বিশ্বের অনেক দেশই আছে, যাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সিংহভাগই আসে পর্যটন খাত থেকে। বাংলাদেশ পর্যটন খাতের সম্ভাবনাময় বাজার হওয়া সত্ত্বেও এ বিশাল বাজার ধরতে বড় কোনো উদ্যোগ নেই। ব্যক্তি খাতকে সম্পৃক্ত করে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি ও সেবার মান বাড়ানোর জন্য কোনো সমন্বিত নীতিমালা নেই। ফলে পর্যটন দেশের অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যায়ণে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। পর্যটন দিবস এলে এ নিয়ে কিছু কথাবার্তা শোনা গেলেও সারা বছর প্রায় নীরব থাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
তবে এখন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। পর্যটন খাতের বিকাশে এবং এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে কিছুটা তৎপর হয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডও। তাই একটি নীতিমালা প্রণয়ন, কান্ট্রি রিব্র্যান্ডিং অর্থাৎ পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশকে নতুন করে উপস্থাপন করার নানা উদ্যোগও নিয়েছে সংস্থাটি। কালের কণ্ঠের কাছে এর কৌশল ব্যাখ্যা করলেন পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আখতারুজ্জামান খান কবির। পর্যটন দিবস উপলক্ষে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাণিজ্য সম্পাদক মাসুদ রুমী
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গৃহীত আমাদের কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং থিম 'বিউটিফুল বাংলাদেশ' তেমন জনপ্রিয় হয়নি।
তাই নতুন প্রতিপাদ্য (থিম) ঠিক করার তাগিদ অনুভব করে ট্যুরিজম বোর্ড। মালয়েশিয়ার 'ট্রুলি এশিয়া', ভারতের 'ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া' কিংবা সিঙ্গাপুরের 'ইউনিকলি সিঙ্গাপুর' প্রচারণার আদলে একটি যুতসই প্রতিপাদ্য ঠিক করে বৈশ্বিক গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে এ বোর্ড। এতে বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে। সিইও বলেন, 'ইতিমধ্যেই আমরা অনুমোদন পেয়েছি। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি থিম নির্ধারণ করব।
বেসরকারি খাতের পেশাজীবী মানুষদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করব। খুব শিগ্গির আমরা দুই-তিনটি থিম নিয়ে ক্রিয়েটিভ এজেন্সির সহায়তায় রিব্র্যান্ডিংয়ের আয়োজন করব। প্রয়োজনে ওপেন টেন্ডার করে বিশ্বের নামকরা প্রফেশনাল হাউসের সহায়তা নেব। '
বোর্ডের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আখতারুজ্জামান খান কবির বলেন, 'দুটি জায়গায় আমরা অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছি। পর্যটন ব্যবসায় যাঁরা জড়িত তাঁদের শৃঙ্খলার মধ্যে রাখা।
তা না হলে এই ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালিত হবে না। পর্যটন সেবার মান উন্নত করার জন্য এই খাতে যাঁরা কাজ করেন ট্যুর অপারেটর, হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, ফুড-বেভারেজ ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের নিয়ম-নীতির আওতায় নিয়ে আসা হবে। আমাদের দেশে পর্যটকদের জন্য সুনির্দিষ্ট যানবাহনও নেই। সে-সংক্রান্ত কোনো নীতিমালাও নেই। সেগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি।
আমরাও একটি আম্ব্রেলা অ্যাক্ট করার চিন্তা করছি। '
তিনি বলেন, এখন প্রাইভেট ট্যুর অপারেটররা সিটি করপোরেশন থেকে একটা ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ট্যুর অপারেট করতে গিয়ে তাঁরা ক্লায়েন্টের কাছে বেশ কিছু কমিটমেন্ট করেন। তাঁরা ট্যুরিস্টদের যেসব ফ্যাসিলিটি দেওয়ার কথা বলেন, আদৌতেই তাঁরা সেগুলো করছেন কি-না তা দেখভাল করার জন্য বাংলাদেশে এখনো কোনো অথরিটি বা আইন নেই। স্ট্যান্ডার্ডটাকে ঠিক রাখা এবং মনিটর করার জন্য বোর্ড দায়িত্বশীল।
অ্যাম্ব্রেলা অ্যাক্ট প্রণয়ন কমিটিতে বেসরকারি খাতের লোকজন রয়েছেন। ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, অ্যাকোমডেশন, ট্র্যান্সপোর্টেশন এবং রিক্রিয়েশন_এই চারটি খাতে যাতে পর্যটকদের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে_এ আইনের উদ্দেশ্য। সিইও বলেন, 'আমরা খুব শিগ্গির আলাপ-আলোচনা করে আইন আকারে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করব। আশা করি, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমরা পার্লামেন্টে এটি নিতে পারব। '
