আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তি যোদ্ধা পরিবারের করূন কাহিনী: নিশ্চুপ নারীবাদীরা!!!!!

কুষ্টিয়ায় এক বিধবা মা (৪২) এবং তার মেয়ে (২১) নিরাপত্তা হেফাজতে বর্বরোচিত নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হওয়ার পরও নারীবাদীরা এ ব্যাপারে নীরব ও নিশ্চুপ। এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে অনেকে এ ব্যাপারে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অন্যরা শুধু উদ্বেগ প্রকাশের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। কেউ কেউ এ ব্যাপারে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন বলে মন্তব্য করেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যদিও ক্ষেত্রবিশেষে আমরা নারীনেত্রীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নে ব্যাপক তত্পর এবং সোচ্চার হতে দেখেছি—যেমনটি ঘটেছিল ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট নিরাপত্তা হেফাজতে ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে।

ওই সময় তাদের নানা তত্পরতায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল দিনাজপুর—আর নাড়া দিয়েছিল সারাদেশের মানুষের হৃদয়কে। এবার তেমন সোচ্চার ভূমিকা তাদের নেই কেন? কুষ্টিয়ার ঘটনার বিষয়ে জাতীয় মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানমের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ এবং পুলিশ প্রসাশনকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের মাধ্যমে তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেব। জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী এ ব্যাপারে বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। আমাদের তদন্তে যদি নির্যাতনের সত্যতা মেলে, তবে এ প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ কর্মীরা অনুসন্ধান করে ওই বিধবা মা ও তার মেয়ের ওপর পুলিশ হেফাজতে অমানবিক নির্যাতনের তথ্য পেয়েছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) কর্মীরাও এ ব্যাপারে কাজ করছেন। অধিকার-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের কাছে ওই মা অভিযোগ করেছেন, অন্ধকার ঘরে ছয় দিন আটকে শারীরিক নির্যাতন করায় তার মেয়েটি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল। তারা জানান, পুলিশ প্রথমে তাদের দুজনকে টানা ছয় দিন অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে। তারপর ‘সন্দেহজনক গতিবিধির’ অভিযোগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে।

এরপর তাদের আদালতে নেয়া হলে তারা জামিনে মুক্তি পান। সাত দিন পর তারা আবারও হাজিরা দেন এবং অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে তিন খুনের মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয় এবং কারাগারে পাঠানো হয়। অধিকার-এর অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়ার সালাম মোল্লা খুন হন। এরপর তার বিধবা স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে রাজবাড়ী জেলার বেড়াডাঙ্গায় বাবার বাড়ি চলে যান।

৯ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজবাড়ী শহরের বাসা থেকে ওই বিধবা মা ও তার মেয়েকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। কিন্তু তাদের দুই দিন দুই রাত আটকে রাখা হয় ২৫ কিলোমিটার দূরের খোকসা থানায় নিয়ে। সেখানেই মেয়েটি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। এর পর মা-মেয়েকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ লাইনে অবস্থিত গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানেও অন্ধকার কক্ষে রেখে দুজনকে নির্যাতন করা হয় বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে অভিযোগ আছে।

মা-মেয়েকে ছয় দিন আটক রাখার বিষয়টি জানাজানি হলে ১৫ সেপ্টেম্বর শেষ বেলায় তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কুষ্টিয়ার আদালতে হাজির করে শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরের কুমারখালী থানার পুলিশ। আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে পুলিশ দাবি করে, খোকসা জিলাপিতলা থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় মা-মেয়েকে সন্দেহজনক কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। ১৮ সেপ্টেম্বর আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন দেয়। ২৫ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর ধার্য তারিখে মা-মেয়ে আদালতে হাজিরা দেন। আদালত শুনানি শেষে ৫৪ ধারার অভিযোগ থেকে তাদের অব্যাহতি দেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাদের কুমারখালী থানা এলাকায় গত ২৮ জুলাই ঘটা তিন খুনের মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে। এবার বলা হয়, এই দুই নারী মুঠোফোনের সাহায্যে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করছে। এতে খুনের মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

আদালত আবেদন মঞ্জুর করে মা-মেয়েকে কারাগারে পাঠায়। মা-মেয়ের আইনজীবী মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ওই তিন খুনের মামলায় এই মা-মেয়ে ছাড়া আরও আটজন গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের কারও নাম এজাহারে নেই। কেউই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেননি। তবে তিন ব্যক্তি বিচারিক হাকিমের আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

তাদের কেউ কোনো নারীর নাম বলেননি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.