আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পার্সি জ্যাকসন এন্ড দ্য সী অব মন্সটার্স-১

একবার তো লিখলাম । পার্সি জ্যাকসন এন্ড দ্য সী অব মন্সটার্স মূলঃ রিক রিওর্ডান রূপান্তরঃ মিথ দ্য আর্নেস্তা... আমাকে দেখে তোমার কখনই মনে হবে না যে আমার বাবা সাগরের দেবতা পোসাইডন। আজকাল হাফ ব্লাড হওয়া মোটেও কোন আনন্দের ব্যাপার না। আমাদের এমন সব দৈত্য-দানবদের সাথে যুদ্ধ করতে হয় যাদের দিকে তাকাতেও তোমাদের ভয় করবে। ডজবল খেলাও কখনও কখনও আমাদের জন্য মৃত্যুর পরোয়ানা।

কি ভয় লাগছে? এ তো মাত্র শুরু। হাফ ব্লাড ক্যাম্প আক্রান্ত। গোল্ডেন ফ্লিস আমার হাতে না আসলে সব শেষ হয়ে যাবে। ক্যাম্প সব বড় বড় দানবদের দখলে চলে যাবে। পার্সি কি পারবে ওই ভয়ংকর সব জলোদানবদের মোকাবেলা করতে? পারবে ক্যাম্প বাঁচাতে? হাফ-ব্লাডদের আধিপত্য অক্ষুন্ন রাখতে? ১...ওয়েডিং শপে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড...পার্সি জ্যাকসন এন্ড দ্য সী অব মন্সটার্স দুঃস্বপ্নটা শুরু হল এভাবে... আমি দাঁড়িয়ে আছি কোন একটা ছোট সমুদ্র তীরবর্তী শহরে।

মাঝরাত। ঝোড়ো হাওয়া বইছে। মনে হল, জায়গাটা ফ্লোরিডা। কেন মনে হল জানি না। আমি জীবনে ফ্লোরিডা যাইনি।

খুড়ের শব্দ শুনে পেছনে তাকালাম। দেখি আমার বন্ধু গ্রোভার পড়িমড়ি করে দৌড়াচ্ছে। যেন কোনরকম প্রানটা হাতে নিয়ে পালাচ্ছে। পড়তে ভুল হয়নি। খুড়ই বলেছি।

গ্রোভার হল স্যাটার(*)। কোমড়ের উপর থেকে আর দশটা টিনএজারের মতই। নিচের অংশটা ভেড়ার মত। একটু আজিবভাবে ল্যাংচে ল্যাংচে হাটে। ব্যাগি জিন্স আর নকল পা পরা অবস্থায় তুমি ওর আর আর দশটা ছেলের মাঝে কোন পার্থক্যই খুজে পাবে না।

সেই ক্লাস সিক্স থেকে ও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। দুনিয়া বাঁচানোর সেই মিশনে আমার আর অ্যানাবেথ নামের ওই মেয়েটার সাথে সেও ছিল। কিন্তু গত জুলাইয়ের পর থেকে ওর সাথে আর দেখা হয়নি। ওকে খুবই বিপদজনক একটা কাজে পাঠানো হয়েছিল। কোন স্যাটার এখনও এই কাজে গিয়ে ফিরে আসেনি।

ওকে দেখে মনে হচ্ছিল ভয়ংকর কিছু ওর পেছনে লেগেছে। পায়ের লোমে বালি দেখে বুঝলাম সাগর পাড়ের দিক থেকেই আসছে ও। প্রানপনে বাঁচার চেষ্টা করছে...কোন কিছু থেকে। একটা রোম খাড়া করে দেয়া গর্জন শুনলাম। ব্লকের একেবারে পেছনে একটা আবছা অবয়ব দেখা গেল।

গ্রোভার ফিসফিস করছিল। “পালাতেই হবে। যেভাবেই হোক ওদেরকে সাবধান করতেই হবে। ”আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না, কে ওকে তাড়া করছিল। তড়িঘড়ি করে ও একটা বিয়ের জিনিসপত্রের দোকানে ঢুকে পড়ল।