২০১০ সালের শেষে ট্যুরিজম বোর্ড গঠন হয়।
এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একাই সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পর্যটন খাতের প্রসারের জন্য কাজ করে আসছিল। বোর্ড সরকারি সংস্থা হলেও এতে বেসরকারি খাতের পাঁচজন প্রতিনিধি আছেন।
বোর্ডের পক্ষ থেকে গত বছর 'ভিজিট বাংলাদেশ' নামে একটি প্রচারণা চালানো হয়। কিন্তু সরকারি ক্রয়নীতির দীর্ঘসূত্রতার কারণে গত অর্থবছরে বিশাল একটা পরিকল্পনা নিয়েও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি বলে আখতারুজ্জামান কবির জানান। গত বছর খরচ করতে না পারায় সরকার এবার বাজেট কমিয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি।
সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা থেকে বাজেট এবার সাড়ে সাত কোটি টাকায় নেমে আসে। তবু দমে যাননি ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান। এ স্বল্প বাজেটকেও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এই সাড়ে সাত কোটি টাকার মধ্যে এক কোটি টাকা প্রশাসনিক ব্যয় এবং বাকি টাকার পুরোটাই আমরা প্রমোশনে ব্যয় করব। '
তাঁদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলায় অংশ নেওয়া, এ খাতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর পর্যটন সেবাসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়, বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে দেশের পরিচিতিমূলক পুস্তিকা ও সিডি সরবরাহ, গণমাধ্যমে প্রচারণা। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উত্তরণ, ইনানি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করার প্রস্তাবও তাঁদের রয়েছে।
বিদেশি পর্যটকদের জন্য সেখানে নাইট ক্লাব, ডিস্কো, পাব, ক্যাসিনো ইত্যাদি সুবিধা থাকবে। চীনের কুনমিংয়ের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে কক্সবাজার নিকটতম সমুদ্রসৈকত। তাঁদের এখানে টেনে আনার লক্ষ্যে কাজ করবে এ বোর্ড। প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে আমরা সিএনএন, বিবিসি, বিভিন্ন অনলাইন এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে বলে জানান ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান।
কবির বলেন, 'পর্যটকরা কেবল মদ খাওয়ার জন্য আসেন না।
বাংলাদেশের নদীকে ঘিরে রিভার ট্যুরিজম গড়ে তোলা যায়। আমাদের যে গ্রাম, গ্রামের মানুষ তাদেরও আমরা তুলে ধরতে পারি। জাপান ও অন্যান্য দেশ থেকে যে বুড়োরা আসেন, তাঁরা মানুষের সান্নিধ্য পছন্দ করেন। তাঁদের দেশে বাবা-মাকে ছেলেমেয়েরা সময় দেয় না। আমাদের প্রকৃতিকে নিয়ে আমরা ইকো ট্যুরিজম করতে পারি।
অ্যাগ্রো ট্যুরিজম, ফিশিং কটেজের কথাও ভাবতে পারি আমরা। '
পর্যটন উন্নয়ন কেবল ট্যুরিজম বোর্ডের একার কাজ নয়, এ জন্য আরো অনেক কর্তৃপক্ষের সক্রিয় সমর্থন থাকতে হবে বলে মনে করেন আখতারুজ্জমান কবির। 'আমরা রাজস্ব বোর্ডকে বলব, ট্যুরিস্ট যানবাহনের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর অবকাশ দেওয়ার জন্য। ফুড বেভারেজেও আমাদের মান নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের পানি এবং খাবারে যদি ভেজাল থাকে, তাহলে আমরা চাইলেও পর্যটক আনতে পারব না।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই যথাযথ কর্তৃপক্ষকেও ট্যুরিজমের ব্যাপারে সহনশীল হতে হবে। একটি রাস্তা উন্নয়নের ফলে যদি একটি অঞ্চলে ট্যুরিস্টের সংখ্যা বেড়ে যায়, তাহলে সেটাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
'পর্যটকদের আগমন, তাঁদের খরচ ও সন্তুষ্টির বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তথ্য নেই। আমরা এসব তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করব। একজন ট্যুরিস্ট এনে যদি তাদের আমরা ব্যস্ত না রাখতে না পারি, তাহলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে না।
কোয়ালিটি ট্যুরিজম সার্ভে করা, টুরিজম স্যাটেলাইট অ্যাকাউনট (টিএসএ) তৈরি, রিব্র্যান্ডিং এবং অ্যাম্ব্রেলা অ্যাক্ট_এই চারটি জায়গায়ই আপাতত আমরা মনোনিবেশ করতে চাই। পাশাপাশি প্রমোশনের জন্য বাংলাদেশের ইমেজ, ট্যুরিজমের ব্র্যান্ডিং নিয়ে আমরা কাজ করব। ' _বললেন ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও। বিশ্বের অনেক দেশই আছে, যাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সিংহভাগই আসে পর্যটন খাত থেকে। বাংলাদেশ পর্যটন খাতের সম্ভাবনাময় বাজার হওয়া সত্ত্বেও এ বিশাল বাজার ধরতে বড় কোনো উদ্যোগ নেই।
