আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যময় কিছু ঘটনা-৩

লিখতে পারিনা তাই চেষ্টা করি। যারা আগের পর্বগুলো পড়েন নি তাঁদের জন্য ১ম পর্ব ২য় পর্ব আমার বউ আর আমি বেশ সুখে আছি। আমাদের ভিতর ঝগড়া হয় প্রেম হয় আমি আদর করে সোনাবউ বলে ডাকি (১১ স্টারের সোনাবউ- শুধুমাত্র বিবাহিতদের জন্য) মাঝে-মাঝে শুধু সোনা বলেও ডাক দেই কয়কদিন ধরে সোনা বলে ডাক দিতে গিয়ে রুনা বলে ডাক দেই (রুনা এই রহস্যের মূল চরিত্র যারা বোঝেনি তারা আগের দুইটা পর্ব পড়ে নিন) আমার বউ বলে তুমি আমাকে রুনা বলে ডাকো কেন? রুনা নামের কোন মেয়ের সাথে কি তোমার কোন ইয়ে আছে নাকি? আমার হুশ ফেরে আমি গা ঝাড়া দিয়ে বলি কই নাতো। তারপর আবার শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে বলি ১০টা না ৫টা না তুমি হলে আমার একটা মাত্র বউ তোমাকে তো সোনা বলবো, রুনা বলবো, মুনা বলবো, মুন্নি বলবো, শিলা বলবো যখন যেটা মন চায় তাই বলবো। আমার বউ আমার দিকে মুচকি হেসে বলে তুমি না আগের মত নাই কেমন যেন হয়ে গেছো।

আমি ও বুঝতে পারি আসলে আমি যেন কেমন হয়ে গেছি সারক্ষন শুধু রুনার কথা মনে পড়ে সেই নুপুর পরা গ্রাম্য স্টাইলে কাপড় পরা মেয়েটা যে মাথায় টিকলি দিয়ে আমার পায়ে সালাম করেছিল সেই দৃশ্য টা ভাষে। কয়েকদিন ধরে স্বপ্নেও খুব বেশি দেখছি। ভোর ৫টা বাজে আমার সোনাবউ আমাকে ঘুম থেকে ডেকে ওঠালো। আমি ঘুম জড়ানো চোখে বল্লাম--- কি হয়েছে? ---- ওঠো আগে। আমার খুব ভয় পাচ্ছে।

----কেন কোন দুঃস্বপ্ন দেখেছো নাকি? ---- দুঃস্বপ্ন নয় মনে হয় কেউ একজন ঘরে আছে আমি আমি নুপুরের শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি একটি মেয়ে। জিজ্ঞাসা করলাম কে? ও উত্তর দিলো আমি রুনা। নামটা শুনে আমি চমকে উঠলাম। (সোলার এর) লাইট জালাইয়া খাটের নিচে, আলমারীর পিছে আলনার পিছে সবজায়গায় খুজলাম কাউকে কোথাও পেলাম না। কিন্তু আমার বউ কে বিশ্বাস করাতে পারলাম না যে ঘরে কেউ নেই।

তার বিশ্বাস সে স্পষ্ট দেখতে পেয়েছে একটি মেয়ে কপালে টিকলি পরা গলায় কামরাঙ্গা পরা গোলগাল চেহারার একটি মেয়ে হাটাহাটি করছে এবং তার পায়ের নুপুর শব্দও সে শুনেছে। সকাল বেলা বউ আমার মন খারাপ করে বসে আছে। নাস্তা বানাতে গেলো না। আমি না খেয়েই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। দুপুরের পর বাসায় আসলাম দেখলাম বউ এখনও না খেয়ে আছে, হয়তো কিছু কান্নাকাটিও করেছে।

চোখ মুখ ফোলাফোলা। এবার সামলাবার জন্য বউ কে আদর করলাম। তার পর বল্লাম কি হয়েছে আমাকে বলো। ও কেঁদে দিয়ে বল্ল আমি কখনও মিথ্যা স্বপ্ন দেখিনা। তাছাড়া ফজরের আজানের সময় ডান কাথে শুয়ে শুয়ে আমি স্বপ্নে দেখেছি।