সেন্ট অগাস্টিন বুটিক। যদিও দেখতে পাচ্ছিলাম না আক্রমণকারীকে কিন্তু তার গন্ধ পাচ্ছিলাম। ভেজা ভেড়ার লোম আর পচা মাংসের গন্ধ একসাথে হলে যেরকম হবে অনেকটা সেরকম। আমি জানি দানব বা পিশাচদের গন্ধ এরকম। দানবটার ছায়া পরল দোকানের সামনে।

ছায়া আস্তে আস্তে পারও হয়ে গেল। বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দও নেই। হঠাত বিদ্যুৎ চমকে চারপাশ আলোকিত হয়ে গেল। আর দানবটা গর্জন করে উঠল, “আ-আ-আ-আমার!!!!!!!” ঘুম ভেঙ্গে গেল। লাফ দিয়ে বিছানায় বসে পড়লাম।

কোন ঝড় নেই। দানব নেই। সকালের রোদ জানালা গলে ভেতরে আসছে। হঠাত মনে হল জানালায় একটা ছায়া দাঁড়িয়ে আছে। মানুষের মত।

- কিন্তু এমন সময় দরজায় নক। মা ডাকছে, “পার্সি, ওঠ। দেরি হয়ে যাচ্ছে। ”-জানালার সামনে থেকে ছায়াটা সরে গেল। একবার মনে হল চোখের ভুলও হতে পারে কিন্তু...।

“তাড়াতাড়ি পার্সি! স্কুলে শেষ দিন!” মা আবার ডাকল। “আসছি। ” বালিশের নিচে হাত দিতেই কলমটা হাতে লাগল। রিপ্টাইড। আমি সবসময় কলমটা নিয়েই ঘুমাই।

ওটার উপরে প্রাচীন গ্রীক অক্ষরে লেখা আছেঃ আনাক্লুসমস। ক্যাপটা খুলতে চাইলাম। কিন্তু কি মনে করে আর খুললাম না। অনেকদিন রিপ্টাইডকে ব্যবহার করতে হয়নি। তাড়াতাড়ি ড্রেস পড়ে নিচে নামলাম।

কিছুক্ষন আগের ঘটনা গুলো মাথা থেকে বের করে দেয়া চেষ্টা করেও পারলাম না। স্বপ্ন, দানো, ছায়া এসব মাথায় ঘুরছে। নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম ধূর ব্যাপার না। আজ স্কুলের শেষ দিন। একটু এক্সাইটেড তো হওয়া উচিতই।

সারাজীবনে এই প্রথম কোন ক্লাসে আমি ঠিক মত শেষ করতে পারছি। প্রতিবারই কোন না কোন কারনে আমাকে এক্সপেল্ড করা হয়। প্রত্যেকবারই কোন না কোন অকাজ হবেই। হয় ক্লাসে একটা সিরিয়াস মারামারি হবে, না হলে দেখা যাবে কোন টিচার হুটহাট দানব হয়ে আমাকে মারতে আসছে। যাই হোক এবার এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি।

তবে আরেকটা ব্যাপারে আমি খুব এক্সাইটেড, কাল যাব আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গায়। ক্যাম্প হাফ-ব্লাড। পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। ব্রেকফাস্টে মা কেক আর ডিম করেছে। কিচেনে বসেই খাচ্ছি।

মা থালা-বাসন ধুচ্ছে। কেক খুব টেস্টি হয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছিল খেয়ে শান্তি পাচ্ছি না। মা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “কি ব্যাপার পার্সি? কোন সমস্যা?”“না... ঠিক আছে। ” কিন্তু মায়েরা মনে হয় সবকিছু বুঝতে পারে।

হাত মুছে আমার পাশে এসে বসল। বলল, “সমস্যা কি স্কুলে? নাকি...” আম্মু শেষ করার আগেই বুঝলাম কি জানতে চাইছে। বললাম স্বপ্নের কথা। একটু চুপ করে থেকে মা বলল, “আমার কিন্তু মনে হয়না গ্রোভার কোন ঝামেলায় পড়েছে। এখন ও নামি-দামি লোক।