ব্যক্তি খাতকে সম্পৃক্ত করে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি ও সেবার মান বাড়ানোর জন্য কোনো সমন্বিত নীতিমালা নেই। ফলে পর্যটন দেশের অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যায়ণে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। পর্যটন দিবস এলে এ নিয়ে কিছু কথাবার্তা শোনা গেলেও সারা বছর প্রায় নীরব থাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে এখন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। পর্যটন খাতের বিকাশে এবং এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে কিছুটা তৎপর হয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডও।
তাই একটি নীতিমালা প্রণয়ন, কান্ট্রি রিব্র্যান্ডিং অর্থাৎ পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশকে নতুন করে উপস্থাপন করার নানা উদ্যোগও নিয়েছে সংস্থাটি। কালের কণ্ঠের কাছে এর কৌশল ব্যাখ্যা করলেন পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আখতারুজ্জামান খান কবির।
পর্যটন দিবস উপলক্ষে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাণিজ্য সম্পাদক মাসুদ রুমী
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গৃহীত আমাদের কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং থিম 'বিউটিফুল বাংলাদেশ' তেমন জনপ্রিয় হয়নি। তাই নতুন প্রতিপাদ্য (থিম) ঠিক করার তাগিদ অনুভব করে ট্যুরিজম বোর্ড। মালয়েশিয়ার 'ট্রুলি এশিয়া', ভারতের 'ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া' কিংবা সিঙ্গাপুরের 'ইউনিকলি সিঙ্গাপুর' প্রচারণার আদলে একটি যুতসই প্রতিপাদ্য ঠিক করে বৈশ্বিক গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে এ বোর্ড।
এতে বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে। সিইও বলেন, 'ইতিমধ্যেই আমরা অনুমোদন পেয়েছি। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি থিম নির্ধারণ করব। বেসরকারি খাতের পেশাজীবী মানুষদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ঠিক করব। খুব শিগ্গির আমরা দুই-তিনটি থিম নিয়ে ক্রিয়েটিভ এজেন্সির সহায়তায় রিব্র্যান্ডিংয়ের আয়োজন করব।
প্রয়োজনে ওপেন টেন্ডার করে বিশ্বের নামকরা প্রফেশনাল হাউসের সহায়তা নেব। '
বোর্ডের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আখতারুজ্জামান খান কবির বলেন, 'দুটি জায়গায় আমরা অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছি। পর্যটন ব্যবসায় যাঁরা জড়িত তাঁদের শৃঙ্খলার মধ্যে রাখা। তা না হলে এই ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালিত হবে না। পর্যটন সেবার মান উন্নত করার জন্য এই খাতে যাঁরা কাজ করেন ট্যুর অপারেটর, হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, ফুড-বেভারেজ ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের নিয়ম-নীতির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
আমাদের দেশে পর্যটকদের জন্য সুনির্দিষ্ট যানবাহনও নেই। সে-সংক্রান্ত কোনো নীতিমালাও নেই। সেগুলো নিয়েও আমরা কাজ করছি। আমরাও একটি আম্ব্রেলা অ্যাক্ট করার চিন্তা করছি। '
তিনি বলেন, এখন প্রাইভেট ট্যুর অপারেটররা সিটি করপোরেশন থেকে একটা ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ট্যুর অপারেট করতে গিয়ে তাঁরা ক্লায়েন্টের কাছে বেশ কিছু কমিটমেন্ট করেন। তাঁরা ট্যুরিস্টদের যেসব ফ্যাসিলিটি দেওয়ার কথা বলেন, আদৌতেই তাঁরা সেগুলো করছেন কি-না তা দেখভাল করার জন্য বাংলাদেশে এখনো কোনো অথরিটি বা আইন নেই। স্ট্যান্ডার্ডটাকে ঠিক রাখা এবং মনিটর করার জন্য বোর্ড দায়িত্বশীল।
অ্যাম্ব্রেলা অ্যাক্ট প্রণয়ন কমিটিতে বেসরকারি খাতের লোকজন রয়েছেন। ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, অ্যাকোমডেশন, ট্র্যান্সপোর্টেশন এবং রিক্রিয়েশন_এই চারটি খাতে যাতে পর্যটকদের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে_এ আইনের উদ্দেশ্য।
সিইও বলেন, 'আমরা খুব শিগ্গির আলাপ-আলোচনা করে আইন আকারে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করব। আশা করি, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমরা পার্লামেন্টে এটি নিতে পারব। '
