আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালিয়েছে জামায়াত ও হিজবুত তাহরির

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা ও বৌদ্ধ মন্দির পোড়ানোর ঘটনায় জামায়াতে ইসলামী, নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তাহরিরসহ স্বাধীনতাবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল সংগঠন জড়িত বলে অভিযোগ করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ তিন সংগঠন। তাদের মতে, দেশকে সংখ্যালঘুশূন্য করার বদ মতলবে এমনটি ঘটানো হয়েছে। সংগঠনগুলোর আশংকা, সরকার সতর্ক না হলে ২০০১ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এ আশংকার কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কানুতোষ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব দ্রং, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা ড. জয়ন্ত কুমার সেন, ড. বিমান বড়-য়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে ওই ঘটনার প্রতিবাদে ৬ অক্টোবর ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ দিবস পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, এ ঘটনায় সরকার বা পুলিশ বাহিনী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি। গোয়েন্দা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তার মতে, সরকারের মধ্যে রয়েছে আরেক সরকার, প্রশাসনের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি প্রশাসন। সে সুযোগেই মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে হামলার ঘটনা হয়েছে।

তিনি এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলোকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, আমরা আতংকিত। তবে আমরা আর দেশত্যাগ করতে চাই না। নিজের অস্তিত্ব নিয়ে দেশেই থাকতে চাই। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উত্তম বড়-য়া ফেসবুকে এমন কিছু করেনি, যাকে কেন্দ্র করে এত বড় ঘটনা ঘটতে পারে।

এ ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। কারণ রাত ১০টায় ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে সোয়া ১০টায়। সংবাদ সম্মেলনে সঞ্জিব দ্রং বলেন, এর আগে সংঘটিত ঘটনাবলীর তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দেয়া হয়নি বলেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। কানুতোষ মজুমদার বলেন, মৌলবাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্র বানানোর লক্ষ্যে এ হামলা করেছে।

সংখ্যালঘুদের দেশ থেকে বিতাড়ন করাই এর উদ্দেশ্য। ড. বিমান বড়-য়া হামলার ঘটনা যেন আর না ঘটে এবং বৌদ্ধরা যাতে নিরাপত্তা পায় সেদিকে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। নির্মল রোজারিও বলেন, ৪২ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। তিনি অভিযোগ করেন সরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। তিনি কঠোর হস্তে এ ঘটনার মূলোৎপাটনের দাবি জানান।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, এ ঘটনায় রামুতে ১২, উখিয়ায় ৪, চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৪টিসহ মোট ২০টি বৌদ্ধবিহার, কোলগাঁওয়ে ৩টি হিন্দু মন্দির, প্রায় পাঁচশ বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। এ সময় বুদ্ধমূর্তি, দুর্গামূতি ও শিবমূর্তি ভাংচুর করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগের আগে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৭০ কোটি টাকা। প্রশাসনের নাকের ডগায় সব ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন ছিল নির্বিকার।

সরকারি ও প্রধান বিরোধী দলের অনেকের বিরুদ্ধেও এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা : কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধ বসতি ও মন্দিরে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের জরুরি সভায় এই সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সংগঠনটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া হিউম্যান এনভায়রনমেন্ট রাইটস সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ পৃথক বিবৃতিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

যুগান্তর রিপোর্ট  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.