়া করে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করেন !! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।