আমার স্বপ্ন কখনও মিথ্যা হয়না। তবুও তোমাকে আমি কখনও বলিনি। আমি বল্লাম কি স্বপ্নে দেখেছো? ও বল্লো আমি বিয়ের দ্বিতীয় রাতে স্বপ্নে দেখেছিলাম রুনা নামের একটি মেয়েকে তুমি আগেই বিয়ে করেছো। মেয়েটি হাসপাতালে আছো তাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে তুমি আমাকে বিয়ে করত এসেছো বলো এই কথা কি মিথ্যা? আমার চোখ বড় হয় গেলো কোন মেয়েকে আমি হাসপাতালে রেকে আসিনি একথা যেমন সত্যি রুনা নামের কোন একটা মেয়ে আমার কাছে দ্রুব সত্যি। আমি শধু আমার বউএর মাথায় হাত রেখে বল্লাম আমি কোন মেয়েকে জীবনে কোনদিন হাসপাতালে নেই নি আর আমি অন্য কোন মেয়েকে কোনদিনও বিয়ে করিনি।

আমি যদি আরো দশটা বিয়ে করার সুযোগও পাই আমি তোমাকে ই দশবার বিয়ে করবো। এই টুকু বলেই আমি আমাকে প্রশ্ন করলাম আসলে আমি কি আমার বউয়ের কাছে কোন কিছু লুকাচ্ছি। তারপর একদিন আমার ঘনিষ্ট বন্ধু ডাঃ রাকিবুল ইসলাম (মনরোগ বিশেষজ্ঞ) এর কাছে গেলাম। সব খুলে বল্লাম। ডাঃ আমাকে তেমন কোন ঔষধ দিলোনা কয়েকটা ভিটামিন আর কয়েকটা ঘুমের ট্যাবলেট দিলো সেই সাথে দিলো কনসাল্টেশন।

তাঁর বক্তব্য আমার নিদ্রাহীন মস্তিষ্ক পুরানো স্মৃতি গুলো আমাকে বেশি বেশি মনে করিয়ে দেয়। তাই আমি রুনাকে নিয়ে এতো সব দেখি। আমি তার কথা মানলাম এবং বল্লাম এখন থেকে আর রুনাকে নিয়ে কখনও ভাববো না। আমার বউ? সে কি স্মৃতি মনে করে এসব কথা বলে? ডাঃ আমাকে বল্ল মেয়েরা এমনি তে সন্দেহ প্রবন (!) সবকিছুতে ই সন্দেহ করে হযতো তোর মুখে কখনও রুনার কথা ভাবি শুনেছে তুই ভুলে গেছিস কিন্তু সে ভোলেনি। একদিন ভাবিকে নিয়ে আসিস আমি কনসাল্টেন্সি দিলে ভালো হযে যাবে।

আমি বিশ্বাস নিয়ে ফিরে আসলাম। পরদিন বিকেল বেলা আমার বউ পায়ে নুপুর পরে কপালে টিকলি পরে গ্রামের মেয়েদের মত শাড়ি পরে আমার পায়ে সালাম করে বল্ল আমাকে একসেট কামরাঙা কিনে দিবে আমার খুব শখ আগের মানুষে র মত কামরাঙ্গা পরা। আমি বল্লাম ব্যাপার কি হটাত করে সালাম করার অর্থ কি? ও বল্ল বাসর রাতে তো আমি ঘুমিয়ে পড়ছিলাম তোমাকে সালাম করা হয়ছিলো না তাই এতোদিন নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছিলো সেজন্য আজ সকাল থেকে ই প্লান করছি আজকেই তোমাকে সালাম করবো। আচ্ছা বলোতো আমাকে রুনার মত লাগছে না? আমি বল্লাম রুনা কে? কেন যে মেয়েটাকে আমি স্বপ্নে দেখি সেই মেয়েটি। আমি বল্লাম আমি তো আর স্বপ্নে দেখিনাই তাই বলতে পারবো না তোমাকে রুনার মতো লাগছে কিনা।

এ কথা বলে আমার বউয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি বউ এর চেহারার ভিতর কেমন যেন আর একটি মুখ যেটি রুনার মুখ। রুনার মুখের ছবিটাই যেন স্পষ্ট হয়ে আসছে। আমার মাথা ঝিম ধরে গেলো আমি শুয়ে পড়লাম................. (চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.