মানবিক দায় ও বোধহীন শিক্ষা মানুষকে প্রশিক্ষিত কুকুরে পরিণত করে....আইস্ট্যাইন। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী নগদ ২ হাজার কোটি টাকা ফেরত দিচ্ছে না হলমার্ক। হলমার্ক গ্রুপের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংকে মাত্র নগদ পাঁচ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে। অথচ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঘোষণা দিয়েছিলেন হলমার্ক গ্রুপ ১৫ দিনের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা ফেরত দেবে। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা ফেরত চেয়ে হলমার্ক গ্রুপকে চিঠিও দেয়া হয়েছিল।
সেই চিঠি অনুযায়ী টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বেধে দেয়া সময় শেষ হতে আর মাত্র দুদিন বাকি। সোনালী ব্যাংক থেকে হলমার্ককে চিঠি দিয়ে ১০ দিনের মধ্যে মূল ঋণের দেড় হাজার কোটি টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। চিঠি পাওয়ার পর হলমার্ক মাত্র নগদ ৫ লাখ টাকা দেয়।
এদিকে হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংক ফৌজদারি মামলা করছে না। যদিও গত ১০ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে মামলা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
মামলা না করে সোনালী ব্যাংক কালক্ষেপণ করছে। এতে হলমার্ক গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন বলে অনেকেই ধারণা করছেন। সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের রেহাই দিতেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কৌশলে মামলা এড়িয়ে যাচ্ছে। সরকারের প্রভাবশালী একটি মহল হলমার্ক গ্রুপকে বাঁচাতে এ কৌশল নিয়েছে। সোনালী ব্যাংকে হলমার্কের কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতরা সরকারের প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রছায়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়েছে।
ঘটনাটির তদন্তের সঙ্গে জড়িতরাও মনে করছেন সরকারের প্রভাবশালী লোক ছাড়া এতবড় কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটতে পারে না।
হলমার্কের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আর কোনো নগদ টাকা ফেরত দিব না তারা। বরং সোনালী ব্যাংকে উল্টো চিঠি দেবে ঋণ শিডিউল করে দেয়ার জন্য। দীর্ঘমেয়াদি শিডিউল করে দিলে ব্যবসা করে টাকা ফেরত দেবে এই শর্ত আরোপ করে সোনালী ব্যাংকে আজ-কালের মধ্যে চিঠি দেবে হলমার্ক। এছাড়া হলমার্কের আটকে দেয়া সব এলসিসহ ঋণের টাকা ছাড় করার জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে হলমার্ক ২৩০ বিঘা জমি সোনালী ব্যাংকে মর্টগেজ দেয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে। এ জমির মূল্য দেখানো হয়েছে ২ হাজার ২শ’ কোটি টাকা। জমি মর্টগেজের বিনিময়ে হলমার্ক নগদ টাকা ফেরত দেয়া থেকে রেহাই পেতে চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, জমির ক্রয় মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দাম নির্ধারণ করেছে হলমার্ক। বাড়তি মূল্য দেখিয়ে জমি মর্টগেজ দেয়ার জন্য চিঠিও দিয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের শাহবাগ রূপসী বাংলা শাখা থেকে হলমার্ক প্রায় ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে উঠিয়ে নেয়। এ ঋণের বিপরীতে কোনো মর্টগেজ ছিল না। গ্যারান্টি ছাড়াই সোনালী ব্যাংক ২০০৭ সাল থেকে হলমার্ককে অব্যাহতভাবে ঋণ দিয়ে যায়। এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকার উপরে। সোনালী ব্যাংকের টাকা নিয়ে হলমার্ক শত শত বিঘা জমি কেনে সাভার এলাকায়।
হলমার্কে জমির পরিমাণ সাড়ে চার শত বিঘার উপরে। সব জমি কিনেছে সোনালী ব্যাংকের ঋণের টাকায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নেয়ার সময় হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভির মাহমুদকে সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ সতর্ক করেছিল। তাকে বলা হয়েছিল এ টাকা এক দিন না একদিন ধরা পড়বে। তখন তিনি জবাব দিতেন ব্যাংকের টাকা নিলে আর ফেরত দিতে হয় না, কিছুই হয় না।
হলমার্ক গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে তানভির মাহমুদ ২০০৭ সাল থেকে বর্তমান এই সময় পর্যন্ত ২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। ঢাকার শাহবাগ সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে এ টাকা উঠিয়ে নেন তানভির মাহমুদ। তার এ ঋণ নেয়ার বিষয়টি সোনালী ব্যাংকের কোনো পর্যায়ে কখনও আপত্তি ওঠেনি। সাধারণ ঋণ নিতে হলেও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও অন্যান্য পর্যায় থেকে অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু হলমার্ক ছিল এ বিষয়ে একেবারেই ব্যতিক্রম।
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।