ডুবোজ্বর মহিষের হাসি
অন্ধচেতনা ভেঙে আরো গভীর কোনো গহ্বর ডেকেছিলো। তুমুল ঝড়ের আড়ে বটের ফল ঝরে পড়ছিলো লাল বেদানা ফলে। উদাসীন কাদাগন্ধ চিনে রাখে, চিনে রাখে বিপন্ন নিধান। ঘেঁটুফুল ইশ্কুল, বাড়িঘর ভাঁজ করা, সস্তা ছাতার পাড়ে সূর্যচিহ্ন আছে। চেনা চোখ, চোলাইমদের গন্ধ কারো কোলের গণিতে, মনে পড়ে।
ত্রিকোণমিতি শিখে ইস্রাফিলকে ধার দিয়েছিলো মহিষের শিং। বালিরঙ হাওয়া ঘুরে হাওয়ার বাহন, চোখের পাপড়ি চিনিয়েছিলো কালিকাপুরাণ। তারপরও বিরান, সুমসাম। নর্দমার পাশে দাঁড়িয়ে একলা শরীর, আঙুলের ফাঁকে চারকোল, কার্টিজ কাগজে ঘষে ঘষে বানায় মহিষের মুখ। অদূরে মহিষ নিষ্পাপ হাসে।
নিষ্পাপ তবু এ হাসির অর্থ যে জানে-- সেইই জানে একা।
একটি মৃগেল
জানলা দিয়ে দেখা ভূগোল যতটা না গোল তারচে’ আনুভূমিক দেখে যখন ফুরিয়ে গেলো চোখ-- দৃশ্য এসে বাজালো পূরবীসন্ধ্যা। ছয়টি তার ঝিরিঝির উড়ে পাগলের ত্বকে হয়ে গেলে ধান-- কম্পিত পুকুর উগরে দেয় একটি মৃগেল। ওগো মায়াময়, দাও বাষ্পমুগ্ধ সকাল। মৃগেল এসে সাঁতার শেখায় বনে বনে পাতা আর পতঙ্গদের।
সাঁতার শিখতে লাগে জলস্রোত-- নেমে গেলো শৈশবে দেখা পাহাড়ি খালের পথে। সূর্যখোলার স্মৃতি চোখে মেখে দেহের রঙে রাঙায় স্রোত। এই স্রোত পাথরে পাথরে লেগে বাতাসের হিহি। মৃগেল তার কানকো সামলে রাখে-- পতঙ্গ যেমন সামলায় পেখম।
স্বরছেঁড়া কাক
পথঘাট কিচ্ছু চিনি না-- এমন মনে হয়।
রোদ আর ধূলি একই রঙ-- এমন মনে হয়। যে ঘ্রাণ না নিলে আমি প্রতিদিন মরে যাই-- ক্রমশ দিগন্তের আত্মীয়। এইখানে বাঁপাশে একটু উপরে পুড়ে যায় ছায়াছায়া গাঁয়ের শান্ত পুকুর। কাউকে বলি না। অথবা কেউ জানে না।
আমি গিয়েছিলাম। কখনো যাই নি। এমন মনে হয়। পাখিরা আত্মঘাতী হলে নিভে না নক্ষত্র, নিভে না বাগানের ল্যাম্পপোস্টে ম্লান আলো। অথবা ভাঙে না ঘুম কারো।
যে ছুঁতে চায়-- ক্রমশ একটি করে আঙুল ঝরে যায়। আঙুল প্রথম তৃষ্ণার স্বর-- এমন মনে হয়। আমাদের রোদ আর ধূলি বড়ো স্মৃতি ও বেদনাময়। বেদনা শহরতলির স্বরছেঁড়া কাক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।