২০১০ সালের শেষে ট্যুরিজম বোর্ড গঠন হয়। এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একাই সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পর্যটন খাতের প্রসারের জন্য কাজ করে আসছিল। বোর্ড সরকারি সংস্থা হলেও এতে বেসরকারি খাতের পাঁচজন প্রতিনিধি আছেন।
বোর্ডের পক্ষ থেকে গত বছর 'ভিজিট বাংলাদেশ' নামে একটি প্রচারণা চালানো হয়। কিন্তু সরকারি ক্রয়নীতির দীর্ঘসূত্রতার কারণে গত অর্থবছরে বিশাল একটা পরিকল্পনা নিয়েও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি বলে আখতারুজ্জামান কবির জানান। গত বছর খরচ করতে না পারায় সরকার এবার বাজেট কমিয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি। সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা থেকে বাজেট এবার সাড়ে সাত কোটি টাকায় নেমে আসে। তবু দমে যাননি ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান।
এ স্বল্প বাজেটকেও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এই সাড়ে সাত কোটি টাকার মধ্যে এক কোটি টাকা প্রশাসনিক ব্যয় এবং বাকি টাকার পুরোটাই আমরা প্রমোশনে ব্যয় করব। '
তাঁদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলায় অংশ নেওয়া, এ খাতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর পর্যটন সেবাসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়, বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে দেশের পরিচিতিমূলক পুস্তিকা ও সিডি সরবরাহ, গণমাধ্যমে প্রচারণা। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উত্তরণ, ইনানি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করার প্রস্তাবও তাঁদের রয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য সেখানে নাইট ক্লাব, ডিস্কো, পাব, ক্যাসিনো ইত্যাদি সুবিধা থাকবে। চীনের কুনমিংয়ের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে কক্সবাজার নিকটতম সমুদ্রসৈকত।
তাঁদের এখানে টেনে আনার লক্ষ্যে কাজ করবে এ বোর্ড। প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে আমরা সিএনএন, বিবিসি, বিভিন্ন অনলাইন এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে বলে জানান ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান।
কবির বলেন, 'পর্যটকরা কেবল মদ খাওয়ার জন্য আসেন না। বাংলাদেশের নদীকে ঘিরে রিভার ট্যুরিজম গড়ে তোলা যায়। আমাদের যে গ্রাম, গ্রামের মানুষ তাদেরও আমরা তুলে ধরতে পারি।
জাপান ও অন্যান্য দেশ থেকে যে বুড়োরা আসেন, তাঁরা মানুষের সান্নিধ্য পছন্দ করেন। তাঁদের দেশে বাবা-মাকে ছেলেমেয়েরা সময় দেয় না। আমাদের প্রকৃতিকে নিয়ে আমরা ইকো ট্যুরিজম করতে পারি। অ্যাগ্রো ট্যুরিজম, ফিশিং কটেজের কথাও ভাবতে পারি আমরা। '
পর্যটন উন্নয়ন কেবল ট্যুরিজম বোর্ডের একার কাজ নয়, এ জন্য আরো অনেক কর্তৃপক্ষের সক্রিয় সমর্থন থাকতে হবে বলে মনে করেন আখতারুজ্জমান কবির।
'আমরা রাজস্ব বোর্ডকে বলব, ট্যুরিস্ট যানবাহনের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর অবকাশ দেওয়ার জন্য। ফুড বেভারেজেও আমাদের মান নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের পানি এবং খাবারে যদি ভেজাল থাকে, তাহলে আমরা চাইলেও পর্যটক আনতে পারব না। প্রতিটি ক্ষেত্রেই যথাযথ কর্তৃপক্ষকেও ট্যুরিজমের ব্যাপারে সহনশীল হতে হবে। একটি রাস্তা উন্নয়নের ফলে যদি একটি অঞ্চলে ট্যুরিস্টের সংখ্যা বেড়ে যায়, তাহলে সেটাকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।
'পর্যটকদের আগমন, তাঁদের খরচ ও সন্তুষ্টির বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তথ্য নেই। আমরা এসব তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করব। একজন ট্যুরিস্ট এনে যদি তাদের আমরা ব্যস্ত না রাখতে না পারি, তাহলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে না। কোয়ালিটি ট্যুরিজম সার্ভে করা, টুরিজম স্যাটেলাইট অ্যাকাউনট (টিএসএ) তৈরি, রিব্র্যান্ডিং এবং অ্যাম্ব্রেলা অ্যাক্ট_এই চারটি জায়গায়ই আপাতত আমরা মনোনিবেশ করতে চাই। পাশাপাশি প্রমোশনের জন্য বাংলাদেশের ইমেজ, ট্যুরিজমের ব্র্যান্ডিং নিয়ে আমরা কাজ করব।
' _বললেন ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।