ওর কিছু একটা হলে আমরা ঠিকই জানতে পারতাম। ক্যাম্প...ক্যাম্প থেকে অবশ্যই খবর আসত। ” ক্যাম্প শব্দটা বলার সময় মাকে বেশ চিন্তিত মনে হল। “মা, কি হয়েছে?” কোন একটা ঝামেলা হয়েছে বুঝলাম। “আরে কিছু না।

আজকে আমরা তোমার স্কুলের শেষদিন সেলিব্রেট করব। বিকেলে শপিং-এ যাব। স্কেটবোর্ড কিনতে। ”কি ভাবছ? সামান্য স্কেট বোর্ড মানুষ বিশেষ দিন সেলিব্রেট করে কিভাবে? আমাদের আর্থিক অবস্থা মোটেও ভালো না। পড়াশুনা আর দৈনন্দিন খরচের পর কাছে আর টাকাপয়সা কিছুই থাকে না।

সেখানে একটা স্কেটবোর্ড কেনা যে একটা সেলিব্রেটিং ব্যাপার সেটা তো আর বলে দিতে হয় না। কিন্তু আম্মুর গলাটা আমার সুবিধার লাগল না। “কিন্তু মা, রাতে তো গোছাগুছি করতে হবে। কাল ক্যাম্পে যেতে হবে না?” “মানে... কালরাতে কিরনের কাছ থেকে একটা চিঠি এসেছে। ” আমার বুকের ভেতর ধক করে উঠল।

কিরন হাফ ব্লাড ক্যাম্পের ডিরেক্টর। কোন সমস্যা না হলে সে কখনও যোগাযোগ করে না। “কি লিখেছে ও?” আমি তাড়াতাড়ি জিজ্ঞাসা করলাম। “ও লিখেছে, তোমার এখন ক্যাম্পে না যাওয়াই ভালো। মানে সেইফ না আর কি...” “মানে কি? আমি হাফ-ব্লাড।

আর ক্যাম্প দুনিয়ায় আমার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। ” “হ্যা। স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু ওখানে এখন একটু সমস্যা চলছে। ” “সমস্যা? কি সমস্যা?” “সবকিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেছে যে বোঝাতে পারব না।

মনে তো হয় না কিরন নিজেও পারবে...। যাই হোক বিকেলে সব বলব। ” আমার মনের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। হাজারটা প্রশ্ন মাথায় আসতে শুরু করেছে। কিন্তু কিচেনের ঘড়িটে বেজে উঠল।

মা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। “সাড়ে সাতটা বেজে গেছে বাবা। ওঠো তাড়াতাড়ি। টাইসন তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ”“কিন্তু মা...” “পার্সি...।

বললাম তো, বিকালে আমরা এ ব্যাপারে কথা বলব। ” বলে এমন ভাবে তাকালো যে আমি আর কিছু বলার সাহস পেলাম না। আমি ব্যাগ-ট্যাগ নিলাম। শুধু দরজায় দাঁড়িয়ে বললাম, “মা, ক্যাম্পের এই সমস্যার সাথে আমার স্বপ্নের কি কোন সম্পর্ক আছে?” মা আমার দিকে না তাকিয়েই বলল, “বিকেলে বাবা......”আম্মুকে বাই বলে বার হলাম। আমি তখনও জানতাম না যে বিকেলে আমাদের আর দেখা হবে না।

সত্যি কথা বলতে কি, এরপর অনেকদিন বাসায়ই ফেরা হয়নি। বের হতেই রাস্তার ওপাশের বাদামী বাড়িটার দিকে চোখ পড়ল। এক মুহূর্তের জন্য একটা মানুষের অবয়ব দেখলাম। [*]স্যাটার- অর্ধেক মানুষ আর অর্ধেক পশুর শরীর ওয়ালা পৌরাণিক প্রানী। চলবে ।

। । । । ।

। । । । ।

। । । । ।

। । । । ।

। । । । ।

। । । । ।

। । । । ।

। । । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।